আপনি যদি লরিক্স ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম জানতে চান তাহলে মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক লরিক্স ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম এবং লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহারের নিয়ম। যেহেতু অনেকেই জানতে চেয়েছে লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহারের নিয়ম ও লরিক্স ক্রিম ব্যবহারের নিয়ম ।তাই চলুন সেটাই আগে জেনে নেওয়া যাক এবং বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক।
লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহারের নিয়ম অনেকে জানেন না। লরিস প্লাস লোশন চুলকানি ও স্ক্যাবিসের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু এই লোশনটি ত্বকের যত্নে কিভাবে ব্যবহার করতে হয়? লরিক্স প্লাস লোশন এর কাজ কিএটা যদি সঠিকভাবে না জানেন তাহলে সেটা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। আজকের পোস্টে লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহারের নিয়ম ও লরিক্স প্লাস লোশন এর কাজ কি এই নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ
লরিক্স প্লাস ক্রিম এর কাজ কি
আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খুঁজতে গেলে লরিক্স ক্রিমের নাম প্রায়ই চলে আসে। কিন্তু এই ক্রিমটি আসলে কি কাজ করে? কেনই বা এত মানুষ এটি ব্যবহার করেন?
লরিক্স প্লাস ক্রিমটি চুলকানির চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চুলকানির জনিত বিভিন্ন সমস্যার কারণে ডাক্তার রোগীদেরকে এই ঔষধ টি ব্যবহার করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকে।
লরিক্স প্লাস ক্রিমটি ত্বকের যত্নে খুবই কার্যকারী একটি ঔষধ। এই ওষুধটির সঠিক ব্যবহারে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে চুলকানি ও স্ক্যাবিসের মত সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
অতি প্রয়োজনীয় লরিক্স ক্রিম মূলত ত্বকের শুষ্কতা, চুলকানি, একজিমা এবং সোরিয়াসিসের মতো সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। এটি ত্বককে আর্দ্র রাখে, মৃত কোষ দূর করে এবং ত্বককে নরম ও মসৃণ করে তোলে। এছাড়াও, লরিক্স ক্রিম ত্বকের জ্বালাপোড়া এবং লালচেভাব কমাতে দারুণ কাজ করে।
লরিক্স ক্রিম এর প্রধান কাজগুলো:
- ত্বকের শুষ্কতা দূর করা
- চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া কমানো
- একজিমা এবং সোরিয়াসিস নিয়ন্ত্রণ
- ত্বককে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর করা
- ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো ইত্যাদি
লরিক্স ক্রিম কেন ব্যবহার করা হয়
লরিক্স ক্রিমকেন এত মানুষ ব্যবহার করেন? এর পেছনে কারণগুলো জানা থাকলে আপনি বুঝতে পারবেন কেন এটি আপনার ত্বকের জন্যও উপকারী হতে পারে। চলুন জেনে নিই লরিক্স ক্রিম ব্যবহারের প্রধান কারণগুলো
১. ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে
শীতকালে বা যেকোনো সময় ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে লরিক্স ক্রিম ব্যবহার করলে ত্বক আবার নরম ও মসৃণ হয়ে উঠে। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে, যা শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
২. চুলকানি এবং জ্বালাপোড়া কমাতে
আপনার ত্বকে যদি জ্বালাপোড়া কিংবা চুলকানি হয়ে থাকে তাহলে লরিক্স ক্রিম সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
৩. একজিমা এবং সোরিয়াসিসের লক্ষণ নিয়ন্ত্রণে
লরিক্স ক্রিম একজিমা বা সোরিয়াসিস ত্বকের রোগে খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. ত্বককে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখতে
লরিক্স ক্রিম ত্বককে মসৃণ রাখে এবং এটি ত্বকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনে।
৫. ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
লরিক্স ক্রিম ত্বককে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া এবং ইনফেকশন থেকে সুরক্ষিত রাখে। এটি ত্বকের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, যা ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৬. ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে
ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে লরিক্স ক্রিম খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭. ত্বকের জ্বালাপোড়া এবং লালচেভাব কমাতে
ত্বকে জ্বালাপোড়া বা লালচেভাব দেখা দিলে লরিক্স ক্রিম ব্যবহার করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়। এটি ত্বকের প্রদাহ কমায় এবং ত্বককে শান্ত করে।
লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহারের নিয়ম
প্রতিটা ওষুধ ব্যবহার করার সঠিক নিয়ম রয়েছে যা শুধুমাত্র একজন ডাক্তার দিতে পারেন। আপনি যখন কোন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর কাছে জেনে নেবেন যে কিভাবে ব্যবহার করবেন।
সঠিক ব্যবহারে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে চুলকানি ও স্ক্যাবিসের মত সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। সবচাইতে বেশি উত্তম তবুও আমরা আপনাদের জন্য একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের মতে এই লোশনটি ব্যবহারের সকল নিয়ম কানুন নিচে বিস্তারিত দেয়া হলো:
যখন আপনার সংক্রমণ কিংবা সমস্যার পরিধি খুবই অল্প পরিমাণে থাকে তখন আসলে লরিক্স প্লাস লোশন দেওয়া হয়। এখন আপনার মনে একটা প্রশ্ন জাগতে পারে সমস্ত শরীর ব্যাপী যদি সমস্যা হয় তাহলে কি আপনি লরিক্স প্লাস লোশন সমস্ত শরীরে ব্যবহার করতে পারবেন?
এর উত্তরে বলব, ‘না’। ঠিক তেমনিভাবে আমাদের শরীরের যখন প্রতিটি অংশের মধ্যে অর্থাৎ সমস্ত ত্বকে যদি সমস্যা দেখা দেয় তখন কিন্তু চিকিৎসকের আমাদের লিরিক্স লোশন ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়ে থাকে।
আপনাকে প্রথমে গোসল করে নিতে হবে এরপরে এই লোশনটি ব্যবহার করতে হবে। আর একটা বিষয় মনে রাখা উচিত যে আপনার দেহে চুলকানি হলে সাবান ব্যবহার করা যাবে না।
এরপরে লোশনটি আপনার ওই আক্রান্ত স্থানে ব্যবহার করতে হবে। এটা কিন্তু আপনি মাথায়ও ব্যবহার করতে পারেন যদি আপনার মাথার চুলের কোন প্রবলেম হয়ে থাকে অথবা খুশকির প্রবলেম হয়ে থাকে।
প্রতিদিন গোসলের সময় এই লোশনটি ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
তবে এই লোশন ব্যবহার করার পরে যদি আপনি কোন ভালো ফলাফল না পান তাহলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার না করাই উত্তম এর অবিলম্বে আপনার উচিত একজন স্কিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করা।
অনেকেই লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানেন না। যার ফলে সঠিক কার্যকারিতা পান না। গরম পানি দিয়ে গোসল করার পর তাৎক্ষণিকভাবে লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহার করা উচিত। সমস্ত শরীরের উপরিভাগে লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহার করতে হবে।
তবে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহার করা উচিত। তাহলে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে ভালো কার্যকারিতা পাওয়া সম্ভব হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে।
লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহারের পরিমাণ
যেহেতু অতিরিক্ত পরিমাণে ওষুধট ব্যবহা্রে অবশ্যই আমাদের এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে তাই আমাদের সর্ব প্রথমে জানা উচিত যে আমরা কি পরিমান ওষুধ আমাদের উপরে আমরা প্রয়োগ করব সেক্ষেত্রে আপনাকে জেনে নিতে হবে এই লরিক্স প্লাস লোশনটি কি পরিমাণে আপনি ব্যবহার করবেন এ বিস্তারিত দেয়া হলো:
প্রাপ্তবয়স্ক: পারমেথ্রিন এবং ক্রোটামিটন লোশন প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উপযুক্ত, 2 মাস বা তার বেশি বয়সের শিশু এবং বয়স্কদের জন্য। এটি শুধুমাত্র বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য এবং ভাঙ্গা ত্বক, শ্লেষ্মা ঝিল্লি বা চোখের কাছাকাছি প্রয়োগ করা উচিত নয়।
2 বছরের কম বয়সী শিশু: 2 বছরের কম বয়সী শিশুদের শুধুমাত্র ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা করা উচিত। ঘাড়, মুখ, কান এবং মাথার ত্বক সহ পুরো শরীরে লোশন লাগান।
লরিক্স প্লাস লোশন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
প্রত্যেকটি ওষুধের কিন্তু উপকারিতার পাশাপাশি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে ঠিক তেমনি ভাবে লরিক্স প্লাস লোশন এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। প্রথমে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো সামান্য হয়ে থাকলেও পরবর্তীতে কিন্তু এগুলো ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে পারে।
এর কিছু সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা নিম্নরূপঃ
- একজিমা বৃদ্ধি,
- ত্বকের সমস্যা,
- খুশকির সমস্যা বেড়ে যাওয়া,
- তীব্র চুলকানি,
- সংক্রমণের পরিধি বৃদ্ধি,
- মাথার চুল পড়ে যাওয়া,
- রোদে গেলে চুলকানি বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
যদি সঠিক রোগ ভেদে ঔষধটি প্রয়োগ করা না যায় তাহলে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত কোনোভাবেই এই লোশনটি ব্যবহার করা উচিত হবে না।
লরিক্স লোশন শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা উচিত। এই লোশন শুধুমাত্র বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য। ত্বকে অতিরিক্ত প্রয়োগের ফলে স্থানীয় প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
বাংলাদেশে লরিক্স প্লাস লোশন এর দাম
- ৬০ এমএল বোটল: ২০০ টাকা
- কোম্পানি: অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড
- প্রাপ্তিস্থান: স্থানীয় ফার্মেসি বা অনলাইন শপ
লোশনটির দাম কোম্পানি এবং প্যাকেজিং এর উপর নির্ভর করে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। তবে সাধারণত এটি একটি সাশ্রয়ী মূল্যের পণ্য, যা সবাই সহজেই কিনতে পারেন।
লরিক্স প্লাস লোশন ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে একটি কার্যকরী এবং সহজলভ্য পণ্য। এটি ত্বকের শুষ্কতা, চুলকানি, একজিমা এবং সোরিয়াসিসের মতো সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে। লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জেনে রাখলে অবশ্যই এর পূর্ণ সুফল পেয়ে যাবেন আর দেখবেন নিজের ত্বককে খুব সহজেই সুস্থ ও সুন্দর রাখতে পারবেন।
লেখকের শেষ মতামত
এই আর্টিকেলে আমরা লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহারের নিয়ম, এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, দাম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। লরিক্স ক্রিম ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা খুবই জরুরি।
ত্বকের যত্নে লরিক্স প্লাস লোশন একটি বিশ্বস্ত পছন্দ। এটি ব্যবহার করে আপনি আপনার ত্বকের সমস্যাগুলো থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর রাখতে পারেন। আশা করি, এই গাইডটি আপনার জন্য সহায়ক হয়েছে।
আশা করি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পরে আপনি উপকৃত হয়েছেন এবং যে বিষয়টি পড়ার জন্য আজকের এই আর্টিকেলে প্রবেশ করেছিলেন সেটি পরিপূর্ণ হতে জানতে পেরেছেন। কারণ এই আর্টিকেলটিতে যেহেতু লরিক্স প্লাস লোশন ব্যবহারের নিয়ম এবং লরিক্স প্লাস ক্রিম এর কাজ কি তা বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া আপনি যদি আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য পোস্টগুলো পড়তে চান তাহলে আমাদের হোম পেজ ভিজিট করে ক্যাটাগরি অনুসারে পড়ে নিতে পারবেন। আর অতিরিক্ত কোন তথ্যের প্রয়োজন হলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন।