সিনামিন সিরাপ এর নাম আমরা প্রায় কম বেশি সকলেই শুনেছি। এটি মূলত জ্বর সর্দির সিরাপ হিসেবে আমরা সেবন করে থাকি। আমাদের ঠান্ডা সর্দি কাশি শীত বলুন আর গরম বলুন যে কোন সময়ে লেগেই থাকে তখন আমরা অনেকেই সিনামিন সিরাপটি খাই। এই সিরাপটি যে কোন ফার্মেসীর দোকান থেকে পাওয়া যায়। খুব সহজ দামেই এই ওষুধটি কিনতে পারি।
সিনামিন ওষুধ ট্যাবলেট বার সিরাপ এই দুটি ফরমেটে পাওয়া যায়। যারা ট্যাবলেট খেতে পারে না তারা সিরাপ খেতে খেতে পারেন। বিশেষ করে সিনামিন সিরাপটি ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ছোট বাচ্চাদের পাশাপাশি বড়রা এই সিরাপ নিতে পারে। চলুন এবার সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি, উপকারিতা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি সমস্ত বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব।
সিনামিন কোন রোগের ঔষধ
আমরা সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি তা জেনে নেওয়া আগে সিনামিন কোন রোগের ঔষধ বা এই সিরাপ কোন কোন রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়ে থাকে আগে সেই বিষয়ে ক্লিয়ার হয়ে নিব। সিনামিন সিরাপ যেসন রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় তা নিচে উল্লেখ করা হলঃ
- জ্বর অথবা ঠান্ডা লাগা
- হালকা কাশি
- এনজিওএডিমা রোগের ঔষধ
- এলার্জির ওষুধ
- কনজাংটিভাইটিস রোগের ঔষধ
- হাঁপানি অথবা একজিমা রোগের ওষুধ।
- সর্দির কারণে নাক বন্ধ হলে
- পোকামাকড়ের কামড়ে জ্বালাপোড়া হলে
- ভ্রমণ জনিত পিড়া
এছাড়াও আমাদের দেহের গোটা গোটা দাগ হলে, কীট-পতঙ্গের কামড়ে এই সিরামিন ট্যাবলেট সেবন করলে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। সুতরাং বলা যায় এই ওষুধ
- খড়া জ্বর এর ক্ষেত্রে
- ঠাণ্ডা কাশি দূর করতে
- এনজিওএডিমা
- রাইনাইটিস দূর করতে
- অ্যালার্জি জনিত ছত্রাক
- কনজাংটিভাইটিস
- হাঁপানি এবং একজিমার ক্ষেত্রে
- নাক বন্ধ এবং অ্যালার্জির ক্ষেত্রে
- পোকামাকড়ের কামড়
তবে এছাড়াও কোন ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় ব্যথা বা চুলকানিতে এটা বেশ কার্যকরী। খাদ্য ও রাসায়নিক ওষুধ দ্বারা প্ররোচিত অ্যালার্জির সমস্যা এইসব রোগের ঔষধ।
সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি
সিনামিন সিরাপটি আমরা সাধারণত সর্দি-কাশিতে খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা জানিনা সিনামিন ওষুধের আসল কাজ কি। কি ক্ষেত্রে এই ওষুধটি আমাদের কাজে দেয়। চলুন আমরা এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
- এলার্জির সমস্যা প্রতিরোধ করে
- ছুলি রোগ নিরাময়ে কাজ করে
- চুলকানি প্রতিরোধ বা ভালো করতে কাজ করে
- গলার বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে কাজ করে
- ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে কাজ করে
- শ্বাসকষ্টের সমস্যা সমাধানের কাজ করে
- খড় জ্বর ভালো করতে কাজ করে থাকে
- আমবাত ভালো করার জন্য কাজ করে
- হাঁচি সর্দি নিরাময় করতে কাজ করে থাকে
- এছাড়া চোখের চুলকানি প্রতিরোধে কাজ করে
সিনামিন সিরাপ খেলে সাধারণত এই সকল সমস্যার জন্য কাজ করে থাকে। তাই যারা এরকম সমস্যায় বুকে থাকেন চিকিৎসক তাদের সিনামিন সিরাপ দিয়ে থাকে। তবে আপনারা যে রোগের জন্যই খান না কেন অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।
সিনামিন সিরাপ এর উপকারিতা
সিনামিন সিরাপ এর উপকারিতা সমূহ নিচে উল্লেখ করে দেয়া হলঃ
১। যাদের বয়স একটু বেশি হয়ে গেছে তাদের অনেকেরই আম বাতের সমস্যা রয়েছে। আর এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য একটি কার্যকরী ঔষধ হলো সিনামিন সিরাপ। এটি সেবন করলে আম বাতের সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাবেন।
২। কেউ যদি প্রচুর পরিমাণে এলার্জির জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং সেটা কোন রকমে ভালো না হতে চাই তাহলে তার জন্য সিনামিন সিরাপ বেশ উপকারী। বর্তমানে প্রচুর মানুষ এলার্জির সমস্যায় ভুগছেন তাই যারা এই সমস্যায় রয়েছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সিনামিন সিরাপ সেবন করতে পারেন।
৩। অনেক সময় আমাদের বিভিন্ন কারনে ঠান্ডা লেগে যায় বিশেষ করে যারা বেশি পানি ঘাটাঘাটি করেন তাদের এই সমস্যাটি হয়ে থাকে তারা চাইলে ঠান্ডা লাগা দূর করতে এই সিরাপ সেবন ক্রতে পারবে।
৪। অনেক মানুষের দেখা যায় বিভিন্ন কারণে অনেকদিন ধরে কাশি হতে থাকে যা কোন রকমেই ভালো হতে চাই না। তো এই কাশির সমস্যা নিরাময় করার জন্য সিনামিন সিরাপ বেশ উপকারিতা এটি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেবন করতে পারেন।
৫। আপনার শরীর যদি কোন কারণে বা কোনরকম চর্ম রোগের কারণে প্রচুর পরিমাণে চুলকায় তাহলে সেই সমস্যা প্রতিরোধ করার জন্য সিনামিন সিরাপ বেশ উপকারী।
৬। অনেক সময় আমাদের দেখা যায় জ্বর হয়ে থাকে এবং সেটা কোন মতেই যেতে চায়না আবার গেলেও একটু পরে আবার আসে তো এরকম যদি জ্বর আপনার হয়ে থাকে তাহলে এটা থেকে মুক্তি পেতে সিনামিন সিরাপ বেশ উপকারী।
৭। অনেকেই রাইনাইটিস এর সমস্যায় ভুগে থাকেন এতে করে নাক বন্ধ হয়ে থাকে হাঁচি কাশি হতে থাকে চোখ দিয়ে পানি পড়ে চোখ জ্বালা করে। তো আপনি যদি এ ধরণের জটিল সমস্যা থেকে রেহায় পেতে চান তাহলে এই সিরাপ সেবন করতে পারেন ।
৮। ছুলি রোগ এর কারণে ত্বক ফ্যাকাস হয়ে যায় ত্বকের উপর বিভিন্ন রকম লাল লাল ফুসকুড়ি দেখা যায় যেটা প্রচুর পরিমাণে চুলকায় এবং পরবর্তীতে সেটা ঘা সৃষ্টি করে। তো আপনি যদি এ ধরণের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে চান, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে পারেন।
৯। সিনামিন সিরাপটি কাশি দূর করতে বেশি কার্যকর। আপনার যদি প্রাথমিক অবস্থায় কাশি হয় হালকা হালকা সর্দি লেগে থাকে তাহলে আপনি এই সিনামিন সিরাপটি খাবেন। এতে করে আপনার অনেক উপকার আসবে।
১০। অনেকের সর্দি কাশি লাগলে নাকের ভিতর এবং গলার ভিতর চুলকায়। এবং অনবরত না থেকে পানি ঝরে থাকে। আর এই এলার্জি দূর করতে সিনামিন ওষুধটি খুবই ভালো। তাই শুধু এটি সর্দি-কাশির সারায় না সাথে সাথে অ্যালার্জিও কমায়।
১১। সিনামিন ওষুধটি অন্যান্য কাশির ওষুধের থেকে অনেক গুণ ভালো কেননা সর্দি-কাশি ওষুধের বেশিরভাগ অ্যালকোহল থাকে। কিন্তু সিনামিন ঔষধ অর্থাৎ ট্যাবলেটের মাধ্যমে ভালো ঘুম হয়। অনেকের সর্দি কাশি লাগলে ঘুমের হয়না। এই ঔষধটি খেলে খুব সহজে ভালো ঘুম হয়।
১২। সর্দি কাশির সময় সিনামিন ওষুধটি খেলে শ্বাসনালী পরিষ্কার করে।
১৩। সাধারণ ঠান্ডা কাশিতে প্রায় সবারই চোখ লাল হয়ে যায়। অনেক সময় এমন হয় যে চোখের ঝাপসা দেখায়। এরকম অবস্থা হলে ওষুধটি আপনি নিঃসন্দেহে খেতে পারেন।
সিনামিন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
সিনামিন ট্যাবলেট এবং সিনামিন সিরাপ দুটি খুবই উপকারী ঔষধ। যারা ট্যাবলেট খেতে পারেন না তারা সিরাপ সেবন করতে পারেন। সিনামিন সিরাপটি বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্কের চাইতে শিশুরাই বেশি সেবন করে। এবং চিকিৎসকরা এই পরামর্শ ও বেশি দিয়ে থাকেন।
এছাড়া ছোট বাচ্চারা ট্যাবলেট খুব একটা পছন্দ করে না তাছাড়া ট্যাবলেট খেতে ছোট বাচ্চাদের গলায় আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য তারা সিনেমীন সিরাপটি বাচ্চাদের খাওয়াতে পারেন।
ছোটদের ক্ষেত্রে সিনামিন সিরাপ খাওয়ার নিয়মঃ
- ১ থেকে ২ বছরের শিশুদের সিনামিন সিরাপ টিম দিনে হাফ চা চামচ করে দুবার খাবার পর খাওয়াতে হবে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
- আবার যেসব বাচ্চাদের বয়স ২ থেকে ৫ বছরের মধ্যে তাদের ক্ষেত্রে খাবার খাওয়ার পরে ১ চামচ করে দিনে দুবার সেবন করতে পারবে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
- এবং ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের দিনে তিনবার খাবার পরে দুই চামচ করে খাওয়ানো যাবে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
বড়দের ক্ষেত্রে সিনামিন সিরাপ খাওয়ার নিয়মঃ
- যারা প্রাপ্তবয়স্ক রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে ২ চা চামচ করে দিনে ২ বার সেবন করতে পারেন। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
এই হলো সিনামিন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম। এছাড়াও আপনার রোগ অনুযায়ী নিয়ম ভিন্ন হতে পারে তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যদি সেবন করেন তাহলে সেটা সবচেয়ে ভালো হয়।
সিনামিন সিরাপ খাওয়ার সতর্কতা
সিরামিন সিরাপ যতটা ভালো ঠিক ততটাই খারাপ। যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে এই ওষুধটি সেবন করে থাকেন তাহলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। চলুন এগুলো সম্পর্কে জানা যাক।
- যাদের খুব একটা চোখে ঘুম হয় না তাদের আরো অনিদ্রা দেখা দিবে।
- সিনামিন সিরাপটি খেলে চোখে ঝাপসা দেখা যায়।
- মাথা ঘুরাবে বমি বমি ভাব হবে এবং যাদের গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তাদের গ্যাস্ট্রিক দেখা দেবে।
- গর্ভবতীদের সিনামিন সিরাপ খাওয়া কোন ভাবে নিরাপদ নয়। এতে মা ও শিশুর উভয়ের সমস্যা হতে পারে।
- অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে এটি মুখের শুষ্কতা বাড়িয়ে দেয়। তাই এটি অতিরিক্ত সেবন করা উচিত নয়।
সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম
ডাক্তার আপনাকে সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ার পরামর্শ দিলে অবশ্যই আপনাকে সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম মেনে সিনামিন ট্যাবলেট খেতে হবে। তাহলেই আপনি সিনামিন ট্যাবলেটের সম্পূর্ণ কার্যকারিতা পাবেন।
পনি যদি যে কোন ঔষধ খাওয়ার নিয়ম সঠিকভাবে না জানেন তাহলে সেটি থেকে সঠিক কার্যকারিতা পাওয়া যাবে না। তাহলে চলে নেবার সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব।
বড়দের ক্ষেত্রে ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়মঃ
- একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হাঁচি কাশি সর্দি লাগলে উক্ত ব্যক্তি সিনামিন ট্যাবলেট টি দিনে ২বার খেতে পারে।
- প্রাপ্তবয়স্কদের অতিরিক্ত ডোজ হিসেবে দিনে দুই এর অধিক ৩ থেকে ৪ বার সেবন করতে পারেন। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
- সিনামিন ট্যাবলেট খাবার পরে খেতে হবে। এতে করে এটি ভালো ফলাফল দিবে।
শিশুদের ক্ষেত্রে ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়মঃ
- যেসব শিশুদের বয়স ৫ বছরের নিচে তাদের ক্ষেত্রে সিনামিন ট্যাবলেট সেবন করানো উচিত নয়। এক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ দরকার।
- শিশুদের ক্ষেত্রে যাদের বয়স ৫ বছরের উপরে তাদের যদি সর্দি-কাশি হাচি লেগেই থাকে তাহলে দিনের দুবার খাবার পরে এই ট্যাবলেটটি খেতে পারে। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ার সর্তকতা
এতক্ষণ আমরা আপনাকে সিনামিন ট্যাবলেট কিভাবে খেতে হবে ছোটরা কিভাবে খাবে এবং বড়রা কিভাবে খাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানালাম। এবার চলুন সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ার সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
- যদি আমরা জনি সিনামিন ট্যাবলেটটি খুবই উপকৃত এটি ট্যাবলেট সর্দি কাশির জন্য। তবে যারা গর্ভবতী তাদের ক্ষেত্রে এই ট্যাবলেট খাওয়া একদমই উচিত না।
- গর্ভবতী মহিলাকে ট্যাবলেট খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। তা না হলে গর্ভবতী এবং গর্ভবতীর সন্তান উভয় ঝুঁটির মধ্যে পড়তে পারে।
সিনামিন সিরাপ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- শুষ্ক মুখ (Dry mouth)
- চটকা (Snap)
- পেট ব্যথা (Abdominal pain)
- মাথা ব্যাথা (Headache)
- ঝাপসা দৃষ্টি (Blurred vision)
- কোষ্ঠকাঠিন্য (Constipation)
- কানে বাজছে (Ringing in the ears)
- বুকে নিবিড়তা (Chest tightness)
- ক্ষুধা পরিবর্তন (Appetite change)
- পেশীবহুল দুর্বলতা (Muscular weakness )
- স্নায়বিক অনুভব (Nervous feeling)
- রক্তের নিম্নচাপ (Hypotension)
- বেদনাদায়ক মূত্রত্যাগ (Painful urination)
- মোটর ফাংশনে বয়স-সম্পর্কিত ঘাটতি ইত্যাদি।
সিনামিন সিরাপ খেলে কি ঘুম হয়
সিনামিন ওষুধের কাজ কি ওষুধের উপকারিতা সিরাপের উপকারিতা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রায় সবকিছু আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি এতক্ষণ। এবার চলুন জানা যাক সিনেমীন সিরাপটি খেলে কি ঘুম হয়? এটি সম্পর্কে। কারণ এই প্রশ্নটি প্রায় অনেকেরই।
তো বন্ধুরা সিনামিন সিরাপটি খেলে ঘুম হবে এটা নিশ্চিত বলা যাবে না। কারণ সিনামিন সিরাপটি একটি অ্যালকোহল যুক্ত সিরাপ। আর মূলত যেই সিরাপে অ্যালকোহল যুক্ত থাকে সেই সরাপ সেবনে সামান্য পরিমাণ হলেও ঝিমুনিভাব সৃষ্টি করে।
তবে এই সিরাপ সেবনে যে পরিপূর্ণভাবে ঘুম আসবেই সেটার কথা বলা হয়নি। যাদের ঘুমের সমস্যা তারা এই সিরাপ সেবন করলে ঘুম হওয়ার চাইতে অনিদ্রার ভাব দেখা দেয়।
এবং যাদের ঘুমের সমস্যা নেই তাদের এই সিরাপটি খেলে ভালোভাবে ঘুম হয়। তাহলে বন্ধুরা সিনামিন সিরাপটি খেলে কি ঘুম হয় এই প্রশ্নের উত্তর এটি মিলে যে যাদের অতিরিক্ত ঘুমের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এটি নিশ্চিত ঘুমের ব্যবস্থা করবে না।
তবে যাদের কোন ঘুমের সমস্যা নেই স্বাভাবিকভাবে হাঁচি কাশি সর্দি লেগেছে এবং এই কারণে সিরাপ সেবন করেছে সে ক্ষেত্রে তাদের ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিনামিন সিরাপ বেশি খেলে কি ক্ষতি হয়
সকল ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তাই ঔষধ বেশি পরিমাণ খেলে শরীরের ক্ষতি হয়। আমরা এই পর্যায়ে জানবো যে সিনামিন সিরাপ বেশি খেলে কি ক্ষতি হয়। নিচে সিনামিন সিরাপ বেশি খেলে কি ক্ষতি হয় সেসব তুলে ধরা হলো:
- সবসময় ঘুম ঘুম ভাব লাগবে
- মুখ শুকনা হয়ে যায়
- ডায়রিয়া হতে পারে
- চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন
- হার্ট বিট বেড়ে যেতে পারে
- পাকস্থলীতে তীব্র ব্যথা হতে পারে
- বমি অথবা বমি বমি ভাব হতে পারে।
যেকোন মেডিসিন সেবন অতিরিক্ত পরিমাণে সেবনের ফলে আমাদের দেহে ক্ষতি হয়, তাই ওষুধ সেবনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
সিনামিন সিরাপ এর দাম কত
সিনামিন সিরাপ মূলত ১০০ মিলি বোতল আকারে পাওয়া যায়। যার যার বর্তমান বাজার মূল্য হচ্ছে ৩০ টাকা। আসলে এই ওষুধগুলোর দাম যে কোন সময় কম বেশি হয়ে থাকে। তাই সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি ওষুধের প্যাকেটের গায়ে নির্দিষ্ট দাম ও মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ দেখে ক্রয় করবেন।
সিনামিন সিরাপ যেকোন ফার্মেসির দোকান থেকে কালেক্ট করতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন এই ওষুধ শুধুমাত্র চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী সেবনযোগ্য।
সিনামিন ট্যাবলেট দাম কত
সিনামিন ট্যাবলেট দাম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। সিনামিন ট্যাবলেটের একটি পাতায় সাধারণত ১০ টি করে ট্যাবলেট থাকে। আবার এর দামও সিনামিন সিরাপ এর থেকে তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কম। সিনামিন ট্যাবলেট উৎপাদন করে থাকে ইবনে সিনা ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড।
প্রতি পিস ৪ মিগ্রা সিনামিন ট্যাবলেট এর দাম পড়ে বর্তমানে ০.৩ টাকা। সে হিসেবে এক প্যাকেজ সিনামিন ট্যাবলেটের দাম পড়বে ১৫০ টাকা।
লেখকের শেষ মতামত
আশা করছি আজকের পোস্টটি পড়ে সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি এবং সিনামিন কোন রোগের ঔষধ তা বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। সিনামিন সিরাপ প্রধানত ঠান্ডা, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট জনত রোগেই বেশি ব্যবহৃত হয়। আবার শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের জন্যই সিনেমিন সিরাপ কার্যকরী।
দীর্ঘমেয়াদি সেবনের পূর্বে এবং গুরুতর উপসর্গের ক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে সিনামিন সিরাপ সেবন করা উচিত। এই ছিল আজকের সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি এবং সিনামিন কোন রোগের ঔষধ সম্পর্কিত সকল তথ্য সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন।
এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি সেই সম্পর্কে জানতে পারবে।