আপনি যদি একজন ভিডিও কনটেন্ট ক্রিয়েটর হন,তাহলে আপনাকে ভিডিও এডিটং সফটওয়্যার সম্পর্কে জানা দরকার। ভিডিও তৈরি করার সময় বিভিন্ন রকমের ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার বা online video editor ওয়েভ সাইট এর দরকার পরে। আমরা এই আর্টিকেলে কিছু ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো ।
সেই ভিডিও এডিটিং এর কাজ হতে পারে, মোবাইলের মাধ্যমে, কিংবা কম্পিউটারের মাধ্যমে। আপনি যদি কম্পিউটারের মাধ্যমে, ভিডিও এডিটিং করতে চান?
তাহলে কম্পিউটারের জন্য সফটওয়্যার প্রয়োজন হবে। আর যদি মোবাইলের মাধ্যমে, ভিডিও এডিটিং করতে চান? তাহলে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে।
ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার কি?
প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর ব্যতীত ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার সম্পর্কে খুব কম মানুষ জানে।কিন্তু ভিডিও এডিটিং সম্পর্কে আমরা সাধারানত সবাই কমবেশি জানি,একটি ভিডিও ফাইলকে আকর্ষনীয় করে তোলার জন্য ভিডিও ক্লিপ ,মিউজিক ,ছবি ও শব্দগুলোকে একসাথে যুক্ত করে নতুন করার প্রক্রিয়া যা সঠিক ভাবে আমাদের অনুভূতি গুলো ফুটিয়ে তুলতে পারে একটি ভিডিওর মাধ্যমে ।
ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার Free Download
অল্প সময়ের মধ্যে আপনার ভিডিও গুলো আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবেন এডিটিং এর মাধ্যমে। তো চলুন সে জনপ্রিয় ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১। Blender
এটি লাইভ প্রিভিউ, লুমা ওয়েভফর্ম এবং হিস্টোগ্রাম ডিসপ্লেতে ব্যাবহার করা হয়। অডিও মিক্সিং, সিঙ্কিং, স্ক্রাবিং এবং ওয়েভফর্ম ভিজ্যুয়ালাইজেশন এর মত মৌলিক ক্রিয়া সম্পাদন করে। ভিডিও, ছবি, অডিও এবং প্রভাব যোগ করার জন্য 32টি পর্যন্ত স্লট আছে। এই টুলটি একটি 3D অ্যানিমেশন স্যুট হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছিল, তবে এটি একটি খুব ভাল ভিডিও এডিটর অ্যাপের সাথে আসে।
👉Blender 4.4 Download – Click Here
২। Hitfilm Express
এই সফটওয়্যারের একটি বড় সুবিধা হলো আপনি ওয়াটার মার্ক ছাড়া ভিডিও এডিট করতে পারবেন। উন্নত ট্রাক পাওয়ার জন্য আপনাকে চার্জ করতে হবে।
👉Hitfilm Express Download – Click Here
৩। LightWorks video editor
উক্ত টুলস গুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে, আপনার ভিডিও অনেক কোয়ালিটি ফুল হবে। তার পাশাপাশি। আপনি যদি এই সফটওয়্যার টুলস গুলোর কাজ শিখতে চান তাহলে ইউটিউবে সার্চ করে শিখে নিতে পারেন।
👉LightWorks video editor Download – Click Here
৪। ShotCut
যদিও এই ভিডিও এডিটিং সফ্টওয়্যারটিতে দুর্দান্ত বৈশিষ্ট্য এবং টিউটোরিয়াল ভিডিও রয়েছে, কিছু ব্যবহারকারী ইন্টারফেসটিকে কিছুটা অদ্ভুত ভাবে খুঁজে পেতে পারেন।
অনেক বিনামূল্যের ভিডিও সম্পাদক 4K রেজোলিউশন সমর্থন অফার করে না। এছাড়াও, শটকাটের জন্য আপনাকে আপনার ভিডিওটি সম্পাদকে আমদানি করতে হবে না: আপনি যদি বড় ভিডিও ফাইল নিয়ে কাজ করেন তবে এটি একটি টাইমসেভার হতে পারে।
👉 ShotCut Download – Click Here
৫। Openshot
Openshot এর বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে: সীমাহীন ট্র্যাক/স্তর, রিয়েল-টাইম প্রিভিউ সহ ক্লিপের আকার পরিবর্তন, স্কেলিং, ট্রিমিং, স্ন্যাপিং, ঘূর্ণন এবং ভিডিও ট্রানজিশন কাটা, কম্পোজিটিং, ইমেজ ওভারলে, ওয়াটারমার্ক, শিরোনাম টেমপ্লেট, শিরোনাম তৈরি, সাবটাইটেল 3D অ্যানিমেটেড শিরোনাম (এবং প্রভাব), উন্নত টাইমলাইন (ড্র্যাগ অ্যান্ড ড্রপ, স্ক্রলিং, প্যানিং, জুমিং এবং স্ন্যাপিং সহ)। এটি বিনামূল্যের সম্পাদক উন্নত বৈশিষ্ট্য এবং একটি সাধারণ ইন্টারফেসের মধ্যে একটি চমৎকার ভারসাম্য বজায় রাখে।
👉 Openshot Download – Click Here
৬। InVideo
InVideo Windows এবং Mac এর জন্য উপলব্ধ। এটি একটি ইনভিডিও অনলাইন ভিডিও এডিটর।InVideo এর জন্য সেরা: আপনার ব্লগের জন্য মার্কেটিং ভিডিও বা তালিকা তৈরি করা। এর ব্যবহারকারীরা এই ভিডিও সম্পাদনা সফ্টওয়্যারটির আশ্চর্যজনক গ্রাহক পরিষেবা, ইউএক্স, অর্থের মূল্য এবং অবশ্যই এর বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য প্রশংসা করেন। InVideo ব্যবহার করা প্রতারণামূলকভাবে সহজ, এবং আশ্চর্যজনক নমনীয়তা রয়েছে।
👉 InVideo Download – Click Here
৭। iMovie
iMovie সফটওয়্যারটি Mac এ উপলব্ধ। iMovie একটি ভিডিও এডিটিং ম্যাক। iMovie এর বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে: প্রাক-তৈরি পরিবর্তনের লাইব্রেরি, ভিডিও ছাঁটাই, অডিও সম্পাদনা, বিভক্ত পর্দা ও 4K রেজোলিউশন সমর্থন।
👉 iMovie Download – Click Here
৮। Clipchamp
সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট ক্রিয়েটররা প্রাথমিক ভাবে ফ্রী ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার হিসাবে clipchamp ব্যবহার করতে পারে। clipchamp স্টক ভিডিও,অডিও,ইমেজ ও গিফ মেকার এছাড়া আরও অনেক ধরনের ফ্রি টুলস পাওয়া যায়।
👉 Clipchamp Download – Click Here
প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার
হাই কোয়ালিটি ভিডিও তৈরি বা বিভিন্ন ওয়েভ সাইটে পাবলিশ করার করার জন্য আপনাকে ভিডিও তৈরি করার জন্য ভাল মানের ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর দরকার পড়বে ।প্রফেশনাল ভিডিও মেইক করার জন্য পেইড এডিটিং সফটওয়্যার এর প্রোয়জন হয়।
১। Adobe Premiere Pro
ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর মধ্য প্রফেশনাল এডিটরদের পছন্দের তালিকায় প্রথম রয়েছে adobe premiere pro . এই সফটওয়্যারটি থেকে প্রফেশনাল সকল ধরনের কাজ করা যায়। এর বিশেষ কিছু সুবিধা হলো -সহজ ইন্টারফেজ,অনেক বেশি টুলস পাওয়া যায়,অসংখ্য মাল্টিক্যাম এঙ্গেল পাওয়া থাকে।
এক কথায় বলা যায় প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারে যে ধরনের টুলস থাকা দরকার তার সবই এতে প্যাক করা হয়েছে। সফটওয়্যারটি ৩৬০ ডিগ্রী ভিআর কন্টেন্ট, ৪কে এবং এইচডিআর ভিডিও সাপোর্ট করে।
যেহেতু অ্যাডোবের কোনো সফটওয়্যারই ফ্রি নয়, তাই এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে মাসিক ২০.৯৯ ডলার পে করতে হবে। তবে, হ্যা আপনি চাইলে ৭ দিনের ফ্রি ট্রায়াল ভাসর্নটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
২। Filmora
Filmora একটি ভিডিও এডিটর যা সহজে ব্যবহারযোগ্য ও হাইকোয়ালিটি এডিটিং করা যায়।এটি বিগিনার ও প্রফেশনাল উভয় কাজেই ব্যবহার করা যাবে ।ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস ,যা কাজ করতে সাহায্য করে। MP4,AVI,MOV এছাড়াও আরও অনেক ফরম্যাটে ভিডিও এডিট করার সুযোগ থাকে ।এডভান্সড লেভেলে কাজ করার জন্য রয়েছে Chrome Key effect,image stabilization ও Time -lapse etc.এছাড়া 300 টির বেশি ফ্যাশন ফিল্টার রয়েছে।
৩। DaVinci Resolve
DaVinci Resolve হল একটি কালার গ্রেডিং, কালার কারেকশন, ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট এবং অডিও পোস্ট-প্রোডাকশন ভিডিও এডিটিং অ্যাপ্লিকেশন macOs উইন্ডোজ এবং লিনাক্সের জন্য সাধারাণত ব্যবহার করা হয়। এটি প্রফেশনাল ও নন-প্রফেশনাল উভয়ই ইউজ করতে পারে। এখানে মোশন গ্রাফিক ও অডিও এডিটিং টুল পাওয়া যায়।
৪। CyberLink PowerDirector 365
সাইবারলিং এর তৈরি PowerDirector সফটওয়্যারটি রয়েছে আমাদের লিস্টের দ্বিতীয় স্থানে। এটিও খুবই শক্তিশালী একটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। সফটওয়্যারটির সিম্পল ইউজার ইন্টারফেস থাকায় আপনি নতুন হোন বা প্রোফেশনাল, খুব সহজেই প্রোফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।
৫। KineMaster
প্রফেশনাল ভিডিও মেইক করার জন্য kine master ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারটি বেশ জনপ্রিয়। Drag-n-drop টেকনিকের মাধ্যমে বিভিন্ন মিডিয়াতে ফাইল ইম্পোর্ট করা যায়।এর সাথে রয়েছে সাবটাইটেল যুক্ত করার সুবিধা।এছাড়াও আছে real- time recording ,animations styles ,multi layers, themes etc.
৬। Vegas Pro
অনেক প্রফেশনাল ইউটিউবার আছেন, যারা তাদের ভিডিও এডিটিং এর জন্য Vegas Pro ব্যবহার করেন। সফটওয়্যারটির কাস্টমাইজেবল ইউজার ইন্টারফেস থাকায় আপনি নিজের মতো করে এটি কাস্টমাইজ করতে পারবেন। প্রোফেশনাল মানের এডিটিংয়ের জন্য প্রায় সব ফিচারই প্যাক করা হয়েছে এই পেইড সফটওয়্যারটিতে। আপনি মাসিক ১৯.৯৯ ডলার খরচের বিনিময় এই সফটওয়্যারটি স্বাচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারবেন।
৭। Final Cut Pro
এই সফটওয়্যারটিতে মাল্টি-ক্যাম এডিটিং, মোশন ট্র্যাকিং, ৩৬০° এডিটিং, অ্যাডভান্স কালার গ্রেডিং, এইচডিআর সহ আরো অসংখ্য ফিচার রয়েছে।
বর্তমানে এটি শুধু ইন্টেল প্রোসেসর ভিত্তিক ম্যাক কম্পিউটারে ব্যবহার করা যায়। আপনি যদি একজন ম্যাক ইউজার হয়ে থাকেন তাহলে এই পেইড সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারেন। সফটওয়্যারটির ব্যবহারকারী ম্যাকেই বেশি। আপনি এককালীন ২৯৯.৯৯ ডলার পেমেন্ট করে এই সফটওয়্যারটি কিনতে পারবেন।
৮। Adobe Premiere Elements
এটি অন্যান্য ভিডিও এডিটরের মতো আনলিমিটেড ভিডিও এবং অডিও ট্রাক হ্যান্ডেল করতে সক্ষম। সফটওয়্যারটিতে রয়েছে চমৎকার সব ফিচার যেগুলোর সাহায্যে আপনি খুব সহজেই প্রোফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।
আমরা চারদিকে খেয়াল করলে দেখতে পাবো শিক্ষা ব্যবস্থা ,ব্যবসা -বানিজ্য , মিডিয়া জগতের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ ভিডিও কন্টেন্ট এর দখলে । বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী নিজেকে এগিয়ে রাখার জন্য ভিডিও এডিটির হিসাবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।
ভিডিও এখন একটি সহজ লভ্য বিষয়।প্রায় ৯০% মানুষ ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করছে যেমন – মোবাইল ফোন ,ট্যাবলেট,ল্যাপটপ ,আর দিন দিন এর ইউজার বেড়ে চলছে।আপনি চাইলে খুব সহজেই মানুষের কাছে আপনার ভিডিও কন্টেন্টি পৌছে দিতে পারবেন।
ভিডিও এডিটিং এর জন্য সবচেয়ে ভালো সফটওয়্যার কোনটি?
ভিডিও এডিট করার সফটওয়্যার গুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
- Filmora
- Adobe Premiere Pro
- Final Cut Pro
- After Effects
- Blender,
- Shotcut
- OpenShot
- Camtasia
- Vegas Pro
ভিডিও এডিটিং শিখতে কতদিন সময় লাগে?
ভিডিও এডিটিং শিখতে আসলে কতদিন লাগবে? এটা সঠিকতা যাচাই না করে বলা সম্ভব নয়। কেননা যে বেশি এই কাজে ফোকাস করবে সেই তত তাড়াতাড়ি সফল হতে পারবে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভিডিও এডিটিং শিখতে অন্তত ১ দেড় মাস সময় লাগবে।
তবে আপনি যদি এইসব বিষয় খুব তাড়াতাড়ি আয়ত্ত করার মতো বুদ্ধি রাখেন তাহলে এক মাসের কম সময়েও আপনি একজন প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। তবে ভিডিও এডিটিং শিখতে মাস্টার হিসেবে ফলো করুন ইউটিউব।
ভিডিও এডিটিং করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
ভিডিও এডিটিং এর কাজ করতে চাইলে আপনার কাছে বেশ কয়েকটি জিনিস থাকতে হবে। যা যা থাকতে হবে সেগুলো হচ্ছে:
- ভালো মানের ইন্টারনেট সংযোগ
- একটি স্মার্ট ফোন
- ল্যাপটপ অথবা কম্পিউটার
- বিদ্যুৎ সংযোগ
ভিডিও এডিটিং শেখার প্রয়োজনীয়তা কি?
সবচাইতে বড় কথা বর্তমান সমাজ এবং সমাজে বসবাসরত মানুষগুলো প্রত্যেকেই অনলাইনের সাথে যুক্ত। এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না যারা আজকালকার দিনে ঘরে বসে কোন ভিডিও দেখেন না।
আর তার চাইতে বড় কথা আপনি যদি একজন প্রফেশনাল এবং ইউনিক ভিডিও এডিটর হয়ে উঠতে পারেন তাহলে আপনি অনলাইন প্লাটফর্মে এমন অনেক কাজ করতে পারবেন তাও আবার হাই রেটে। কারণ কাজে আপনি যত নতুনত্ব নিয়ে আসতে পারবেন আপনার কদর ততটাই বেড়ে যাবে।
লেখকের শেষ মতামত
এই ছিল আজকের ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার Free Download সম্পর্কিত সকল তথ্য সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার Free Download নিয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার Free Download সম্পর্কে জানতে পারবে।