বেক্সিমকো কাশির সিরাপ – ডেক্সট্রিম সিরাপ এর কাজ কি

কাশি বর্তমান সময়ের মানুষদের খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। ছোট থেকে বড় সবাই কমবেশি এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়। আবহাওয়া যত পরিবর্তন হচ্ছে ঠিক তত পরিমাণে বেড়ে যাচ্ছে মানুষের সর্দি এবং কাশি। অন্যান্য বয়স্ক মানুষের তুলনায় বাচ্চারা আবার খুব তাড়াতাড়ি সর্দি এবং কাশিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তাই কাশি হলে সেটাকে অবহেলা না করে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া খুবই জরুরী। 

বেক্সিমকো কাশির সিরাপ

আর আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা কাশি হলে বেক্সিমকো কোম্পানির কাশির সিরাপ এর সন্ধান করে থাকেন। তাই আপনাদের সুবিধার খাতিরে সঠিক তথ্য নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। এই সম্পূর্ণ পোস্টে আমি বেক্সিমকো কাশির সিরাপ এর নাম তুলে ধরব। যাতে করে আপনারা সঠিক তথ্য পেয়ে যান, কোনটা আপনার বাচ্চার জন্য ভালো হবে। চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

বেক্সিমকো কাশির সিরাপ

শুষ্ক ও খুশখুশে কাশি ও বুকের কফ দূর করতে সেরা ২টি কাশির সিরাপ। আজকে আমরা সেরা ২টি ডেক্সট্রিম সিরাপ এবং টুসপেল সিরাপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। 

১। ডেক্সট্রিম সিরাপ (Dextrim Syrup) 

ডেক্সট্রিম সিরাপ (Dextrim Syrup) হচ্ছে মূলত বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস বাজারজাত করে থাকেন। 

এই স্পেশাল সিরাপটি বাজার মূল্য ১০০ টাকা। এটি কফ কাশির জন্য একটি কম্বাইন্ড ড্রাগস এবং প্রেসেন্ট সিরাপের রয়েছে তিন ধরনের উপাদান। ডেক্সট্রোমেথর্ফেন, ফিনাইলএফ্রিন এবং ট্রাইপ্রোলিডিন। এর কাজ হল বুকের শ্লেষ্মা বা কফ দূর করার জন্য ব্রেইনকে সিগন্যাল দেওয়া।

ডেক্সট্রিম সিরাপ এর কাজ কি

ডেক্সট্রিম সিরাপ সাধারনত বিশেষ করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সর্দি, কাশি ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দূর করার জন্য ব্যবহার করা হয়।  যার গ্রুপ নাম হচ্ছেডেক্সট্রোমেথর্ফেন, ফিনাইলএফ্রি এবং ট্রাইপ্রোলিডিন । এই ৩ টি উপাদান শ্বাসনালী পরিষ্কা এবং শ্লেস্মা পাতলা করতে সহায়তা করে, যার ফলে শ্বাস সহজেই নেওয়া যায়। Dextrim Syrup এর কাজ গুলো হলো –

  • কফ পাতলা করা
  • শ্বাসনালী খুলে শ্বাস নিতে সাহায্য করা
  • কাশি নিয়ন্ত্রণ করা
  • শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা কমানো
  • সর্দির উপসর্গ উপশম করা
আরো পড়ুনঃ-  চাপা ভাঙ্গা ঠিক করার ট্যাবলেট - চাপা ভাঙ্গা ঠিক করার উপায়

উল্লিখিত সমস্যার ক্ষেত্রে Dextrim Syrup ব্যবহার হয়ে থাকে। আর এই সিরাপটি ব্যবহারের আগে  অবশ্যই একজন নিবন্ধিত ডাক্তারের সাথে মতবিনিময় করতে হয় ।

ডেক্সট্রিম সিরাপ খাওয়ার নিয়ম

যেকোনো ধরণের সিরাপ খাওয়ার নিয়ম একজন ভালো ডাক্তার সঠিকভাবে বলতে পারবেন। তবে এই সিরাপের কিছু সাধারণ নিয়ম রয়েছে যেমনঃ 

  • ডেক্সট্রিম সিরাপ সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতি ৪ ঘন্টায় ১ চা চামচ ( ৫ মিলি ) করে খাওয়া উচিত। ছয় থেকে ১২ বছরের শিশুদের জন্য প্রতি ৪ ঘন্টায় ১/২ চা চামচ ( ২.৫ মিলি ) করে খাওয়া উচিত। 
  • দুই বছরের নিচে শিশুদের জন্য ডেক্সট্রিম সিরাপ ওষুধ ব্যবহার করা নিষিদ্ধ । 

ডেক্সট্রিম সিরাপ খাওয়ার আগে কিছু সাধারণ নির্দেশনা মেনে চলা উচিত । সেগুলো হলো-

  • সঠিকভাবে সেগুলোর জন্য নির্দেশনা
  • খাবারের পর সিরাপ সেবন করা উত্তম ।
  • এই সিরাপ সেবনের আগে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিতে হবে ।

ডেক্সট্রিম সিরাপ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ডেক্সট্রিম সিরাপ সেবনে আমাদের দেহে সাধারন কিছু ক্ষতিকর প্রভাব দেখা দিতে পারে সেগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ 

  • মাথা ঘোরা
  • ক্লান্তি বা নিদ্রাহীনতা
  • বমি বমি ভাব বা বমি
  • পেটের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা
  • মুখ শুকিয়ে যাওয়া

ডেক্সট্রিম সিরাপ এর গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

ডেক্সট্রিম সিরাপ এর জটিল ক্ষতিকর প্রভবগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ 

  • শ্বাসকষ্ট
  • বুক ব্যাথা
  • ত্বকের রেশ বা ফুসকুড়ি
  • অস্বাভাবিকভাবে হৃদস্পন্দন বাড়া

ডেক্সট্রিম সিরাপ সেবনে সতর্কতা

এই সিরাপ গ্রহন শুরু করার আগে আমাদেরকে বেশ কয়েকটি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে নির্দিষ্ট শারীরিক কোন সমস্যা আপনার দেহে থাকলে, আগে ডাক্তারকে অবশ্যই জানাতে হবে। চলুন সতর্কতা গুলো জেনে আসি –

গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারীদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

যারা দীর্ঘমেয়াদী শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি রোগে ভুগছেন, তাদের জন্য ডেক্সট্রিম সিরাপ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

অতিরিক্ত মদ্যপান করলে এই সিরাপ সেবন করা উচিত নয় কেননা এতে ওষুধের কার্যকারিতা অনেকতাই কমে যায়। 

আরো পড়ুনঃ-  রুচির সিরাপ কোনটা ভালো - রুচির সিরাপ এর নাম

ডেক্সট্রিম সিরাপ এর দাম

এটির প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এই সিরাপ টির বাজার মূল্য ১০০টাকা। টুসপেল সিরাপ কাশির চিকিৎসায় কার্যকর ওষুধ হলেও এটি ব্যবহারের আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এর উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকলে এটি নিরাপদভাবে ব্যবহার করা সম্ভব।

২। টুসপেল সিরাপ (Tuspel Syrup) 

Tuspel Syrup মূলত আমাদের দেহে এক্সপেক্টোরেন্ট ও ব্রংকোডাইলেটর হিসেবে কাজ করে থাকে যা কফ বা শ্লেষ্মা সরিয়ে আমাদের শ্বাসনালীর পথ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শুস্ক কাশি ও শ্বাসকষ্ট দূর করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

এটিও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস বাজারজাত করে থাকেন। এতে তিন ধরনের উপাদান রয়েছে গুয়াইফিনেসিন, ডেক্সট্রোমিথরফেন এবং মেনথল। 

টুসপেল সিরাপ এর কাজ কি

টুসপেল সিরাপ হলো এক ধরনের ওষুধ যা সাধারণত কাশি ও শ্বাসতন্ত্রজনিত সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এর কাজ হল বুকের শ্লেষ্মা বা কফ দূর করার জন্য ব্রেইনকে সিগন্যাল দেওয়া। এবং ব্রেইন সেই সিগন্যাল অনুযায়ী বুকের কফ কে ধীরে ধীরে রিফ্লেক্স করতে থাকে। গোয়ায় পেনিসিলিন এর কাজ হল বুকে জমা থাকা শুকনো কফ গুলো নরম করে শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক করা। 

এটি কফ কাশির কারণে অস্বস্তিকর ভাব এবং শ্বাস। প্রশ্বাসের অসুবিধা রিলিফ হোয়াইটলি ব্যবহৃত হয়। তাই কফ কাশির জন্য প্রাপ্তবয়স্করা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দিনে তিনবার দু চামচ করে আহারের পর টুসপেল সিরাপটি খেতে পারেন। 

এটির প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। প্রাপ্তবয়স্করা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দিনে তিন বার দু চামচ করে আহারের পর খেতে পারেন।

টুসপেল সিরাপের উপকারিতা

টুসপেল সিরাপের উপকারিতাগুলো নিম্নে তুলে ধরা হলঃ

  • কাশির উপশম এর ক্ষেত্রে – শুকনো ও ভেজা উভয় ধরনের কাশির চিকিৎসায় কার্যকর।
  • শ্বাসপ্রশ্বাসের উন্নতির ক্ষেত্রে – শ্বাসনালীর সমস্যা থেকে রেহায় পাওয়া যায়। 
  • ঠান্ডাজনিত সমস্যার ক্ষেত্রে – সর্দি-কাশি নিরাময় করে ।
  • এলার্জিজনিত কাশির ক্ষেত্রেধ – ধুলাবালিজনিত কাশি নিরাময় করতে সহায়তা করে থাকে।

টুসপেল সিরাপ খাওয়ার নিয়ম

টুসপেল সিরাপ প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে একজন নিবন্ধিত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দিনে দু চামচ করে ২বার খাবার পরে খেতে পারেন। 

প্রাপ্তবয়স্করা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দিনে তিন বার দু চামচ করে আহারের পর খেতে পারেন। বুকের কফ কাশি দূর করার জন্য এটিও একটি কম্বাইন্ড ড্রাগ। 

আরো পড়ুনঃ-  ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা - ই ক্যাপ খেলে কি হয়

মাত্রা ও সেবনবিধি

  • প্রাপ্তবয়স্কদের ব্যবহার: ১২ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে ২ চা চামচ প্রতি ৬ ঘন্টায়।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে যারা ১২ বছরের কম তাদের জন্য ব্যবহার নির্দেশিত নয়।

খাবারের পর বা খাবারের সাথে বোতল ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিয়ে সেবন করা উত্তম। 

টুসপেল সিরাপ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

টুসপেল সিরাপ এর সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিম্নে তুলে ধরা হলঃ

  • মাথা ঘোরা, 
  • তন্দ্রা, 
  • নার্ভাস, 
  • অস্থির, 
  • উদ্বিগ্ন বা খিটখিটে ভাব।
  • গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ব্যাঘাত ইত্যাদি।

টুসপেল সিরাপ এর সতর্কতা

  • উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় আক্রান্তদের জন্য সতর্কতা দরকার
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতিত ব্যবহার করা উচিত নয়।
  • টুসপেল সিরাপ ব্যবহারের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
  • চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মাত্রা নির্ধারণ করা উচিত।
  • ১-২ সপ্তাহ পরেও উপশম না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • সিরাপ সংরক্ষণ করুন ঠাণ্ডা ও শুষ্ক স্থানে।
  • গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মা ও ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ রোগী এই সিরাপ এড়িয়ে চলা উচিত

টুসপেল সিরাপ এর দাম

এটির প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। এই সিরাপ টির বাজার মূল্য ৮৫টাকা। টুসপেল সিরাপ কাশির চিকিৎসায় কার্যকর ওষুধ হলেও এটি ব্যবহারের আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এর উপকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন থাকলে এটি নিরাপদভাবে ব্যবহার করা সম্ভব।

লেখকের শেষ মতামত

উপরোক্ত আলোচনায় আমরা বেক্সিমকো কাশির সিরাপের নাম, দাম এবং নির্দেশিকা সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আমরা সকলেই একটি সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান হিসেবে বেচে থাকতে চাই। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আমরা তারাহুড়ো করে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ঔষধ সেবন করে থাকি। যেটি করা একদমই উচিত নয়।

এতে উপকারের পরিবর্তে নানান পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। আপনার কাশি হলে দোকানের সিরাপ আগে না দিয়ে ঘরোয়া কিছু টোটকা ব্যবহার করতে পারেন। আর একজন বিশেষজ্ঞের মত হচ্ছে, প্রথমদিকে কোন ভাবেই মেডিসিন সেবন করানো উচিত নয় এতে করে পরবর্তীতে দেহে নানান জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে।

এই ছিল আজকের বেক্সিমকো কাশির সিরাপ সম্পর্কিত সকল তথ্য সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করছি বেক্সিমকো কাশির সিরাপ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন।

এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও বেক্সিমকো কাশির সিরাপ সম্পর্কে জানতে পারবে।

Leave a Comment