অনেকেই রয়েছেন যারা পায়খানা নরম করার জন্য বিভিন্ন সিরাপ বা ট্যাবলেট সেবন করে থাকেন। তবে কিছু ট্যাবলেট রয়েছে যেগুলো আপনার পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য খুবই কার্যকরী। তাই আজকের আর্টিকেলে পায়খানা নরম করার সিরাপ এবং পায়খানা ক্লিয়ার করার ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। এছাড়াও আরও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করবো।
কিছু মানুষ আছে যাদের পায়খানা হতে অনেক সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যা গুলো হলে খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে পেট এর অন্যান্য সমস্যা হয়ে যায়। কোন একটি স্বাভাবিক মানুষের যদি একটানা তিন দিন থেকে চার দিন পর্যন্ত যদি মলত্যাগ না হয়ে থাকে তাহলে পেট ফাঁপা এবং বায়ুতে অনেক দুর্গন্ধ জনিত সমস্যা গুলোর সম্মুখীন হতে হয়ে থাকে ৷
সাধারণত এই সমস্যা গুলো হলে অতি দ্রুত আপনাকে ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করতে হবে রোগী কে। তাই আমাদেরকে পায়খানা নরম করার সিরাপ এবং পায়খানা ক্লিয়ার করার ঔষধ নাম জেনে নিতে হবে। তাহলে চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে পায়খানা নরম করার সিরাপ সম্পর্কে জেন নেই।
পায়খানা নরম করার সিরাপ
পায়খানা নরম করার সিরাপ হচ্ছে এমন একটি ওষুধ আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করবে। এই সিরাপগুলো সাধারণত আপনার মলকে নরম করতে এবং মলত্যাগকে সহজ করে তুলতে সাহায্য করে। তাই যদি আপনি এই বিষয়ে সঠিক ধারণা নিতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। পায়খানা নরম করার সিরাপ এর বিভিন্ন ধরন রয়েছে। যেমন,
- ল্যাকটুলোজ
- সেনা
- সাইলিয়াম হসসিদা
ল্যাকটুলোজ সিরাপ: ল্যাকটুলোজ হলো একটি কৃত্রিম চিনি যা মলকে নরম করতে সাহায্য করে থাকে। এটি খাদ্য এর মাধ্যমে শোষিত হয়ে থাকে না । তাই এটি পরিপাক তন্ত্রে পৌঁছে মল এর পরিমাণ বাড়ায় এবং মলকে নরম করে তুলতে সহায়তা করে থাকে । ল্যাকটুলোজ হলো সাধারণত প্রতিদিন এক বার থেকে তিন বার খাওয়া হয়ে থাকে ৷
সেনা সিরাপ: সেনা সিরাপ হলো একটি প্রাকৃতিক উদ্ভিদ যা মলকে নরম করতে সাহায্য করে থাকে । এটি সাধারণত মল ত্যাগের প্রতিক্রিয়া বৃদ্ধি করে থাকে এবং মলকে নরম করে তুলতে সহায়তা করে থাকেন । সেনা হলো সাধারণত প্রতিদিন এক বার থেকে তিন বার খাওয়া হয় ।
সাইলিয়াম হসসিদা: এটি একটি প্রাকৃতিক ফাইবার। এটি পায়খানার আর্দ্র রাখতে বেশ ভালো সাহায্য করে। এছাড়াও এটি মলত্যাগ সহজ করে তুলতেও সাহায্য করে। তাই নিয়ম অনুযায়ী দিনে ১ থেকে ৩ বার এই সাইলিয়াম হসসিদা সেবন করলে অনেক উপকার পাবেন।
যদি আপনার এই ওষুধগুলো খাওয়ার সময় কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করে থাকেন। তাহলে অবশ্যই আপনি অভিজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।
পায়খানা নরম করার সিরাপ গুলো হল এমন একটি ঔষধ যা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে থাকে । এই সিরাপ গুলো সাধারণত মলকে নরম করতে এবং মল ত্যাগ করা কে সহজ করে তোলে। পায়খানা নরম করার সিরাপ এর বিভিন্ন ধরন রয়েছে । কিছু সাধারণ ধরন গুলো হল যেমন :
পায়খানা নরম করার এই সিরাপ গুলো ব্যবহার করার আগে আপনার অবশ্যই ডাক্তার এর সাথে পরামর্শ করা উচিত।
পায়খানা ক্লিয়ার করার ঔষধ
অনেক সময় দেখা যায় পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য বিভিন্ন ওষুধ সেবন করে থাকেন। তবে সকল ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। কারণ সকল মানুষের শরীর এক নয়। কারো ওষুধ খাওয়ার ফলে পায়খানা ক্লিয়ার হয়। আবার কারো হয় না। ইসবগুলের ভুসি হচ্ছে মূলত পায়খানা ক্লিয়ার করার ওষুধের মধ্যে সবচেয়ে সেরা ওষুধ। আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কিংবা আপনার পায়খানা ক্লিয়ার করতে চান তাহলে সবগুলের ভুসি খেতে পারেন ।
এই ওষুধটি খুবই চমৎকার একটি ঘরোয়া ওষুধ। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইবার যা আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যর হাত থেকে রক্ষা করবে। এই ইসবগুলের ভুসি আপনার পানি শোষণ ও ধারণ করার মাধ্যমে পায়খানা অনেক নরম করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
সাধারণত এই ইসবগুলের ভুসি ডাক্তারেরা দিনে ২ বার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যদি আপনি ইসবগুলের ভুসি খেয়ে থাকেন, তাহলে সারাদিনে আপনাকে অন্তত ২ লিটার পানি পান করতে হবে। এটা অত্যন্ত জরুরী। এতে করে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা খুব দ্রুত দূর হয়ে যাবে। আশা করি পায়খানা ক্লিয়ার করার ওষুধ সম্পর্কে আপনি একটি সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
পায়খানা ক্লিয়ার করার সাপোজিটরি
ছোট থেকে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের পায়খানার সমস্যা হয়ে থাকে। স্বাভাবিক ভাবে পায়খানা ক্লিয়ার হয় না। অনেক সময় দেখা যায় কষা পায়খানা হয়ে থাকে। তাই এই সমস্যা দূর করতে ডাক্তার সাপোজিটরি ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
আপনার জন্য কোন ধরনের সাপোজিটরি সবচেয়ে ভাল কাজ করবে সেটার জন্য আপনি ডাক্তার বা ফার্মাসিস্টের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।। তবে আমি একটি সাপোজিটরি ব্যবহার করতে বলবো সেটা সচারচর সকল মানুষ ব্যবহার করে থকে। সেটি হচ্ছে গ্লিসারিন সাপোজিটরি।
যাদের অনিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা পায়খানা কষা যাদের রেগুলার কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় তাদের জন্য এটি উপযুক্ত ঔষধ নয় যেকোন ডায়াগনোসিস অথবা পেটের যে কোন পরীক্ষার জন্য পেট পরিষ্কার করতে এই সাপোজিটরি প্রয়োগ করা হয় যাতে পেটের ভিতরে কোন টয়লেট না থাকে সেক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
পায়খানা ক্লিয়ার করার সাপোজিটরির কিছু নাম নিচে উল্লেখ করে দেয়া হলঃ
- Glysup Suppository 1.15 gm ( 3 taka)
- Glysup Suppository 2.30 gm (5 taka)
- Sapotor Suppository 1.15 gm ( 3 taka)
পায়খানা ক্লিয়ার করার হোমিও ঔষধ
আমাদের মধ্যে অনেকেই প্রায় দিন কোষ্ঠকাঠিন্য এর ফাঁদে পড়ে যায় এবং বেজায় কষ্ট পান। আর এমন সমস্যার খপ্পরে পড়ার পরপরই তাঁরা চট করে ‘স্টুল সফটনার’ ঔষধ খেয়ে নেন। তাতে হয়তো চটজলদি সমস্যা গুলো কমে যায় ঠিকই, তবে একাধিক জটিল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা ও বাড়ে।
তাই চিকিৎসক এর পরামর্শ ব্যতিত এইসব ঔষধ খাওয়া চলবে না। তবে এর মধ্যে ও একটি ভালো খবর হলো যে, এই সমস্যায় একবারে ধন্বন্তরি এর মতো কাজ করে থাকে কিছু হোমিওপ্যাথি ঔষধ। আর এইসব ঔষধ এর তেমন কিন্তু কোন ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও নেই।
ঔষধ এর ডোজ দিনের পর দিন যদি বাড়িয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোন ও গতি থাকে না। তবে এই সমস্যা গুলোর ও সমাধান রয়েছে হোমিওপ্যাথিতে।
সেক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে অ্যালোপ্যাথি ঔষধ এর সঙ্গেই হোমিওপ্যাথি ঔষধ চলে। তারপর ও ধীরে ধীরে অ্যালোপ্যাথি ঔষধ এর ডোজ গুলো কমাতে কমাতে একদম শূন্য করে দেওয়া হয়ে থাকে ৷ তারপর থেকে রোগীর চলে শুধু মাত্র হোমিওপ্যাথি ঔষধ। কোষ্ঠকাঠিন্য এর চিকিৎসায় কয়েকটি হোমিওপ্যাথি ঔষধ অত্যন্ত কার্যকরী হয়ে থাকে, যেমন ধরুন –
- Opium
- Alumina
- Silica
- Mag mur
- Graphitis
- Thuja
- Nux vom
- Syphilinum Hydrastis
- Cascara sag
তবে যদি চিকিৎসক এর পরামর্শ ছাড়া এইসব ঔষধ কিন্তু একবারেই খাওয়া যাবে না । এই ভুলটা আপনারা করলেই ফাঁসবেন ।
পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম
একজন মানুষ যদি দুই দিন থেকে তিন দিন পায়খানা না করলে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তার এর পরামর্শ নিতে হবে । এখন যাদের পায়খানা জনিত সমস্যা রয়েছে তারা ঘন্টার পর ঘন্টা কিন্তু বাথরুমে বসে থাকে। কিন্তু তারপর ও তাদের পেট ক্লিয়ার ভাবে মলত্যাগ করতে সক্ষম হয় না ।
আবার কিছু মানুষ এর পায়খানা হঠাৎ করে আবার শক্ত এবং কষা হয়ে যায় । এ অবস্থায় তখন তাদের পায়খানা ক্লিয়ার ভাবে হয় না । অনেকেই আবার তাদের এই পায়খানা জনিত সমস্যা দূর করার জন্য অনলাইনে ট্যাবলেট এর নাম জানার চেষ্টা করে থাকে ।
কারণ ডাক্তার এর কাছে গেলে অনেক সময় কিন্তু কোন প্রকার কোন সমাধান পাওয়া যায় না। আর তাই এজন্য আপনাদের সুবিধার্থে কয়েকটি পায়খানা ক্লিয়ার করার কার্যকারী ট্যাবলেট এর নাম উল্লেখ করা হলঃ
- Bisacodyl 5 mg
- Dulcolax 5 mg
- Duralax 5 mg
- Lactulose
- Glysup Tablet
- Lubigut 8 Tablet
- Ezyfeel Tablet
- Laxavin Tablet
- Ezylife 10 Tablet
এই ট্যাবলেট ছাড়াও পায়খানা ক্লীয়ার করতে বেশ কিছু ভেজষ ঔষধ পাওয়া যায়। তবে এই ঔষধ গুলো ডাক্তারের পরামর্শে সেবন করা উচিত। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ না নিলে অনেক ধরের অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয়। তাই অবশ্যই এই ঔষধ গুলো নেয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবেন।
কি খেলে পায়খানা নরম হবে
শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত পায়খানা হওয়া প্রয়োজন। আমাদের নিজেদের দোষে অনেক সময় আমরা পায়খানা কষা করে ফেলি। অনেকে জানে না পায়খানা কষা হলে কি কি সমস্যা হতে পারে। তাই পায়খানা কষা হলে তারা সেটাকে তেমন গুরুত্ব দেয় না।
পায়খানার কষা দূর করতে নিচের খাবার গুলো খাওয়া যেতে পারে। এ খাবার গুলো পায়খানা নরম করতে সাহায্য করে।
- আপেল
- কলা
- বেল
- পেঁপে
- পালং শাক
- ব্রকলি
- ওটামিল
- ব্রাউন রাইস
- বার্লি
- বেশি বেশি পানি পান করা
কি খেলে পায়খানা হবে
যেকোনো বয়সেই এই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে এটি যত দ্রুত সম্ভব ভালো করতে হবে। সাধারণত বিভিন্ন উপায়ে আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করা যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে অথবা কোন রোগের লক্ষণ হতে পারে। এই সমস্যাগুলোর মধ্যে নানা কারণ থাকতে পারে, যেমনঃ
- পর্যাপ্ত পানি পান না করা।
- খাদ্যাভ্যাসে সময় আঁশের পরিমাণ অনেক কম হওয়া।
- কোন প্রকার মানসিক চাপের মধ্যে থাকা।
- মলত্যাগ করার সময় আসলেও চেপে রাখা।
- পূর্বে যে সমস্যাগুলো বলা হয়েছে এই সকল সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এই সমস্যাগুলো যত দ্রুত কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করবেন।
- অনেক সময় দেখা যায় কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে অনেক অসস্তিবোধ করে থাকেন।
- তবে এটি যদি আপনি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না নেন। তাহলে আপনার আরও সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
কিছু খাবার আন্ত্রিক নড়াচড়া বাড়িয়ে এবং মলকে নরম করে পায়খানা হতে সাহায্য করতে পারে। যেমন,
- শাকসবজিঃ পালংশাক, লাউশাক, ঢেঁড়স শাক, ব্রকলি, গাজর, মটরশুঁটি।
- ফলঃ আপেল, নাশপাতি, কলা, বেরিজ।
- ডালঃ মসুর ডাল, মুগ ডাল, ছোলা।
- পূর্ণ শস্যঃ ওটমিল, বাদামী চাল, ব্রাউন ব্রেড।
- পানিঃ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি মলকে নরম রাখতে সাহায্য করে।
কিছু খাবার রয়েছে যেসব খাবার আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই এই সকল খাবারগুলো এড়াতে হবে। যেমন ফাস্ট ফুড, মাংস, হিমায়িত খাবার, এই সকল খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে পারলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা খুব দ্রুত দূর হয়ে যাবে।
এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে জীবন যাত্রার মান পরিবর্তনে ও গুরুত্ব দেন এই চিকিৎসক। খাবারে আঁশ এর পরিমাণ বাড়াতে ছোলা, ডাল, পূর্ণ শষ্য এর খাবার, ওটস, ব্রকলি, গাজর, মটর, কাঠবাদাম, চিনাবাদাম , আপেল , বেরিজ , কমলা ও নাশপাতি এই খাবার গুলো নিয়মিত খেতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা আবশ্যক। যা আপনার অন্ত্র এর নড়াচড়ায় ভূমিকা রাখে ও মল এর শুষ্কভাব দূর করে থাকে।
মনে রাখবেনঃ
যদি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য লক্ষণ থাকে যেমন পেটে ব্যথা, রক্ত মল, তাহলে একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ গ্রহণ করুন।
পায়খানা ক্লিয়ার করার ঘরোয়া উপায়
পুর্বেই বলেছি যে পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম জানার আগে আমাদের জানতে হবে পায়খানা ক্লিয়ার করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। পায়খানা ক্লিয়ার করার উওয়ের ভেতর আপনি শুরুতেই আপনার খাবার তালিকাতে বেশি ফাইবার যুক্ত খাবার রাখুন। ফাইবার যুক্ত খাবার পায়খনাকে নরম করতে সাহায্য করে। এতে করে পায়খানা কষা হয় না সেই সাথে পাইখানা করতে কষ্ট হয় না।
কোষ্ঠকাঠিন্য হলো একটি বিরক্তিকর ও যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা । অনেকেই টয়লেটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দেয় , কিন্তু তারপর ও তাদের পেট পরিষ্কার হয় না ।
এ নিয়ে অনেকেই অস্বস্তিতে ভোগেন তাঁরা । মলত্যাগ যদি সপ্তাহে তিন বারের কম অথবা পরিমাণে খুব কম হয়ে থাকে তাহলে , অনেকক্ষণ ধরে চেষ্টা করে ও মলত্যাগ না হয় , অথবা মল অস্বাভাবিক রকম এর শক্ত বা শুকনো হয় , তাহলে তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়ে থাকে ।
অনেক সময় বিভিন্ন কারণ এর জন্য এ সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে ৷ তবে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস কোষ্ঠকাঠিন্য এর পেছনে প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে।
তাহলে চলুন জেনেনেই পায়খানা ক্লিয়ার করার ঘরোয়া উপায়ঃ
১। আপনাকে প্রতিদিন প্রচুর পানি ও তরল এবং খাদ্যে যথেষ্ট পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে । গোটা শস্য , শাকসবজি , ফলমূল যেমন – বেল , পেঁপে ইত্যাদি এগুলো হলো আঁশযুক্ত খাবার ।
২। যত দূর সম্ভব হয় মল চেপে না রাখার অভ্যাস করতে হবে এবং নিয়মিত ব্যায়াম ও হাঁটাচলার অভ্যাস ও গড়ে তুলতে হবে ৷
৩। ইসবগুল এর ভুসি , অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী এর মতো ঘরোয়া টোটকা ও কোষ্ঠকাঠিন্য এর সমাধানে বেশ কাজে আসে থাকে ।প্রতিদিনপ্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল এবং যথেষ্ট আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে । গোটা শস্য , শাকসবজি , ফলমূল যেমন – বেল , পেঁপে ইত্যাদি এগুলো হলো আঁশযুক্ত খাবার ।
৪। পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করতে হবে। পানি মলকে নরম করতে সাহায্য করে। দিনে অন্তত ৬-৮ গ্লাস পানি পান করুন।
৫। নিয়মিত বয্যায়াম আমাদের পচনতন্ত্রকে সচল রাখে। এতে করে পচনতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত কম করে ২০ মিনিট হাটার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৬। ইসবগুলের ভুসি হলো একটি প্রাকৃতিক ফাইবার। দিনে ১-২ চামচ ইসবগুলের ভুসি পানিতে মিশিয়ে খাবার চেষ্টা করুন।
৭। অ্যালোভেরা জেল মল ত্যাগে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১ চামচ করে অ্যালোভেরা জেল খান।
৮। অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার পচনতন্ত্রকে সচল রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ১ কাপ গরম পানিতে ১ চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করুন।
এরপর এতে ও যদি উপকার না পেলেন তাহলে চিকিৎসক এর পরামর্শ মোতাবেক ঔষধ সেবন বা ব্যবহার করা যেতে পারে । তবে এ গুলো বেশি পরিমাণে বা নিয়মিত সেবন করা অনুচিত হবে । কারণ , এতে মলদ্বার এর স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে ।
পায়খানা ক্লিয়ার করার ব্যায়াম
পায়খানা ক্লীয়ার করার অনেক ঔষধ থাকলেও, পায়খানা ক্লীয়ার করার ব্যায়াম পায়খানা ক্লীয়ার করতে বেশ কার্যকারী। নিচে কিছু ব্যায়ামের কথা উল্লেখ করা হলো। এগুলো পায়খানা ক্লীয়ার করতে বেশ সাহায্য করে।
আপনি যদি ব্যায়াম করে পায়খানা ক্লিয়ার করতে চান তাহলে এয়ার টিকেট শুধু আপনার জন্যই চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নিন।
হাঁটাঃ হাঁটা একটি সহজ ব্যায়াম যা অন্ত্রের নড়াচড়া বাড়াতে এবং মল ত্যাগকে সহজতর করতে সাহায্য করতে পারে। প্রতিদিন 30 মিনিট হাঁটার চেষ্টা করুন।
যোগব্যায়ামঃ কিছু যোগব্যায়ামের ভঙ্গি, যেমন স্কোয়াট, লঞ্জেস এবং টুইস্ট, কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করতে সহায়ক হতে পারে।
বর্জ্রাসনঃ এই ব্যায়াম মল ত্যাগের কাজকে সহজ করে তোলে। এই ব্যায়াম করার জন্য, প্রথমে আপনাকে পা প্রসারিত করে সোজা হয়ে বসতে হবে। তারপর, আপনার কোমড় এবং নিতম্বের পেশীগুলোকে শক্ত করতে হবে। এই প্রক্রিয়াটি কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন, তারপর শিথিল করুন। এই ব্যায়ামটি প্রতিদিন ৩-৪ বার করার চেষ্টা করুন।
পাইলেটসঃ পাইলেটস ব্যায়ামগুলো কোমর এবং পেটের পেশীগুলকে শক্তিশালী করে। শক্তিশালী পেশীগুলি পায়খানা বের করে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় চাপ তৈরি করে। পাইলেটস ব্যায়ামগুলোর মধ্যে অন্যতম কিছু ব্যায়ামের তালিকা নিচে দেওয়া হলো:
- কাঁধের রিভার্স স্কোয়াট
- কাঁধের স্কোয়াট
- কাঁধের ক্লিন
- প্লাঙ্ক
- হাঁটা
অন্যান্য টিপসঃ
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুনঃ পানিশূন্যতা কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি সাধারণ কারণ। প্রতিদিন ৮ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।
- ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খানঃ ফাইবার মলকে বৃদ্ধি এবং নরম করতে সাহায্য করে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য।
- স্ট্রেস কমিয়ে দিনঃ স্ট্রেস কোষ্ঠকাঠিন্যের একটি কারণ হতে পারে। যোগব্যায়াম, ধ্যান বা গভীর শ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে স্ট্রেস কমাতে চেষ্টা করুন।
লেখকের শেষ মতামত
যাদের পায়খানা হতে অনেক সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যা গুলো হলে খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে পেট এর অন্যান্য সমস্যা হয়ে যায়। কোন একটি স্বাভাবিক মানুষের যদি একটানা তিন দিন থেকে চার দিন পর্যন্ত যদি মলত্যাগ না হয়ে থাকে তাহলে পেট ফাঁপা এবং বায়ুতে অনেক দুর্গন্ধ জনিত সমস্যা গুলোর সম্মুখীন হতে হয়ে থাকে ৷
সাধারণত এই সমস্যা গুলো হলে অতি দ্রুত আপনাকে ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে ঔষধ সেবন করতে হবে রোগী কে। আবার এমন অনেকেই ঘরে বসে থেকে পায়খানার সমস্যা দূর করার জন্য ঔষুধ এর নাম গুলো খুঁজে থাকে। এখন আপনার যদি কখনো যদি পায়খানা জনিত সমস্যা হয় তাহলে আর দেরি না করে অতি দ্রুত সমস্যা এর সমাধান করা উচিত । কারণ এই সমস্যা থেকেই কিন্তু আপনার আরো অনেক বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হতে পারে ।
এই ছিল আজকের পায়খানা নরম করার সিরাপ এবং পায়খানা ক্লিয়ার করার ঔষধ সম্পর্কিত সকল তথ্য সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করছি পায়খানা নরম করার সিরাপ এর নাম জানতে পেরেছেন।
এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও পায়খানা নরম করার সিরাপ সম্পর্কে জানতে পারবে।