এখনো সরাসরি না গিয়ে অনলাইনে পল্লী বিদ্যুৎ আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানা যায়। নতুন ঘরবাড়ি নির্মাণ করার পরে অনেকেই বিদ্যুতের মিটার যোগারের জন্য হন্যে হয়ে উঠেন। অনেকেই বুঝতে পারেন না যে কীভাবে তারা তাদের বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ পেতে পারেন অথবা নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের মিটারের জন্য আবেদন করবেন। এই অবস্থায় অনেকেই দালালদের ফাঁদে পড়ে যান।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এই সমস্যার সমাধান করার জন্য নতুন সংযোগের জন্য অনলাইনে আবেদনের সুবিধা চালু করেছে। তাহলে চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে অনলাইনে পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের জন্য আবেদন করা যায় এবং পল্লী বিদ্যুৎ আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা কিভাবে জানা যায় তা জেনে নেই।
পল্লী বিদ্যুৎ আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা
আপনারা অনেকেই হয়তো পল্লী বিদ্যুৎ আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়ে আমাদের ওয়েবসাইটে এসেছেন। এজন্য আমরা পোষ্টের এই অংশের মাধ্যমে আপনাদের আবেদনের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাব।
প্রথমে আপনাকে “www.rebpbs.com” এই লিংকে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনার স্ক্রিনে একটি আবেদন নামক একটি অপশন দেখতে পাবেন সেখানে ক্লিক করে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানুন অপশনে কিল করতে হবে। এরপরে আপনাকে আবেদনের আইডি নম্বর ও পিন নম্বর লিখে “সাবমিট করুন” অপশনে ক্লিক করে দিতে হবে।
সাবমিট বাটনে ক্লিক করার পর কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পরে খেয়াল করবেন আপনার আবেদন সম্পর্কিত সকল যাবতীয় তথ্য দেখতে পাবেন।
সাধারনত এ তথ্য দেখেই নিশ্চিত হওয়া যায় যে অনলাইনে আবেদনটি গ্রহণযোগ্য হয়েছে কিনা। এছাড়াও আপনার মিটার কবে কোন তারিখে আসবে সে সকল তথ্যও জেনে নিতে পারবেন। তবে কোন তথ্য যদি না দেখাই তাহলে বুঝতে হবে আপনার ট্রাকিং নম্বর এ ভুল হয়েছে।
মিটারের আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা
মিটারের আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে হলে http://www.rebpbs.com এই সাইটে প্রবেশ করতে হবে। অথবা আপনি চাইলে সরাসরি গুগলে গিয়ে “মিটার আবেদন অনুসন্ধান” লিখে সার্চ করে প্রথমে থাকবে সেটিতে প্রবেশ করবেন।
এরপরে আবেদন লেখার উপরে ক্লিক করে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানুন নামক অপশনে ক্লিক করতে হবে।
এরপরে সেইখানে ক্লিক করলে ট্র্যাকিং নম্বর ও পিন নম্বর সঠিকভাবে দিয়ে সাবমিট অপশনে ক্লিক করে দিবেন। তাহলেই আপনি আপনার মিটারের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
এছাড়াও আপনার মিটার কোন কোন ধাপ অতিক্রম করেছে বা কোন স্থানে গিয়ে যদি আবেদন বাতিল হয়ে যায় সেটি কোথায় গিয়ে এবং কি কারনে বাতিল হয়েছে সে সম্পর্কেও জানতে পারবেন। নিচে একটি ছবির মাধ্যমে তা দেখানো হলো।
আপনি নিশ্চয় উপরের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন যে এই মিটারটি ৮ নম্বর ধাপ সম্পন্ন করে ৯ নম্বর ধাপে অবস্থান করছে। তার মানে আর ২টি ধাপ সম্পন্ন হয়ে গেলে মিটারটি পোয়া যাবে। যদি কোন ধাপে এসে আবেদন পত্রটি বাতিল হয়ে যায় তবে সেই ধাপে ক্রস (Х) চিহ্ন দেখা যাবে। এভাবে আপনি আপনার মিটারের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদনের শর্ত
নতুন মিটার পেতে হলে মূলত কিছু প্রাথমিক শর্ত অনুসরণ সকলকেই করতে হবে। এই শর্তগুলো স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে। তবে, কিছু সাধারণ পল্লী বিদ্যুৎ মিটার পাওয়ার শর্তাবলী নিম্নলিখিত হতে পারে:
স্থানের মালিকানা নিশ্চিত হওয়া: স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মিটার বসানোর আগে আপনার স্থানের মালিকানা নিশ্চিত করা হবে।
কানেকশনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: মিটার ইনস্টলেশনের পূর্বে আপনাকে স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহকারীর কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে, যেমনঃ কার বিল, আইডি প্রুফ, আবাসিক সনদ ইত্যাদি।
কানেকশন ফি প্রদান: অনেক সময় মিটার কানেকশন স্থানান্তর ৫০০ টাকা বাবদ ফি প্রদান করতে হতে পারে। পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করার ক্ষেত্রে মাত্র ১১৫ টাকা ফি জমা করতে হয়।
সেটিংস অ্যান্ড ইন্সপেকশন: আবেদনকারীর মিটার ইনস্টলেশন করার পরে নিরীক্ষণ প্রক্রিয়া ও মিটার সেটিংস সম্পন্ন করা হয়।
বিদ্যুৎ বিলের সংক্ষেপ করা: আপনার বিদ্যুৎ মিটারের পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল হিসেবে সংক্ষেপে প্রদান করা হয়। এসব শর্তাবলী পূরণ করার পরে, আপনি পল্লী বিদ্যুৎ মিটার পাওয়ার অধিকারী হবেন। এই প্রক্রিয়াটি প্রতিটি সরবরাহকারী সংস্থার নীতিমালার অনুসারে পরিচালিত হয়ে থাকে।
পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অনেক সময় দেখা যায় আমাদের বাসা বাড়ি গুলোতে মিটার হঠাৎ সমস্যা দেখা দেয় যেমন লাইট, ফ্যান অফ থাকার পরেও মিটার চলতে থাকে অর্থাৎ বিদ্যুৎ বিল বেশি চলে আসে। এক্ষেত্রে তখন গ্রাহকের চিন্তার শেষ থাকে না। তাই সে সময় গ্রাহক চায় তার এই মিটারটি পরিবর্তন করতে।
আর তখন গ্রাহক বুঝতে পারে না পল্লী বিদ্যুৎ আবেদন করতে কি কি লাগে অর্থাৎ কোন কোন কাগজপত্র দাখিল এর মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করা যায়। আবার যাদের নতুন ঘরবাড়ি তৈরি হয়েছে তাদের বাড়িতে নতুন সংযোগের প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়। নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদনের কাগজপত্র নিচে দেওয়া হলো-
- আবেদনকারীর এনআইডি অনুযায়ী নাম ও সক্রিয় মোবাইল নম্বর।
- NID বা জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর ও স্থায়ী ঠিকানা এবং সংযোগস্থলের ঠিকানা।
- সংযোগস্থলের জমির মালিকানা তথ্য, দাগ নং ও খতিয়ান নম্বর(প্রমাণ হিসেবে খারিজের/দলিলের স্ক্যান কপি সংযুক্ত করতে হবে)।
- গ্রাউন্ড রডের ক্যাশ মেমোর ছবি বা স্ক্যান কপি লাগবে হাউজ ওয়্যারিং নিশ্চিত প্রমান করার জন্য।
- আবেদনকারীর জমি যদি যৌথ মালিকানাধীন হয়ে থাকে তাহলে অন্য মালিকদের কাছ থেকে অনাপত্তি সনদ পত্র জমা দিতে হতে পারে।
পল্লী বিদ্যুৎ মিটার অনলাইন আবেদন করুন
সাধারনত rebpbs ওয়েবসাইট থেকে অনলাইনে পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করতে পারবেন। যারা অনলাইন থেকে মিটার আবেদন করতে চাচ্ছেন তারা rebpbs ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনলাইনে পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের আবেদন করতে পারবেন।
মনে রাখবেন, আপনি শুধুমাত্র সকাল ৮টা থেকে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। আর অন্যান্য সময় অনলাইনে আবেদন এর কার্যক্রম বন্ধ থাকে। নিচে অনলাইনে নতুন মিটারের জন্য আবেদন করার নিয়ম গুলো দেওয়া হলো-
১ম ধাপ
পল্লী বিদ্যুৎ মিটার অনলাইন আবেদন করার প্রথম ধাপ হচ্ছে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার এর যেকোন একটি ব্রাউজার ওপেন করে তাদের এই www.rebpbs.com লিংকে প্রবেশ করুন। উক্ত ঠিকানায় প্রবেশ করার পর আপনার সামনে নিচের পেইজটি ওপেন হবে।
২য় ধাপ
ওয়েবসাইটে প্রবেশের পর আপনি উক্ত পেইজে কয়েকটি অপশন দেখতে পাবেন। এখান থেকে আবেদন এর ওপর ক্লিক করলে ৭টি অপশন দেখাতে পাবেন। তারপর দ্বিতিয় অপশন আবেদন করুন লেখার উপর ক্লিক করুন। এরপর আপনার সামনে অনলাইনের আবেদন ফরম চলে আসবে।
উপরের ফরমে লাল রংয়ের (*) চিহ্নিত তথ্য গুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে। আপনার এলাকা অনুযায়ী জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও জোনাল অফিস লিস্ট থেকে সিলেক্ট করতে হবে। একক বাসা-বাড়ির জন্য সংযোগের ট্যারিফ হিসেবে এলটি-এ (আবাসিক) সিলেক্ট করুন। তাছাড়া, বহুতল ফ্ল্যাট বাড়ির ক্ষেত্রে এমটি-এ (আবাসিক) সিলেক্ট করতে হবে।
এরপর আবেদনকারীর বিবরণ দেওয়ার অংশে নাম,পিতার নাম, মাতার নাম সহ যে কলাম লাল রংয়ের [*] চিহ্ন দেওয়া আছে সে গুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এছাড়া যে সব ঘর গুলোতে ইংরেজীতে লিখতে বলা হয়েছে সেখানে ইংরেজীতে লিখতে হবে আর বাংলাতে যে গুলাতে লিখতে বলছে সে গুলাতে বাংলাতে লিখতে হবে।
যেমন জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম তারিখ, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল, TIN নাম্বার, পাসপোর্ট নাম্বার, ফোন নাম্বার। এই তথ্য গুলো অবশ্যই ইংরেজীতে লিখতে হবে।
৩য় ধাপ
প্রথমে বিদ্যুৎ অফিসের বিবরনণ, সংযোগস্থলের বিবরণ এবং আবেদনকারীর বিবরণ পূরনের পর একই ফরমের মধ্যের অংশে দেখতে পাবেন স্থায়ী ঠিকানা এবং প্রস্তাবিত সংযোগ স্থলের বিবরণ।
এখানে স্থায়ী ঠিকানা গ্রাহকের প্রদত্ত আইডি কার্ড অনুযায়ী পূরন করুন। অর্থাৎ আইডি কার্ডে যে স্থায়ী ঠিকানা দেওয়া আছে অবশ্যই সেই ঠিকানা দিতে হবে। ঠিকানা প্রদানের ক্ষেত্রে লাল রংয়ের [*] চিহ্নিত তথ্য গুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে।
প্রস্তাবিত সংযোগ স্থলের বিবরণ পূরণ করার জন্য আপনি যেই স্থানে সংযোগ নিতে চান সেখানের তথ্য দিতে হবে। তবে যেই জায়গার নামজারী/দলিলের কপি সংযুক্ত করবেন সংযোগ স্থলের ঠিকানা সে অনুযায়ী হতে হবে।
চতুর্থ ধাপ
নিকটবতী সার্ভিস পোল হইতে সংযোগস্থলের দূরত্ব মেপে নিন এতে করে আপনি জিওগ্রাফিক তথ্য সঠিক ভাবে পূরণ করতে পারবেন। কেননা আপনি যদি সঠিক মাপটা না দেন তাহলে ক্যাবল বা তার এবং খুটির কারনে সংযোগ পেতে সমস্যা হতে পারে।
একই ট্রান্সফরমারের আওতায় পার্শ্ববর্তী গ্রাহকের বই নং হিসাব নং, মিটার নম্বর এবং পোল নম্বর (ইংরেজীতে) পূরণ করতে হবে। এর পর আবেদন প্রকৃতি নির্ধারণ করুন অর্থাৎ স্থায়ী/অস্থায়ী তা নির্ধারণ করুন।
পরের অংশে, ব্যবহার করা হবে এমন লাইট, ফ্যান সহ অন্যান্য ইলেক্ট্রিক ডিভাইসের সংখ্যা নির্ধারণ করুন। যদি প্রয়োজন মনে করেন তাহলে শেষে বাড়ির/প্রতিষ্ঠানের লোকেশন এবং মন্তব্য(বাংলা) লিখুন।
৫ম ধাপ
এই পর্যায়ে ছবি, জাতীয় পরিচয় পত্র এবং খারিজ আপলোড করুন। অপলোড করার ক্ষেত্রে ফরমে উল্লেখিত সাইজে আবেদনের আগেই আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে একটি ফোল্ডারে সংরক্ষণ করুন। তারপর সহজেই আপলোড করতে পারবেন।
এরপরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বেশ কয়েকটি শর্তবলী আছে, সেগুলো আপনি একমত পোষন করছেন এই মর্মে পাশে রাখা খালি বক্সে টিক চিহ্ন দিন।
সবশেষে একটি ক্যাপচা কোড পূরণ করুন [ইংরেজীতে] এবং সংরক্ষণ করুন অপসনে ক্লিক করতে হবে। এ ভাবে আপনার আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে।
আবেদনপত্র প্রিন্ট
আবেদন ফরম পূরন করার যাবতীয় কাজ শেষে যখন আপনি নিচের সংরক্ষণ অপসনে ক্লিক করবেন তখন আপনাকে একটি ট্যাকিং নাম্বার ও পিন নাম্বার দিবে। সেটা সাথে সাথে নোট ডাউন করে বা লিখে রাখুন। কারণ পরবর্তী সময়ে আপনার আবেদনের অবস্থা জানতে বা সংশোধন সহ যে কোন তথ্য জানার জন্য এই ট্যাকিং নাম্বার ও পিন নাম্বার আপনার প্রয়োজন হবে।
এরপরে অনলাইনেই আবেদন ফরম ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিন।
হাউজ ওয়্যারিং নিশ্চিত করুন
এরপরের ধাপে আপনাকে একতা বিষয় নিশ্চিত হতে হবে সেটা হল হাউজ ওয়্যারিং সম্পন্ন হয়েছে কি না। আর সাধারনত এই হাউজ ওয়্যারিং গ্রাউন্ড রড ক্রয়ের মেমো/রশিদ, ট্যাকিং নাম্বার ও পিন নাম্বার দিয়ে নিশ্চিত করতে প্রয়োজন হবে।
এরপর ওয়েবসাইটের হোম পেইজের মেনুবার অপশন থেকে হাউজ ওয়্যারিং নিশ্চিত করুন এ লিংকে ক্লিক করলেই আপনার সামনে নিচের ইন্টারফেইজটি ওপেন হবে। ফরমে প্রথমে ট্যাকিং নাম্বারও পরে পিন নাম্বার বসিয়ে সাবমিট বাটনে অপশনে ক্লিক করতে হবে।
ট্যাকিং নাম্বার ও তারপরে পিন নাম্বার বসানোর পরে সাবমিট করলে আপনার কাছে হাউজ ওয়্যারিং নিশ্চিতের তথ্য চাইবে। অর্থাৎ হাউজ ওয়্যারিং নিশ্চিত হয়েছে সিলেক্ট করে গ্রাউন্ড রড ক্রয়ের মেমো/রশিদ নাম্বারটি ইংরেজীতে লিখতে হবে।
এরপর গ্রাউন্ড রড ক্রয়ের মেমো/রশিদটি আপলোড করতে হবে। তারপর বাসার ঠিকানা লিখে ক্যাপচা কোড পূরণ করে সমর্পন করুন অপসনে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার একটু পর আপনার হাউজ ওয়্যারিং নিশ্চিত হয়েছে এরকম একটি ম্যাসেজ দেখা যাবে।
আবেদনের সংযোগ ফি পরিশোধ করুন
ফি পরিশোধ দুই ভাবে প্রদান করা যায়। যথা-
আপনি অনলাইনে ফি পরিশোধ করুন অপশনে গিয়ে আপনার ট্যাকিং নাম্বার ও পিন নাম্বার দিয়ে রকেটের মাধ্যমে ফি পরিশোধ করতে পারেন।
পল্লী বিদ্যুৎ মিটার পরিবর্তনের জন্য আবেদন
সাধারণত ক্ষেত্রে মিটার পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু আপনার মিটারে যখন বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিবে তখন আপনাকে অবশ্যই মিটার পরিবর্তন করতে হবে। নষ্ট মিটার পরিবর্তন করার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কাছে কিভাবে আবেদন করবেন তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
বরাবর
পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ
পল্লী বিদ্যুতের ঠিকানা এখানে লিখুন
বিষয়ঃ মিটার পরিবর্তনের জন্য আবেদন
মিটার নংঃ ……..
কনজিউমার নংঃ ……..
জনাব,
সবিনয় নিবেদন এই যে আমি অত্যান্ত দুঃখ প্রকাশ করে জানাচ্ছি যে আমার বাড়ির ব্যবহারকৃত মিটারটি প্রায় ৩ মাসের বেশি সময় ঠিকভাবে কাজ করিতেছে না। এছাড়াও মিটার থেকে রিডিং নেয়া সম্ভব হয় না। যার ফলে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাগণ ধারণা করে রিডিং গ্রহণ করছে। যেটা একদমই ঠিক হচ্ছে না। এছাড়াও মিটারের সাথে আরো বিভিন্ন ধরণের সমস্যা রয়েছে যে কারণে আমার মনে হয় এই মিটারটি এখন পরিবর্তন করা খুবই জরুরি।।
অতএব, মহোদয়ের কাছে আকুল আবেদন আমার মিটার পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনায় করে যত দ্রুত সম্ভব পরিবর্তন করে আরেকটি নতুন মিটার সংযোগ করে দিলে খুব ভালো হবে। তাই আমি আশা করছি আমার আবেদনটি আপনারা দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন।
বিনীত নিবেদন
আপনার নাম লিখুন
মোবাইল নাম্বারঃ
তারিখঃ
অফলাইনে নতুন মিটারের জন্য আবেদন করে জমা দিয়ে আসার মত অবস্থা না থাকলে আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে ফরম পূরণ করে “পল্লী বিদ্যুৎ মিটার পরিবর্তনের জন্য আবেদন” করতে পারবেন। এক্ষেত্রে পল্লী বিদ্যুতের অফিসিয়াল www.rebpbs.com এই ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে।
এরপর উপরের মেন্যু অপশন থেকে নতুর মিটার বা পুরাতন মিটার পরিবর্তন করা নামক একটি অপশন রয়েছে সেই অপশনে ক্লিক করতে হবে। উক্ত অপশনে প্রবেশ করার পরে ‘মিটার পরিবর্তন নামক’ একটি পেজে দেখতে পাবেন।
সেখানে মিটার পরিবর্তন করার জন্য একটি আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। যেখানে
- আপনার নাম,
- মোবাইল নাম্বার,
- এনআইবডি নাম্বার,
- কনজিউমার নাম্বার এবং
- মিটার নাম্বার দিতে হবে।
তারপরে আপনার মিটারে কি ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে কিংবা আপনি কি কারণে মিটার পরিবর্তন করবেন সেটার বর্ণানা দিয়ে নিচের সাবমিট অপশনে ক্লিক করলেই আপনার আবেদনটি সাবমিট হয়ে যাবে। তারপরে আপনি যেই নাম্বার ফর্মে দিয়েছেন সেই নাম্বারে ঠিক কনফারমেশন এসএমএস চলে আসবে।
মিটার পেতে দেরি হলে করণীয়
অনেকেরই নতুন মিটারের জন্য আবেদন করার পরে মিটারের প্রসেসিং হতে দেরি হয়। তাই তাদের জন্য বেশ কিছু কার্যকরী করণীয় রয়েছে। তার সাহায্যে জানা যাবে যে কি কারণে মিটার পেতে দেরি হচ্ছে। আসুন তাহলে পোষ্টের এই অংশে মিটার পেতে দেরি হলে করণীয় কি সেই সম্পর্কে জেনে নিই।
- প্রথমত মিটারের জন্য আবেদন করার পরে আপনাকে উলিক্ষিত নিয়মে বর্তমান বা সর্বশেষ অবস্থা চেক-আউট করে নিতে হবে।
- কিছু কিছু সময়ে দেখা যায় মিটার আবেদন সঠিকভাবে কার্যক্রম শেষ হওয়ার সত্বেও কিছু সমস্যার কারণে বিদ্যৎ অফিসে সেই মিটারের জন্য পরিশোধকৃত আবেদনের ফি গ্রহণ হয় না। তাই আপনাকে এই বিষয়টিও ভালোভাবে চেক আউট করে নিতে হবে।
- এ ধরণের সমস্যার দেখা দিলে সরাসরি বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করতে হবে কারণ অনেক সময়ে বিদ্যুৎ অফিসে সঠিক সময়ে যোগাযোগ না করার ফলেও নতুন মিটার আসতে দেরি হয়। সুতরাং এই বিষয়টিও আপনাকে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
- আপনার নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্রটির অনলাইন কপি প্রিন্ট করে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে বিষয়টা তাদের কাছে ভালোমত অবগত করতে হবে। তাহলেই আপনার নতুন মিটার যলদি পেয়ে যাবেন।
তাই বলা যায় কেউ যদি নতুন মিটার আবেদন পরিপূর্ণভাবে করার পরে মিটার পেতে খুব বেশি দেরি হয় তাহলে উপরের উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করতে হবে। আশা করছি এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
বিদ্যুৎ মিটারের ডিসপ্লে ফাঁকা থাকে কেন?
বিদ্যুৎ মিটারের ডিসপ্লে ফাঁকা থাকাটা খুবই সাধারন একটা সমস্যা। কারণ, বিভিন্ন সময় কিছু কিছু মিটারের ডিসপ্লের দিকে তাকালে দেখা যায় সেটি একবারে ফাঁকা হয়ে গেছে। যদিও সেই মিটারের ডিসপ্লে কিন্তু ফাঁকা থাকেনা। কিছু কারণ রয়েছে, যার জন্য আমরা মিটারের ডিসপ্লে ফাঁকা দেখি।
যেমন, এমনটা হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে বলা যায় মিটার দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হলে সেই মিটারের যদি শক্তি হারিয়ে যায় তাহলে সেই মিটার আগের মতো কাজ করতে সক্ষম হবে না। আবার কিছু কিছু সময় মিটার স্লিপিং মোডে চলে যায়। এর কারণে মিটার গুলোর মধ্যে ডিসপ্লে ফাঁকা দেখা যায়। তবে অনেক ক্ষেত্রে মিটার এর সেটিংস ঠিকভাবে অপটিমাইজ না হলেও এমনটা হতে পারে।
এজন্যমিটারের এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। তারপর তারা ভালোমত যাচাই বাছাই করে মিটারের মূল সমস্যাটি শনাক্ত করে সমাধান করে দিবেন।
বিদ্যুৎ মিটার নষ্ট হলে করনীয় কি
বিদ্যুৎ মিটার নষ্ট হয়ে গেলে আপনাকে নিকটস্থ বিদ্যুৎ অফিসে বিস্তারিত জানাতে হবে। এরপরে তারা আপনাকে বিদ্যুৎ মিটার নষ্টের জন্য একটি আবেদন করতে বলবেন। এরপর আপনি একটি আবেদন লিখে সেখানে জমা দিলে তারা আপনার বিদ্যুৎ মিটার খুলে নিয়ে যাবে।
এরপর আপনি আপনার বিদ্যুৎ মিটার আগামী ৭ দিনের মধ্যে পেয়ে যাবেন। সুতরাং আপনার বিদ্যুৎ মিটার নষ্ট হয়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব হয় আবেদন করে নিবেন। আপনি যতদ্রুত আবেদন করবেন তত তাড়াতাড়ি নতুন বিদ্যুৎ মিটার পেয়ে যাবেন।
পল্লী বিদ্যুৎ কি সরকারি না বেসরকারি
গ্রাম বাংলার বিদ্যুৎ সরবরাহের বিষয় আসলেই মনে পড়ে পল্লী বিদ্যুৎ এর কথা। অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে এই প্রতিষ্ঠানটি কি সরকারি নাকি বেসরকারি। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (PBS) বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। যা ১৯৭২ সালে এই সমিতি এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
পল্লী বিদ্যুতের কাজ হচ্ছে গ্রামীণ জনগণের নিকট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা। দেশের শতকরা ৯৮% গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে এই প্রতিষ্ঠানটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমান তথ্য অনুযায়ী পল্লী বিদ্যুতের মোট ৮০ টি সমিতি ও ৪ কোটিরও অধিক গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।
লেখকের শেষ মতামত
আমাদের অনেক সময় বাড়ি/অফিসের জন্য নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের প্রয়োজন পড়ে। এর জন্য সর্বপ্রথম আমাদের মিটারের জন্য একটি আবেদন করতে হয়। পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের আবেদন খরচ অনেক কম। কিন্তু কিভাবে আবেদন করতে হয় সেটি না জানার কারণে আমরা অনেক সময় দালালের সাহায্য গ্রহণ করি। এতে আমাদের অনেক টাকা ব্যয় হয়।
তাই আপনি যদি উপরিউক্ত নিয়মগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারেন তবে আপনাকে কোন দালাল ধরার প্রয়োজন পড়বে না। আপনি নিজেই খুব সহজে নতুন মিটারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সেই সাথে আপনার আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কেও জানতে পারবেন। তাই দালাল ধরে নয় নিজে নিজেই আবেদন করার চেষ্টা করুন।
এই ছিল আজকের পল্লী বিদ্যুৎ আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কিত সকল তথ্য সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করছি পল্লী বিদ্যুৎ আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানতে পেরেছেন।
এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও পল্লী বিদ্যুৎ আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবে।