টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড – টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন

অনেক প্রয়োজনে আমাদের অনেকেরই ই-টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না কিভাবে সঠিক নিয়মে অনলাইনে টিন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে হয়। আবার অনেকেরই ই-টিন সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হলেও জানে না টিন সার্টিফিকেট কি বা টিন সার্টিফিকেট কি কি কাজে লাগে।

টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড

আজকের এই আর্টিকেলে স্টেপ বাই স্টেপ কিভাবে সঠিক নিয়মে ই-টিন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করবেন এবং টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার নিয়ম দেখানো হবে। টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন ও ডাউনলোড এর সঠিক নিয়ম জানতে চান? ।

এখানে আলোচনা করা হয়েছে টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন এবং ডাউনলোড করার সবথেকে সঠিক এবং সহজ উপায়। চলুন এসব সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

টিন সার্টিফিকেট কি

আমরা অনেকেই আছি যারা টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন বা ডাউনলোড করতে চাই। কিন্তু টিন সার্টিফিকেট টা আসলে কি এটির সঠিক সংজ্ঞা আমরা জানিনা। আমাদের সবার আগে টিন সার্টিফিকেট কি সেটি সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

আমাদের টিন সার্টিফিকেট তখনই প্রয়োজন হবে যখন আমাদের বিশেষ কোন ব্যবসা বা সরকারি অথবা বেসরকারি সুবিধা নিতে যাব। কর দেওয়া লাগলে শুধু টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে এমনটি নয়, যেকোন অবস্থাতেই আমাদের টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন। আপনার আয় যখন নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আসবে তখনই আপনাকে আয়কর দিতে হবে।

অতি সংক্ষিপ্ত আকারে বলতে গেলে টিন সার্টিফিকেট হচ্ছে মূলত আয়কর রিটার্ন দাখিল করার একটি নিবন্ধনপত্র। আমরা যারা সরকারি চাকরিজীবী রয়েছি তাদের ক্ষেত্রে ইনকামের একটি নির্দিষ্ট এমাউন্ট সরকারকে দিতে হয়। আর এই টিন সার্টিফিকেট এর মাধ্যমে নিজের আয় শুদ্ধ হবে।

টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড

ইন্টারনেটের সহায়তায় এখনকার সময়ে টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার প্রক্রিয়াটি অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। আমরা চাইলে এখন ঘরে বসে মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে অনলাইন থেকে টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করা সম্ভব। 

ধাপ-১ঃ ওয়েবসাইটে প্রবেশ

প্রথমে আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটার ডিভাইস থেকে এই লিংকে ক্লিক করতে হবে। এই লিংকে ক্লিক করার পরে অফিশিয়াল National Board of Revenue (NBR) ওয়েবসাইটটি চলে আসবে।

টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড

ধাপ-২ঃ লগইন করুন

এরপরে লগইন অপশন দেখতে পাবেন সেখানে ক্লিক করবেন। তারপরে সেখানে “User ID & Password” দিতে হবে। যদি ই-টিন রেজিস্ট্রেশন করা না থাকে তাহলে আমরা নিচের টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন করার পুরো প্রক্রিয়াটি ছবিসহ উল্লেখ করে দিয়েছি। আপনি চাইলে একটু স্ক্রল করে সেই প্রক্রিয়াটি দেখে রেজিস্ট্রেশন করে সেটি ডাউনলোড প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেন।  

টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন

ধাপ-৩ঃ ডাউনলোড করুন – TIN Certificate Download

এরপরে বাম পাশের অপশন থেকে “View TIN Certificate” সিলেক্ট করতে হবে।

টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড
টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড

তারপর সেখানে মোট ৩টি অপশন দেখতে পাবেন

  • Print Certificate, 
  • Save Certificate, 
  • Email Certificate 

মূলত এই উপায়ে আপনার রেজিস্ট্রেশন করা টিন সার্টিফিকেট খুব সহজেই ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। আমরা আপনার সুবিধার কথা ভেবে এই অংশে টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে ছবিসহ উল্লেখ করে দিয়েছি যাতে আপনাদের বুঝতে সমস্যা না হয়।

টিন নাম্বার দিয়ে টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড

এবার একটা সমস্যা নিয়ে কথা বলি। আপনাদের মধ্যে অনেকেই থাকতে পারেন যারা অনেক আগে টিন সার্টিফিকেট করেছিলেন কিন্তু হারিয়ে ফেলেছেন। টিন রেজিস্ট্রেশনের সময় দেওয়া আইডি পাসওয়ার্ড কিছুই মনে নেই কিন্তু জরুরি ভিত্তিতে টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন।

টিন নাম্বার দিয়েও টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করা যাবে। আপনার যদি পূর্বেই কোন টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন করা থাকে তাহলে সেই টিন সার্টিফিকেট নাম্বারটি দিয়ে অন্য একটি পদ্ধতিতে আপনি টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ-  সরকারি পল্লী চিকিৎসক কোর্স - ভেটেরিনারি পল্লী চিকিৎসক কোর্স

আপনি কিভাবে আপনার টিন নাম্বার দিয়ে টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করবেন সেই প্রক্রিয়াটি নিচে ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলঃ 

  • প্রথমেই ভিজিট করুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বাংলাদেশ
  • এখানে ভিজিট করার পর উপরের মেনুবার থেকে ‘Login’ বাটনে প্রেস করুন।
  • লগইন অপশনে ক্লিক করার পরে আপনাকে সেখানে আপনার ‘User ID’ এবং ‘Password’ দিয়ে লগইন করতে হবে। 
  • লগইন বাটনে প্রেস করার পর এখানে আপনার ইউজারনেম হিসেবে আপনার মোবাইল নাম্বারটি প্রদান করুন এবং আপনার পাসওয়ার্ড প্রদান করুন। আপনি যদি পাসওয়ার্ড না পান সে ক্ষেত্রে আপনার ইমেইল থেকে পাসওয়ার্ড পাবেন।
  • লগইন সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পরে সেখানে বেশ কয়েকটি অপশন দেখতে পাবেন। 
  • সেখান থেকে ‘General Information’ সেকশনে প্রবেশ করতে হবে।
  • তারপরে এখানে আপনার টিন নাম্বার টি প্রদান করে দিতে হবে।
  • তথ্যগুলো দেওয়া সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনাকে উপরে দেওয়া ‘Check’ বাটনে ক্লিক করতে হবে। 
  • চেক বাটনে ক্লিক করে দেওয়ার পরে দেখবেন সাথে সাথে আপনার টিন সার্টিফিকেটের তথ্যগুলো চলে এসেছে। 

এখান থেকে আপনি টিন সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য গুলো জানতে পারবেন এবং আপনি এটিও জানতে পারবেন যে আপনার টিন সার্টিফিকেটে কোন প্রকার ভুল আছে কিনা। এখান থেকে চাইলে আপনি এই টিন সার্টিফিকেটটি প্রিন্ট করেও নিতে পারবেন।

টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোডের সময় প্রয়োজনীয় তথ্য

আপনার টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার সময় বেশ কিছু জরুরি তথ্য দরকার পড়বে যেমন:

  • জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর
  • মোবাইল নম্বর ( রেজিস্ট্রেশনের সময় যেই নম্বর ব্যবহার করেছিলেন)
  • আপনার আয় সম্পর্কিত তথ্য

প্রয়োজনীয় টিপস

  • ইন্টারনেট সংযোগ সচল ও ভালো রাখা: ডাউনলোড প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে কোনো সমস্যা না হয় তাই টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার সময় ইন্টারনেট সংযোগ ভালো রাখতে হবে।
  • অ্যাকুরেট তথ্য প্রদান করা: আপনার নিজের প্রোফাইলে অ্যাকুরেট তথ্য দিন। কেননা প্রোফাইলে ভুল ভাল তথ্য দেয়া থাকলে ডাউনলোড হতে ব্যর্থ হতে পারে।
  • পিডিএফ ফরম্যাটে রাখা: টিন সার্টিফিকেটটি ডাউনলোড করে নেওয়ার পরে পিডিএফ ফরম্যাটে সংরক্ষণ করুন যাতে ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে পারেন।

টিন সার্টিফিকেট অনলাইনে ডাউনলোড করার সুবিধা

অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার সুবিধাগুলি নিম্নে তুলে ধরা হলঃ 

  • সহজ ও দ্রুত প্রক্রিয়া: ঘরে বসে অনলাইনে আবেদন করে টিন সার্টিফিকেট পাওয়া যায়।
  • সময় সাশ্রয়: আগে আমরা অফিসে গিয়ে এই কাজ করাতে অনেক বেশি সময় লাগত, কিন্তু আমরা এখন খুব সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজে ডাউনলোড করতে পারি। 
  • স্বচ্ছতা: এখন ডিজিটাল প্রক্রিয়া হওয়ায় ফলে কর প্রদান করে এবং সার্টিফিকেট নিতে কোন ধরণের ধোঁয়াশা থাকে না।

অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

আপনি ঘরে বসে অনলাইনে কিভাবে টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন সেই বিষয়ে ধাপে ধাপে জেনে নিব। আমাদের দেওয়া নিম্নোক্ত নিয়ম গুলো ফলো করলে নিযে থেকেই অনলেইনে আপনার টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন এবং সেটি আবার ডাউনলোডও করে নিতে পারবেন। 

প্রথম ধাপঃ একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন

টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন এর প্রথম ধাপে আপনাকে টিন সার্টিফিকেট এর একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এর জন্য প্রথমেই ভিজিট করুন ই-টিন রেজিস্ট্রেশন ওয়েবসাইটে।

এখানে প্রবেশ করার পর দেখবেন মেনুবারে বেশ কিছু অপশন দেখাবে। এসব অপশন হতে রেজিস্টার নামে যে অপশনটি রয়েছে এই অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।

টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড

এই অপশনে ক্লিক করলে একটি নতুন পেজ আপনার সামনে আসবে। যেটি মূলত একটি সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন ফরম। এই ফরমে আপনাকে লিগ্যাল ও সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ-  অনলাইনে জিডি করার নিয়ম - অনলাইন জিডি ফরম

টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন

  • প্রথমত আপনি কোন নামে আপনার একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে চান সেটা ইউজার নেইম হিসেবে লিখতে হবে। আর এখানে আপনাকে অন্তত ৮ ক্যারেক্টারের একটি নাম দিতে হবে। 
  • ইউজারনেম দেওয়ার পর আপনাকে নিচে এর পাসওয়ার্ড দিতে হবে। আপনাকে কমপক্ষে ৪ ক্যারেক্টারের একটি পাসওয়ার্ড এখানে লিখতে হবে। তবে পাসওয়ার্ডটি শক্তিশালী করে দিলে ভালো হয়। সেটি আপনার জন্য একটা আলাদা নিরাপত্তা বহন করবে।
  • আপনাকে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড টি অবশ্যই মনে রাখতে হবে। এটি কোথাও লিখে রাখুন।
  • এরপর দেখবেন Retype Password বিদ্যমান রয়েছে। এখানে আপনি প্রথমে যে পাসওয়ার্ডটি লিখেছেন সেই পাসওয়ার্ডটি পুনরায় এখানে লিখে দিতে হবে।
  • তারপরে Security Question নামক অপশন থেকে পাসওয়ার্ড মনে না থাকলে উত্তর দিয়ে পাসওয়ার্ড রিকভার করতে পারবেন।
  • এজন্য আপনার পছন্দমত যেকোনো একটি প্রশ্ন এখানে লিখুন এবং আপনার পছন্দমত একটি উত্তর নিচের বক্সে বসিয়ে দিন। তাহলে যখন আপনি পাসওয়ার্ড ভুলে যাবেন তাহলে এই কোশ্চেনের উত্তর দেওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার পাসওয়ার্ড রিকভার করতে পারবেন খুব সহজেই।
  • এরপর কান্ট্রি বাংলাদেশ দেওয়া থাকবে। বাংলাদেশ দেওয়া না থাকলে এটি বাংলাদেশ সিলেক্ট করে দিতে হবে।
  • এরপর নিচে দেখবেন মোবাইল নাম্বারের অপশন রয়েছে। এখানে আপনার একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিতে হবে।
  • এরপর দেখবেন ইমেইল এড্রেস এর অপশন রয়েছে। আপনার ইমেইল এড্রেস এখানে বসিয়ে দিন। না দিলেও সমস্যা নেই কারণ এটি বাধ্যতামূলক নয়।
  • এরপর সর্বশেষ একটি ক্যাপচা দেওয়া থাকবে। এই ক্যাপচাটি সঠিকভাবে পূরণ করে নিচের বক্সে বসে দিতে হবে।
  • তারপরে নিচে Register নামক একটি অপশন আছে সেখানে ক্লিক করে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে। 
  • এর পরের ধাপে আপনাকে এক্টিভেশন কোড ভেরিফিকেশন করতে হবে অর্থাৎ আপনি যে মোবাইল নম্বর দিয়েছেন সেই মোবাইল নম্বরে একটি কোড চলে যাবে। এই কোডটি আপনাকে পরের পেজে বসিয়ে দিতে হবে।
  • কোড সঠিকভাবে প্রদান করে Activate বাটনে ক্লিক করলে একাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে।

দ্বিতীয় ধাপঃ আবেদন ফরম পূরণ করা

  • আপনার যখন টিন সার্টিফিকেট অ্যাকাউন্ট তৈরি হবে তখন আপনার ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার একাউন্টে লগইন করুন।
  • লগইন করার পর আপনি বেশ কিছু অপশন পাবেন। এখান থেকে TIN Application অপশনে ক্লিক করতে হবে।

অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

এটিতে ক্লিক করার পর আপনাকে পরের পেজে নিয়ে যাওয়া হবে।

অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

এখানে প্রথমে দেখবেন Taxpayer’s Status অপশন রয়েছে। আপনি যদি বাংলাদেশী নাগরিক হোন তাহলে আপনাকে এখানে Individual Bangladeshi সিলেক্ট করতে হবে।

  • আপনি বাংলাদেশি না হলে তখন আপনার ক্ষেত্র অনুযায়ী অপশন বেছে নিতে হবে।
  • আপনার যদি NID থাকে তাহলে Having NID অপশন বাছাই করে আপনার এনআইডি নাম্বার দিতে হবে।
  • আপনার যদি এনআইডি না থাকে অথবা আপনি যদি ১৮ বছরের নিচে হোন তাহলে আপনাকে Minor/ Dependent অপশন বাছাই করতে হবে।
  • এরপর নিচে আপনাকে আপনার আয়ের উৎস নির্বাচন করতে হবে। আপনি যদি চাকরিজীবী হোন তাহলে আপনাকে Service অপশন বাছাই করতে হবে। অন্য কোন পেশাজীবী হয়ে থাকলে বা ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবী, চার্টার্ড ইত্যাদি হলে Profession অপশন সিলেক্ট করতে হবে
  • আপনার যদি কোন ব্যবসা থেকে থাকে তাহলে আপনাকে এখানে Business নির্বাচন করতে হবে
  • এরপর Go to Next বাটনে ক্লিক করতে হবে
  • পরের ধাপে আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ও ঠিকানা বসিয়ে দিতে হবে। এই পেইজে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ও ঠিকানা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে। এই তথ্যগুলো সঠিক ভাবে ইংরেজিতে পূরণ করে দিতে হবে।

অনলাইনে টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

  • একটা বিষয়ে অবশ্যই খ্যেয়াল রাখা জরুরি সেটা হচ্ছে এই পেজে আপনাকে সমস্ত তথ্য ইংরেজিতে দিতে হবে। আর সমস্ত তথ্য নিজের এনআইডি অনুযায়ী সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে।
  • এরপর নিচের অংশে আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা  একই হলে শুধু “Same as Address” এ টিক দিয়ে Go to Next বাটনে ক্লিক করুন।
  • এরপরে নিচে দেখবেন ‘I hereby affirm that all information given above is correct and complete and I have not taken any TIN‘ এরকম একটি লেখা থাকবে। এই লেখার পাশে টিক চিহ্ন দিতে হবে।
  • এরপর Submit Application বাটনে ক্লিক করে অনলাইনে ই-টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হবে।
  • এই বাটনে ক্লিক করলে আপনার টিন সার্টিফিকেট তৈরি হয়ে যাবে এবং পরের পেজে আপনার সমস্ত তথ্য দেখা যাবে।
আরো পড়ুনঃ-  পাসপোর্ট করার নিয়ম - পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে

টিন সার্টিফিকেট পেতে কতদিন সময় লাগে?

টিন সার্টিফিকেট (Taxpayer Identification Number) পেতে সাধারণত ১ থেকে ৩ দিন সময় লাগে। তবে এটি নির্ভর করে আবেদন প্রক্রিয়া এবং সংশ্লিষ্ট কর অফিসের কাজের গতির উপর।

অনলাইনে আবেদন করলে প্রক্রিয়াটি তুলনামূলক দ্রুত হয় এবং আবেদনকারীরা দ্রুত সার্টিফিকেট পেতে পারেন। সঠিক তথ্য ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সরবরাহ করলে সময় আরও কম লাগে।

টিন সার্টিফিকেট কেন দরকার

টিন সার্টিফিকেট কেন প্রয়োজন এটি অনেকেই জানতে চান। টিন সার্টিফিকেট আমাদেরকে এই জন্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হয় কারণ এটি আমাদের অনেক সময় প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায়।

টিন সার্টিফিকেট কেন দরকার বা এর প্রয়োজনীয়তা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

  • সরকারকে আয়কর প্রদান করার জন্য।
  • ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স করার  জন্য।
  • ক্রেডিট কার্ড করার জন্য।
  • ব্যাংক আকাউন্টের লেনদেন এর করার ক্ষেত্রে। 
  • সরকারি চাকরির আবেদন করার ক্ষেত্রে ।
  • নিজের কোম্পানির নিবন্ধন করার জন্য।
  • ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন করার জন্য।
  • বিদেশ থেকে কোন পণ্য আমদানি অথবা রপ্তানি করার ক্ষেত্রে এবং 
  • বিদেশে টাকা লেনদেন করার ক্ষেত্রে।

উপরোক্ত ক্ষেত্রে যদি আপনার আয়ের পরিমাণ করসীমার বাহিরে থাকে তবুও আপনাকে টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। তা না হলে আপনার এসব আয় কালো টাকা হিসেবে গণ্য করা হবে এতে করে বাংলাদেশ আইন অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

টিন সার্টিফিকেটের ব্যবহার

টিন সার্টিফিকেটের কিছু সাধারণ ব্যবহার হলো:

  • আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া
  • ব্যাঙ্ক ঋণ আবেদন
  • টেন্ডার আবেদন
  • ব্যবসায়িক রেজিস্ট্রেশন
  • বিদেশে টাকা পাঠানো বা গ্রহণ

কত টাকা হলে আয়কর দেওয়া লাগবে

এটি বেশিরভাগ মানুষেরই প্রশ্ন যে আমার আয় কত হলে আমাকে আয়কর দিতে হবে। চলুন এ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু আলোচনা জেনে নেওয়া যাক।

আপনার নিজের যদি টিন সার্টিফিকেট থেকে থাকে তাহলে আয় কর দেয়াটা বাধ্যতামূলক নয়। তবে এখানে একটি বিষয় বোঝার রয়েছে সেটা হল কর সীমার মধ্যে আপনার ইনকাম চলে আসবে তখনই আপনাকে আয়কর দিতে হবে।

টিন সার্টিফিকেট থাকলে আপনার শুধু শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে যদি আপনার আয় করসীমার মধ্যে না থাকে।

বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে কোন পুরুষের বাৎসরিক আয় তিন লাখ এবং যে কোন বয়সের নারী এবং ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে সব নাগরিকের বাৎসরিক আয় সাড়ে তিন লাখ টাকা এবং প্রতিবন্ধীদের বাৎসরিক আয় সাড়ে চার লাখ টাকার উপরে হলে সেই সকল ব্যক্তিদেরকে আয়কর দেওয়া বাধ্যতামূলক।

যদি উপরোক্ত ব্যক্তিদের আয় উল্লেখিত সীমার মধ্যে হয়ে থাকে তাহলে তাদেরকে অবশ্যই কর দিতে হবে। যদি এর নিচে হয়ে থাকে তাহলে তাদেরকে আয়কর দিতে হবে না। শুধুমাত্র টিন সার্টিফিকেট থাকলে তাদেরকে শূন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে।ন

লেখকের শেষ মতামত

এই ছিল আজকের টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড এবং টিন সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কিত সকল তথ্য সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করি টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার নিয়ম জানতে পেরেছেন।

এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবে।

Leave a Comment