বৃদ্ধাশ্রম কোথায় কোথায় আছে ঢাকায় – বৃদ্ধাশ্রমের খরচ

বৃদ্ধাশ্রম কোথায় কোথায় আছে ঢাকায় তার আগে চলুন আপনাদের সাথে কিছু কথা শেয়ার করি। বৃদ্ধাশ্রমের কথা শুনলেই বুকের মাঝে কেমন জানি করে এমনকি চোখের কোনে পানি চলে আসে। কারণ অনের বাবা-মা আছেন যারা না খেয়ে ছেলেমেয়েদের মানুষের মতো মানুষ করে বড় অফিসার বা চাকরিজীবী তৈরি করে। 

বৃদ্ধাশ্রম কোথায় কোথায় আছে ঢাকায়

কিন্তু সেই ছেলেরাই দেখা যায় বাবা-মার বয়স হয়ে গেলে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে। যাতে তারা তাকে বিরক্ত না করতে পারে। অথচ সে কিন্তু বড় একটা ফ্লাট নিয়ে বিন্দাস লাইফ পার করছে কিন্তু তার বাবা-মাকে রেখে আসছে বৃদ্ধাশ্রমে।

উপস্থাপনা

অগাধ সম্ভ্রম আমার ঠিকানা এখন বৃদ্ধাশ্রম। ”সারা জীবন সন্তানের ভালো-মন্দর কথা চিন্তা করতে করতে কখন যে বয়সের শেষ পর্যায়ে চলে আসে তা যেন সকল বাবা মার অজানা। কিন্তু বাবা মার বয়স হয়েছে এটা জানায় সন্তানেরা। সন্তানদের মানুষ করে বাবা-মা যখন অবসর নেয় তখন তারা সন্তানের বোঝা। 

তাদের জায়গা ঘরে নয় তাদের জায়গা হয় বৃদ্ধাশ্রমে এমন ঘটনা হরহামেশাই আমাদের চোখে পড়ে।প্রবীণ বয়সে নিজেদের শেষ সময়টুকু বৃদ্ধাশ্রমে কাটাতে হয় অনেক মা বাবাকে। বাংলাদেশে কিছুদিন আগেও বৃদ্ধাশ্রম সম্পর্কে মানুষের এতটা আগ্রহ ছিল না। কিন্তু সমাজ সভ্যতা পরিবর্তনের সাথে সাথে বৃদ্ধাশ্রমও বেড়েছেএবং সেখানে আশ্রয়কৃত প্রবীন্দের সংখ্যাও বেড়েছে। 

অনেক মহৎ ব্যক্তি উদ্যোগে প্রবীনদের থাকার জন্য বিভিন্ন জেলায় বাংলাদেশে বিনা খরচে বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।সরকার নিবন্ধিত বৃদ্ধাশ্রম এর সংখ্যা কম থাকলেও বেসরকারি উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন জায়গায়  অনেক আশ্রম গড়ে উঠেছে।

বৃদ্ধাশ্রম কি

একটি নার্সিং হোম বৃদ্ধদের জন্য একটি আশ্রয়কে বোঝায়। যেখানে বার্ধক্য নারী-পুরুষের বাসস্থান। বৃদ্ধাশ্রমকে ইংরেজিতে বলা হয় বৃদ্ধাশ্রম। বৃদ্ধাশ্রমে স্বাস্থ্য ও অসুস্থতা সংক্রান্ত সব ধরনের সেবা দেওয়া হয়। এখানে বসবাসরত সকল প্রবীণদের বৃদ্ধাশ্রমের মালিকদের সকল দায়িত্ব।

বৃদ্ধাশ্রমের খরচ

বাংলাদেশের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছয়টি বৃদ্ধাশ্রমের খরচ সরকার বহন করে। এছাড়াও, ব্যক্তিগত উদ্যোগে যেসব বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে সেগুলো বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার সহায়তায় পরিচালিত হয়। এছাড়াও কেউ কেউ একটি মহৎ উদ্দেশ্যে বৃদ্ধাশ্রমে দান করে বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনায় সহায়তা করে। 

বৃদ্ধাশ্রমে কর্মরত কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয় বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষ। যাইহোক, অনেক লোক আছে যারা স্বেচ্ছায় বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয়প্রাপ্ত অসহায়দের সেবা করার জন্য স্বল্প বেতনে বৃদ্ধাশ্রমে কাজ করে। বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত বৃদ্ধাশ্রমে কর্মরত কর্মীদের বেতন পরিশোধ এবং বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নেওয়া বৃদ্ধদের জন্য সব ধরনের সেবা দিতে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হয়। 

বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশে বিনামূল্যে বৃদ্ধাশ্রম চালানো সহজ নয়। প্রবীণদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশে সরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে আরও বেশি করে বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তুলতে হবে।

বিনা খরচে বৃদ্ধাশ্রম

বাংলাদেশে বিনা খরচে বৃদ্ধাশ্রম অর্থাৎ যেখানে অসংখ্য পরিত্যক্ত মানুষের ঠাই হয় তাদের থাকা খাওয়ার চিকিৎসা সেবা সহ সকল প্রকার সেবা প্রদান করা হয় বিনামূল্যে।বাংলাদেশের বর্তমানে বৃদ্ধাশ্রম এর সংখ্যা প্রায় ৩২ টির মতো এর মধ্যেও বেসরকারি উদ্যোগে বেশিরভাগ বৃদ্ধাশ্রম গড়ে উঠেছে। বৃদ্ধাশ্রম এর বাসিন্দাদের বিনা খরচে সকল প্রকার সেবা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশে কিছু বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে যেগুলো বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে বয়স্কদের জন্য আবাসন ও যত্নের ব্যবস্থা করে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত দাতব্য সংস্থা, এনজিও, বা ধর্মীয় সংগঠন দ্বারা পরিচালিত হয়। নিচে বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে সেবা প্রদানকারী কিছু বৃদ্ধাশ্রমের তথ্য দেওয়া হলো:

১. বাংলাদেশ অ্যাজিং ফাউন্ডেশন (Bangladesh Aging Foundation)

  • ঠিকানা: ঢাকা
  • পরিচালনা: বেসরকারি সংস্থা
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন, চিকিৎসা সেবা, এবং মানসিক সহায়তা।

২. মাতৃভূমি বৃদ্ধাশ্রম

  • ঠিকানা: ঢাকা
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন, খাদ্য, চিকিৎসা, এবং সামাজিক কার্যক্রম।

৩. বাংলাদেশ হেল্প এজ ইনস্টিটিউট (Bangladesh Helpage Institute)

  • ঠিকানা: ঢাকা
  • পরিচালনা: বেসরকারি সংস্থা
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন, স্বাস্থ্য সেবা, এবং সামাজিক সহায়তা।

৪. শান্তি নিবাস বৃদ্ধাশ্রম

  • ঠিকানা:: ঢাকা
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন, খাদ্য, চিকিৎসা, এবং মানসিক সহায়তা।
আরো পড়ুনঃ-  বায়ু দূষণ কি? বায়ু দূষণের ৫টি কারণ জানুন

৫. প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধ নিবাস

  • ঠিকানা: ঢাকা
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: প্রতিবন্ধী এবং বয়স্কদের জন্য বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

৬. বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বৃদ্ধাশ্রম

  • ঠিকানা: ঢাকা
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন, চিকিৎসা সেবা, এবং সামাজিক সহায়তা।

৭. সোনার বাংলা বৃদ্ধাশ্রম

  • ঠিকানা: চট্টগ্রাম
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন, খাদ্য, চিকিৎসা, এবং মানসিক সহায়তা।

৮. বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানা, সিলেট

  • ঠিকানা: সিলেট
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

৯. বৃদ্ধাশ্রম, খুলনা

  • ঠিকানা: খুলনা
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

১০. বৃদ্ধাশ্রম, রাজশাহী

  • ঠিকানা: রাজশাহী
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

১১. বৃদ্ধাশ্রম, বরিশাল

  • ঠিকানা: বরিশাল
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

১২. বৃদ্ধাশ্রম, রংপুর

  • ঠিকানা: রংপুর
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

১৩. বৃদ্ধাশ্রম, ময়মনসিংহ

  • ঠিকানা: ময়মনসিংহ
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

১৪. বৃদ্ধাশ্রম, কুমিল্লা

  • ঠিকানা: কুমিল্লা
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

১৫. বৃদ্ধাশ্রম, সাভার

  • ঠিকানা: সাভার, ঢাকা
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

১৬. বৃদ্ধাশ্রম, নারায়ণগঞ্জ

  • ঠিকানা: নারায়ণগঞ্জ
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

১৭. বৃদ্ধাশ্রম, গাজীপুর

  • ঠিকানা: গাজীপুর
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

১৮. বৃদ্ধাশ্রম, ফরিদপুর

  • ঠিকানা: ফরিদপুর
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

১৯. বৃদ্ধাশ্রম, পাবনা

  • ঠিকানা: পাবনা
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

২০. বৃদ্ধাশ্রম, দিনাজপুর

  • ঠিকানা: দিনাজপুর
  • পরিচালনা: বেসরকারি
  • সেবা: বয়স্কদের বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে আবাসন ও যত্ন।

যোগাযোগ

উপরের উল্লিখিত সকল বৃদ্ধাশ্রমে আপনাকে সেখানকার স্থানীয় ঠিকানা বা ফোন নম্বরের মাধ্যমে যোগাযোগ কর্তে হবে।

বাংলাদেশে বেশ কিছু বৃদ্ধাশ্রম বিনা খরচে বা স্বল্প খরচে বয়স্কদের জন্য আবাসন ও যত্নের ব্যবস্থা করে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত দাতব্য সংস্থা, এনজিও, বা ধর্মীয় সংগঠন দ্বারা পরিচালিত হয়। আপনি যদি কোনো বৃদ্ধাশ্রমের সাথে যোগাযোগ করতে চান, তাহলে স্থানীয় ঠিকানা বা ফোন নম্বরের মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।

সরকারি বৃদ্ধাশ্রমের ঠিকানা

বর্তমান সময়ে ৬টি বিভাগে ছয়টি শান্তি নিবাস সরকারি বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে। এই ছয়টি বৃদ্ধাশ্রম এর সমস্ত খরচ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বহন করেন। এই ছয়টি বৃদ্ধাশ্রম এর ঠিকানা হলো রাজশাহী, ফরিদপুর, বাগেরহাট, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল।আপনি চাইলে তাদের সেবা গ্রহণের জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন যোগাযোগের নাম্বার।

  • মোহাম্মদ রেদওয়ান হোসেন সহকারী পরিচালক (ময়মনসিংহ) মোবাইলঃ ০১৭২৬৪৫৩৯১৭। 
  • সাইফুল ইসলাম সহকারী পরিচালক (পুবাইল, গাজীপুর) মোবাইলঃ ০১৯১১৭০৮৬৯৪। 
  • মোঃ জাকির হোসেন (কাশিমপুর, গাজীপুর) মোবাইলঃ ০১৭২৯১৭১০০৭।

আপনি যদি একটি সরকারি বৃদ্ধাশ্রম খুঁজে থাকেন বা বৃদ্ধাশ্রমে উঠতে চান তাহলে উপরে দেওয়া যে কোন একটি নাম্বারে ফোন করে তাদের সাথে বিস্তারিত প্রয়োজনীয় কথা বলতে পারেন। এতে আপনি খুব সহজেই সঠিক একটি ধারণা পেয়ে যাবেন।

বৃদ্ধাশ্রম কোথায় কোথায় আছে ঢাকায়

বৃদ্ধাশ্রম কোথায় কোথায় আছে ঢাকায় আপনি কি খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছে। আমি আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব যে বৃদ্ধাশ্রম ঢাকায় কোথায় কোথায় রয়েছে এবং তাদের ফোন নাম্বার সহ তুলে ধরার চেষ্টা করব। আপনি চাইলে সেই নাম্বারে কথা বলতে পারেন। তাহলে চলুন দেখি ঢাকায় বৃদ্ধাশ্রম কোথায় কোথায় আছে।

আপন ভুবন বৃদ্ধাশ্রমঃ ঠিকানা ঢাকা উত্তরা সেক্টর ১৩ তে অবস্থিত। তাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য এই নাম্বারে কল করতে পারেন। মোবাইলঃ ০১৮৮৬১০৭১০৯, ০১৮২৮৬৭৩৪৭৩

চাইল্ড এন্ড ওল্ড এইজ কেয়ারঃ এই বৃদ্ধাশ্রমটি ঢাকা সাভারের কমলাপুর বাহিরটেক এলাকায় অবস্থিত। তাদের সাথে যোগাযোগ করতে ফোন করুন এই নাম্বারে। মোবাইলঃ ০১৬২২২২০২২২, ০১৬২০৫৫৫২২২।

আরো পড়ুনঃ-  স্বপ্নে জুয়া খেলতে দেখলে কি হয় - জুয়া খেলার পরিণতি

বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রঃ বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র গাজীপুর হোতাপারা এলাকায় অবস্থিত। তাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল করুন। ০১৭১৪০৯৬৩২৫ এই নাম্বারে।

আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমঃ আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রম ঢাকা উত্তরাতে অবস্থিত। আপনি যদি ঢাকা উত্তরাতে গিয়ে আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রম এর কথা কাউকে জিজ্ঞেস করেন তাহলে সেই বৃদ্ধাশ্রমটি পেয়ে যাবেন। আবার আপনি চাইলে আমার দেওয়া নাম্বারে কল করে প্রয়োজনীয় কথা বলতে পারেন। ০১৬৮৬৬৬৪০৬৮,০১৮২৮৬৭৩৪৭৩।

প্রবীণ নিবাসঃ প্রবীণ নিবাস বৃদ্ধাশ্রমটি ঢাকা আগারগাঁও অবস্থিত। তাদের সাথে কথা বলার জন্য মোবাইল করতে পারেন। মোবাইলঃ ০১৭৭৫৪৭৪৮২৭, অথবা ফোন করুনঃ ৯১৪১৪০৪,৯১২৯৮১৪ এই নাম্বারে।

ঢাকার মধ্যে এই পাঁচটি বৃদ্ধাশ্রম ছাড়াও বেসরকারি বৃদ্ধাশ্রম ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলে থাকতে পারে। কারণ বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। ঢাকার মধ্যে যে সমস্ত বৃদ্ধাশ্রম পরিচিত সেই সমস্ত বৃদ্ধাশ্রমের কথা আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। এবং তাদের ঠিকানা সহ ফোন নাম্বার দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

বৃদ্ধাশ্রম কোথায় কোথায় আছে

সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় বৃদ্ধাশ্রম কোথায় কোথায় আছে আপনি যদি না জেনে থাকেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ এই আর্টিকেলের মধ্যে তুলে ধরার চেষ্টা করব বাংলাদেশে সরকারি বা বেসরকারি বৃদ্ধাশ্রম কোথায় কোথায় আছে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় টোটাল ছয়টি সরকারি বৃদ্ধাশ্রম দেখা যায়।এই ছয়টি বৃদ্ধাশ্রম সরকার দ্বারা পরিচালিত হয়। এই ছয়টি সরকারি

বৃদ্ধাশ্রম বাংলাদেশের ছয়টি জেলায় অবস্থিত। যেমন ফরিদপুর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বাগেরহাট, বরিশাল, সিলেট এই ছয়টি জেলায় সরকারি বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে। সরকারের মতামত অনুযায়ী এই ছয়টি বৃদ্ধাশ্রমে ৩০০ জনের বেশি বৃদ্ধদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন বলব বেসরকারি বৃদ্ধাশ্রমের কথা। বেসরকারি উদ্যোগেও দেশে বেশ কয়েকটি বৃদ্ধাশ্রম পরিচালিত হয়েছে। যেমনঃ

আপন ভুবন বৃদ্ধাশ্রমঃ এই বৃদ্ধাশ্রমটির অবস্থান হল ঢাকা উত্তরাতে। এই প্রতিষ্ঠানটি বৃদ্ধা মায়েদের পরম যত্নের সাথে সেবা প্রদান করে থাকে।

বিশিয়া বৃদ্ধাশ্রমঃ এই বৃদ্ধাশ্রমটি গাজীপুরে কুড়ি বাড়ি ইউনিয়নে অবস্থিত। আপনি যদি গাজীপুর চৌরাস্তা গিয়ে এই বৃদ্ধাশ্রমের কথা বলেন তাহলে রিক্সা বা ভ্যান আপনাকে বৃদ্ধাশ্রমে পৌঁছে দিবে।

জোবেদা হোসেন বৃদ্ধাশ্রমঃ এই বৃদ্ধাশ্রমটির অবস্থান বড়বিহানলী ইউনিয়ন, রাজশাহীতে। এই বৃদ্ধাশ্রমটি স্থানীয় প্রবীণদের সেবা প্রদান করে।

এছাড়াও বর্তমান সময়ে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। তাই এটি ভালো করে বলা যায় যে আর মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে আমাদের বাংলাদেশে আরো বেশ কয়েকটি বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন হয়ে যাবে। কারণ বর্তমান সময়ে দেখা যায় বিভিন্ন জেলায় বৃদ্ধাশ্রম দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে পরিকল্পনা চলছে।

বাংলাদেশের বৃদ্ধাশ্রমের তালিকা

বাংলাদেশে বর্তমানে প্রবীনদের সংখ্যা বাড়ছে। এদের মধ্য এবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের আশ্রয়স্থল হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে তার কারণে বাংলাদেশের বৃদ্ধাশ্রম সংখ্যা বর্তমানে বেশি। বাংলাদেশে বিনাখরচে যেসব বৃদ্ধাআশ্রমে বৃদ্ধ বয়সে সকল সেবা পাওয়া যায় সেখানেই বেশিরভাগ মানুষ ঠিকানা খুঁজে নেয়।

বাংলাদেশে বর্তমানে বৃদ্ধাশ্রম এর সংখ্যা অনেক বেশি। আর বৃদ্ধাশ্রম গুলোতে প্রবীনদের সংখ্যাও অনেক বেশি। বর্তমানে বাংলাদেশে নিবন্ধনকৃত বৃদ্ধাশ্রম অথবা সরকারি বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা। ছয়টি বৃদ্ধাশ্রমে সরকার মালিকানাধীন।এর মধ্য আগারগাঁও “বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ” নামে একটি বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে।

চট্টগ্রাম বৃদ্ধাশ্রম 

চট্টগ্রাম শহরে বর্তমান সময়ে দুইটি বৃদ্ধাশ্রম দেখা যায়। তার মধ্যে একটি হলো আমেনা বশর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র। এই বৃদ্ধাশ্রমটি ২০১৪ সালে বিশাল এলাকা জুড়ে স্থাপন করা হয়। 

এই বৃদ্ধাশ্রমটি শামসুল আলম নামে এক ব্যবসায়ী নিজ উদ্যোগে স্থাপন করে। পরবর্তীতে এই বৃদ্ধাশ্রমটি সরকার নিবন্ধিত হয়। তারপর থেকে সমস্ত খরচ সরকার বহন করেছে। আপনি যদি এই বৃদ্ধাশ্রমে যেতে

চান তাহলে চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ায় কাপ্তাই সড়কে গেলে এই বৃদ্ধাশ্রম এর খোঁজ পেয়ে যাবেন। এছাড়াও চট্টগ্রাম বিভাগে আরও একটি বৃদ্ধাশ্রম দেখা যায়। এই বৃদ্ধাশ্রমটি আইয়ুব নগর বৃদ্ধাশ্রম নামে পরিচিত।এই বৃদ্ধাশ্রমটি চট্টগ্রামের দূর্গারামপুরে অবস্থিত। 

আপনি চাইলে তাদের সাথে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন তাদের ফোন নাম্বার হল ০১৩২১-৮৬৪৪০৬, ০১৮৫১৭৮১২০৮। আবার আপনি চাইলে চট্টগ্রামের দূর্গারামপুরে গিয়ে সরাসরি তাদের সাথে কথা বলতে পারেন।

গাজীপুর বৃদ্ধাশ্রম 

গাজীপুরে একটি জনপ্রিয় বৃদ্ধাশ্রম এর মধ্যে দেখা যায় বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র। এই বৃদ্ধাশ্রমটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন গিভেন্সী গ্রুপের কর্ণধার খতিব আব্দুল জাহিদ মুকুল। এই বৃদ্ধাশ্রমটি ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়।এই বৃদ্ধাশ্রমটিতে বর্তমান সময়ে ৮০ থেকে ৯০ জন পুরুষ

আরো পড়ুনঃ-  অন্যের কাছে নিজের গুরত্ব বৃদ্ধির উপায়

এবং 70 থেকে 80 জন নারীসহ মোট ১৬০ থেকে ১৭০ জন প্রবীণ বাস করছেন। এই বৃদ্ধাশ্রমটি আব্দুল শাহেদ মুকুল এর নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়। এই বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র এর ঠিকানা হল হোতাপাড়া, মনিপুর এলাকা, গাজীপুর সদর উপজেলা।

সিলেট বৃদ্ধাশ্রম

সিলেটে এখন পর্যন্ত কোন বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন করা হয়নি। কিন্তু সিলেটে বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু সিলেটের স্থানীয় সাধারণ জনগণ সিলেট জেলায় বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন তৈরি করতে আগ্রহী নয়। কারণ চাতলীবন্দ গ্রাম, টুকেরবাজার ইউনিয়ন, সিলেট সদর উপজেলায় প্যারেন্টস কেয়ার বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন করার পরিকল্পনা করেন।

এমনকি বৃদ্ধাশ্রমের জন্য বিশাল ভূমি নির্বাচন করেন। কিন্তু পরবর্তীতে সিলেটের সাধারণ জনগণের মতামত না পাওয়ায় কাজটি এখনো অসম্পূর্ণ হয়ে রয়েছে।সিলেটের সাধারণ জনগণ তাদেরকে জানিয়েছেন সিলেটে বৃদ্ধাশ্রম নয় আমরা চাই শিক্ষার আলো।

কারণ সিলেটের মানুষ চায়না যে তাদের বাবা-মা পরিজনের সাথে একটি বিশাল দূরত্ব তৈরি হয়ে যাক।কারণ যখন একটি বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন করা হবে তখন অনেক ভালো ভালো ফ্যামিলির ছেলে মেয়ে বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসবে এতে করে তাদের দূরত্ব আস্তে আস্তে দূরে সরে যাবে।

ময়মনসিংহ বৃদ্ধাশ্রম

বর্তমান সময়ে ময়মনসিংহে দুইটি বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে। তার একটি নাম হল সাড়া মানবিক বৃদ্ধাশ্রম ও অপরটির নাম হল মাতৃছায়া সমাজ কল্যাণ সংস্থা ও বৃদ্ধাশ্রম।আমি আপনাদের এই দুটি বৃদ্ধাশ্রম এর সঠিক ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার সম্পর্কে জানাবো। 

সাড়া মানবিক বৃদ্ধাশ্রমঃ আমাদের সমাজে অনেক সময় দেখা যায় বাবা-মা বৃদ্ধ হলে সেই বাবা মাকে রাস্তাঘাটে বা ফুটপাতে ফেলে আসে। তাদেরকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য সাড়া মানবিক বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন করা হয়। এই বৃদ্ধাশ্রমটি স্থাপন করেন আব্দুল মালেক। সাড়া মানবিক বৃদ্ধাশ্রম ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার দারিয়াপাড়া গ্রামে স্থাপন করা হয়। তাদের সাথে যোগাযোগ করতে এই নাম্বারে কল করতে পারেন ০১৭৬৬৫৮৩৬৪৬।

মাতৃছায়া সমাজ কল্যাণ সংস্থা ও বৃদ্ধাশ্রমঃ এই বৃদ্ধাশ্রমটি স্থাপন করা হয় চর কামটখালি গ্রাম, নান্দাইল, ময়মনসিংহ। এই বৃদ্ধাশ্রমে শুধুমাত্র তারাই থাকতে পারবে যারা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন বা পরিবার সন্তান কাছে নিতে চায় না তাদের জন্য মাতৃছায়া সমাজ কল্যাণ সংস্থা ও বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন করা হয়।

লেখকের শেষ মতামত

আপনি যদি একজন ভালো মনের মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে কোনদিন চিন্তা করবেন না যে আমার বাবা মাকে কিংবা আত্মীয়-স্বজনকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসি। কারণ আপনি যদি ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করেন তাহলে বুঝতে পারবেন যে আপনার বাবা মার জন্য আপনি এই দুনিয়াতে আসতে পেরেছেন। এমনকি আপনি এখন যে পর্যায়ে আছেন

এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে আপনার বাবা-মা এবং আত্মীয়-স্বজন। কিন্তু আপনি কি করছেন আপনি আপনার বাবা মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসছেন। বৃদ্ধাশ্রম এর সূচনা হয়েছে পশ্চিমা থেকে কিন্তু বাংলাদেশে বর্তমানে বৃদ্ধাশ্রমের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এতে খুব সহজেই বোঝা যায় যে বাংলাদেশেও বৃদ্ধাশ্রম আস্তে আস্তে বিশাল আকৃতি ধারণ করবে।

সাধারন প্রশ্ন ও উত্তর

১। বাংলাদেশে বৃদ্ধাশ্রম কেন প্রয়োজন?

পরিবারের অবহেলা, সন্তানের ব্যস্ততা, আর্থিক অনিশ্চয়তা এবং একাকিত্ব দূর করার জন্য বৃদ্ধাশ্রম প্রয়োজন হয়ে উঠছে।

২। বৃদ্ধাশ্রমে প্রবেশের জন্য কী কী শর্ত থাকে?

বেশিরভাগ বৃদ্ধাশ্রমে প্রবেশের জন্য বয়সসীমা (সাধারণত ৬০+), শারীরিক সুস্থতা, এবং কখনো কখনো আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন হয়।

৩। বৃদ্ধাশ্রমে কী ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়?

আবাসন, খাবার, চিকিৎসা সুবিধা, বিনোদনমূলক কার্যক্রম এবং সামাজিক সহায়তা প্রদান করা হয়।

৪। বৃদ্ধাশ্রমে খরচ কেমন হয়?

সরকারি বৃদ্ধাশ্রম বিনামূল্যে পরিষেবা দেয়, তবে বেসরকারি বৃদ্ধাশ্রমে মাসিক ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা লাগতে পারে।

৫। বাংলাদেশে সরকারি বৃদ্ধাশ্রম কীভাবে পরিচালিত হয়?

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কিছু সরকারি বৃদ্ধাশ্রম পরিচালিত হয়, যেখানে প্রবীণ নাগরিকদের বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হয়।

৬। বাংলাদেশে বৃদ্ধাশ্রমে প্রবীণরা কি সুখী জীবনযাপন করেন?

এটি ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে, তবে অনেক প্রবীণ পরিবার ও সমাজের অবহেলার কারণে বৃদ্ধাশ্রমে থেকে মানসিক শান্তি খুঁজে পান।

৭। বৃদ্ধাশ্রমে প্রবেশের জন্য কোথায় আবেদন করতে হয়?

সরকারি বৃদ্ধাশ্রমে থাকার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়, আর বেসরকারি বৃদ্ধাশ্রমে সরাসরি যোগাযোগ করতে হয়।

Leave a Comment