ঘাড়ে ব্যাথার ধরন বিভিন্ন রকম হতে পারে, অনেকের ক্ষেত্রে ঘাড়ের বাম পাশে ব্যাথা হয় আবার অনেকের ক্ষেত্রে দুই পাশেই হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে হঠাৎ ঘাড়ে ব্যাথার সৃষ্টি হয়। ঘাড় ব্যথার কারন কী? লক্ষণ ও মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এই ব্লগে। এছাড়াও ঘাড় ব্যথা কিসের লক্ষণ এবং ঘাড় ব্যথার চিকিৎসা ও প্রতিরোধ সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে।
আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যাদের ঘাড়ে হুটহাট টান লেগে যায়। মূলত আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং ভুল অঙ্গভঙ্গির কারণবশত ঘাড়ব্যথার শিকার হই। তবে জানতে অবাক হবেন যে আপনি যদি সঠিক অঙ্গভঙ্গি পরিবর্তন করেন তাহলে এই ঘাড়ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে আগে চলুন ঘাড় ব্যথা কী তা জেনে নেই।
ঘাড় ব্যথা কী?
ঘাড়ে ব্যাথা মূলত এক ধরনের বেদনা, যা বিভিন্ন কারনে হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এই ব্যাথা ক্ষণস্থায়ী হয় আবার অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে। অনেকের ক্ষত্রে ঘাড় ব্যাথা জনিত কারনে ঘাড়ের রগ টেনে ধরে। ঘাড়ের পেশিতে টান বা চাপ লাগার ফলেও ঘাড়ে ব্যাথা হয়ে থাকে।
ঘাড় ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
ঘাড় ব্যাথার নির্দিষ্ট কোন কারন নেই। মূলত ঘাড়ের টিস্যু ক্ষয়, দীর্ঘ সময় একজায়গায় বসে কাজ করা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে ঘাড়ের ব্যাথা হয়ে থাকে। ঘাড়ে ব্যাথা (Neck Pain) সাধারণত শুরুতেই বড় পরিসরে ছড়ায় না, এটি ধীরে ধীরে অনুভূত হতে থাকে। ঘাড় ব্যাথার কারণগুলো নিচে বিস্তারিত ভাবে দেওয়া হলো:
- পেশী টান: পেশিতে টান লাগার কারণে ঘাড় ব্যাথা হতে পারে।
- স্নায়ু সংকোচন: ঘাড় ব্যাথার অন্যতম একটি কারন হলো স্নায়ু সংকোচন, স্নায়্বু সংকুচিত হলে ঘাড়ে ব্যাথা হয়ে থাকে।
- আঘাত: ঘাড়ে কোন প্রকার আঘাত পেলে সেখান থেকে ব্যাথা হতে পারে, সাধারণত অনেকের ক্ষেত্রে আঘাতজনিত ঘাড়ে ব্যাথা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে।
- স্পাইনাল কর্ড: স্পাইনাল কর্ডের কোনো টিস্যু যদি ফুলে যায়, তাহলে স্লিপ ডিস্ক হতে পারে। সেখান থেকেও ঘাড়ে ব্যথা হয়।
- একভাবে বসে থাকা: একভাবে বসে কোন কাজ করলে কাঁধ বা ঘাড় ব্যাথা হতে পারে।
- দুশ্চিন্তা: অনেক সময় অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকেও ঘাড়ের ব্যাথা হতে পারে।
- বাত ব্যাথা: বাত ব্যাথায় কারনেও ঘাড়ে ব্যাথা হতে পারে।
- ঘুমানোর ধরণ: ঘুমানোর সময় শোয়ার ধরনের উপর ঘাড়ে ব্যাথা হতে পারে।
- ভারী কাজ: ভারী কোন কিছু উচু করা বা এ জাতীয় কাজের ক্ষেত্রে ঘাড়ের রগে টান লাগতে পারে, ফলে ব্যাথা সৃষ্টি হতে পারে।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস: মেনিনজাইটিস বা ক্যান্সারের মতো কয়েকটি রোগ ঘাড় ব্যথার কারণ হতে পারে।
সাধারণত উপরে দেওয়া কারন গুলোর জন্যই ঘাড় ব্যাথা (Neck Pain) হয়ে থাকে। এগুলো ছাড়াও আরও অন্যান্য কারনে ঘাড়ে ব্যাথা হতে পারে।
ঘাড়ে ব্যথা হলে কি করা উচিত?
প্রথমত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়াও অতিরিক্ত ব্যাথা হলে কিছু ঘরোয়া উপায়ে ঘাড়ে ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, তবে সেটা প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে নিতে পারেন। ঘাড় ব্যাথা থেকে মুক্তিতে ঘরোয়া উপায় গুলো নিচে দেওয়া হল:
- ব্যাথাযুক্ত স্থানে হিটিং প্যাড দিয়ে উষ্ণ তাপ দেওয়া।
- ঘাড় মালিশ করা
- ঘাড়ের ব্যাথার ব্যায়াম করা
- ঘুমানোর সময় ঠিক ভাবে শোয়া বা ঘাড়ের নিচে ছোট শক্ত বালিশ রাখা
- কাধে ভারী কোন ব্যাগ বহন না করা
- অতিরিক্ত ঘাড় নাড়ানো কাজ থেকে বিরত থাকা
- উপরক্ত নিয়ম গুলো মেনে চললে প্রাথমিক ভাবে ঘাড়ে ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে।
ঘাড় ব্যথা কিসের লক্ষণ
আমরা অনেকে মনে করে থাকি ঘাড় ব্যথা হলে কোন একটা সমস্যার লক্ষণ দেখা দেয়। এটা আসলে যতটা সঠিক নয় অনেক সময় ঘাড় ব্যথা হলে কোন রোগের লক্ষণও দেখা দেয় আবার দেখা নাও দিয়ে থাকে বেশিরভাগ নাই দেখা দিয়ে থাকে।যদি অতিরিক্ত সময় ধরে ঘাড়ে ব্যথা হয়। বা একাধিক সময় ধরে যদি ঘাড়ে ব্যাথা হয় তাহলে আবার সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় যে যখন আমাদের ঘাড়ে রগ চিকন হয়ে যায়।
তখন আমাদের মাঝে মাঝে ঘাড়ের ব্যথা সমস্যাটি দেখা যায় আবার যখন আমাদের ঘাড়ের রগ দুর্বল হয়ে পর এবার মারা যায়। তখন এই সমস্যাটা আরো বেশি দেখা দিয়ে থাকে কারণ রগ টি মারা যাওয়ার ফলে ঘরের রক্ত চলাচল ভালোভাবে করতে পারেনা। তাই সে রক্ত প্রেসারের ফলে বা চাপের ফলে ঘাড়ে একাধিক সময় ধরে ব্যথা হয়ে থাকে। আবার যখন অনেক সময় ঘাড়ে ভিটামিন শর্ট হয়ে যায়।
তখন লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে আমরা ঘাড় সোজা করে দাঁড় করাতে পারি না আর যখন কোন দিকে তাকাই ব একাধিক সময় ধরে শুয়ে থাকি তখন আমাদের ঘাড় লেগে যায়। যদি আমরা এই লক্ষণগুলো বুঝতে পারি তাহলে বুঝে নিতে হবে যে কোন না কোন সমস্যা হয়েছে।
হঠাৎ ঘাড় ব্যথা হলে করণীয়
আমাদের যদি ঘাড়ে ব্যথা হয়। আমরা কি করে সেই ব্যথা আসলে ভালো করবে সেটা আমরা অনেকেই জানিনা আবার জানি কিন্তু তাও ভাল হয় না তো জেনে ফেলা যাক যদি ঘাড় ব্যথা হয় ঘরো উপায় কিভাবে ঘাড় ব্যথা ভালো করা যায়। যখন আমাদের ঘাড় ব্যথা হবে তখন আমরা ঘারে টিপাটিপি না করে।
ঘরোয়া উপায় চিকিৎসা নেয়ার চেষ্টা করব প্রথমে আসলে যেভাবে চিকিৎসাটা নিব প্রথমে সরিষার তেল হালকা গরম করে নিব এবং তার ভিতরে রসুন লবঙ্গ এলাচ এগুলো দিয়ে দিও এবং ভালো করে।সে তেলটাকে জাল করে নিব। সে তেলটা ভালো হয়ে জাল হলে সেটাকে আবার রেখে দিয়ে ঠান্ডা করব।
করে ঘাড়ের দেশ স্থানে ব্যথা সে স্থানে তেলটা দিব দিয়ে হালকা হালকা করে মাসাজ করে দিব। এবং দেশ স্থানে ব্যথা সেই স্থানে একটু ভর দিয়ে মাসাজ করব যাতে তেলটা শরীরের ভিতরে ঢুকতে পারে। আর এভাবে যদি দিনে ৩-৪ বার করে ব্যবহার করা হয় তাহলে একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে ব্যথা আসলে অনেকটাই কমে যাবে। এভাবে যদি মুক্তি না পাওয়া যায় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতে হবে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
ঘাড়ের ব্যথা যদি এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলতে থাকে, গুরুতর হয় বা অন্যান্য উপসর্গের সাথে ঘাড়ের ব্যথাও থাকে, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এই উপসর্গগুলোর মধ্যে থাকতে পারে:
- হাত বা পায়ে দুর্বলতা বা অসাড়তা
- হাতে বা পায়ে ঝিমঝিমভাব
- মল-মূত্রত্যাগে নিয়ন্ত্রণ হারানো
- জ্বর
- মাথা ঘোরার তীব্রতা বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি।
ঘাড়ের রগ ব্যথায় করনীয়
সঠিক নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য ডাক্তার আপনার শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং প্রয়োজনে এক্স-রে, এমআরআই, সিটিস্ক্যান ইত্যাদি পরীক্ষা করতে পারেন।
ঘাড়ব্যথা প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো সঠিক অঙ্গভঙ্গিতে থাকা। দাঁড়া সোজা রেখে বসুন, দাঁড়া বাঁকা হয়ে দাঁড়াবেন না। ঘাড় নিচু করে ফোন ব্যবহার বা কম্পিউটারে কাজ করা এড়িয়ে চলুন। ভারী জিনিসপত্র মাথায় বহন করবেন না।
নিয়মিত ব্যায়াম, বিশেষ করে ঘাড়ের ব্যায়াম, ঘাড়ের পেশি শক্তিশালী করতে এবং ব্যথা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
মনে রাখবেন: ঘাড়ব্যথা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গুরুতর সমস্যা নয় এবং সঠিক যত্ন ও চিকিৎসার মাধ্যমে সহজেই সারিয়ে উঠা যায়। তবে উপেক্ষা না করে সতর্ক থাকা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ঘাড়ের রগ টেনে ধরার কারণ
আমাদের অনেকেরই অনেক সময় দেখা যায় যে হঠাৎ হঠাৎ ঘাড়ের রগ টেনে ধরে। কিন্তু এই ঘাড়ের রগটা কেন টেনে ধরে আমরা এটাই অনেকে জানিনা ঘাড়ের সমস্যা কি অনেক বড় সমস্যা তাই এটাকে নিয়ে অবহেলা করা যাবে না তো জেলে ফেলুন ঘাড়ে রগ টেনে ধরার কারণ। আসলে আমরা যখন একাধিক সময় ধরে কোন কিছুর দিকে তাকিয়ে থাকি। আমাদের যখন মাথা চলাচল বা মুখ না করে।
তখন এক জায়গায় স্থির দাঁড়িয়ে থাকা আবার টাকা থাকার কারনে সে ঘাড়ের রগ সেই দিকে শক্ত হয়ে যায়। এবং তখনই আমাদের ঘাড়ের রগ টেনে ধরে যখন আমরা কোন কিছুতে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য মাথা রাখে কিন্তু মাথা নড়াচড়া করি না তখন সে রগ এক জায়গায় স্থির ভাবে থাকার কারণে শক্ত হয়ে যায় এবং টেনে ধরে টেনে ধরে আবার আমরা অনেক সময় দেখা যায় যে মাথার উপর অনেক ওজন নেই।
যেমন অনেক সময় আমরা মাথায় করে অনেক কিছু নিয়ে যায় তখন মাথায় হালকা ব্যথা পাওয়ার ফলে ঘাড়ের রগ আস্তে আস্তে টেনে ধরে কিন্তু আমরা তখন সেটা বুঝতে পারি না যখন বেশি হয়ে টেনে ধরে তখন আমরা বুঝতে পারি যে ঘাড়ে আমাদের ব্যথা হচ্ছে। এইসব কারণে ঘাড়ের রগ টেনে ধরে তাহলে আপনি জানতে পারলেন যে ঘাড়ের রগ টেনে ধরার কারণ গুলো কি কি।
ঘাড়ের বাম পাশে ব্যথার কারণ
ঘাড়ে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা, যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। ঘাড়ের বাম বা ডান পাশে ব্যথার কারণগুলি একই রকম হতে পারে, তবে কিছু ক্ষেত্রে পার্থক্যও থাকতে পারে।
ঘাড়ের বাম পাশে ব্যথার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ নিম্নরূপ:
পেশী টান বা স্ট্রেন: ঘাড়ের পেশীতে টান পড়লে বা স্ট্রেন হলে ব্যথা হতে পারে। এটি সাধারণত ভুল ভঙ্গিতে ঘুমানো, দীর্ঘ সময় কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করা, বা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমের কারণে হতে পারে।
সার্ভিকাল স্পন্ডিলোসিস: সার্ভিকাল স্পন্ডিলোসিস হলো ঘাড়ের হাড় ও ডিস্কের ক্ষয়জনিত সমস্যা। এটি বয়স বাড়ার সাথে সাথে হতে পারে এবং ঘাড়ের বাম পাশে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
নার্ভ কম্প্রেশন: ঘাড়ের নার্ভ যদি কোনো কারণে চাপ পড়ে বা কম্প্রেস হয়, তাহলে ব্যথা হতে পারে। এটি সাধারণত হার্নিয়েটেড ডিস্ক বা হাড়ের স্পার (বাড়তি হাড়) এর কারণে হতে পারে।
আঘাত বা ইনজুরি: ঘাড়ে আঘাত পেলে বা কোনো ধরনের ইনজুরি হলে ব্যথা হতে পারে। এটি দুর্ঘটনা, খেলাধুলায় আঘাত, বা অন্য কোনো কারণে হতে পারে।
অস্টিওআর্থারাইটিস: ঘাড়ের জয়েন্টে অস্টিওআর্থারাইটিস হলে ব্যথা হতে পারে। এটি একটি প্রদাহজনিত অবস্থা, যা জয়েন্টের কার্টিলেজ ক্ষয়ের কারণে হয়।
হার্টের সমস্যা: কিছু ক্ষেত্রে হার্টের সমস্যা যেমন অ্যাঞ্জাইনা বা হার্ট অ্যাটাকের কারণে ঘাড়ের বাম পাশে ব্যথা হতে পারে। এটি একটি গুরুতর অবস্থা এবং দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন।
ঘাড়ের ডান পাশে ব্যথার কারণ
ঘাড়ের ডান পাশে ব্যথার কারণগুলি বাম পাশের মতোই হতে পারে, তবে কিছু ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকতে পারে। নিচে কিছু সাধারণ কারণ উল্লেখ করা হলো:
পেশী টান বা স্ট্রেন: ঘাড়ের ডান পাশের পেশীতে টান পড়লে বা স্ট্রেন হলে ব্যথা হতে পারে। এটি সাধারণত ভুল ভঙ্গিতে ঘুমানো বা দীর্ঘ সময় একই অবস্থানে থাকার কারণে হতে পারে।
সার্ভিকাল স্পন্ডিলোসিস: সার্ভিকাল স্পন্ডিলোসিস ঘাড়ের ডান পাশেও ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে। এটি হাড় ও ডিস্কের ক্ষয়জনিত সমস্যা।
নার্ভ কম্প্রেশন: ঘাড়ের ডান পাশের নার্ভ যদি চাপ পড়ে বা কম্প্রেস হয়, তাহলে ব্যথা হতে পারে। এটি হার্নিয়েটেড ডিস্ক বা হাড়ের স্পার এর কারণে হতে পারে।
আঘাত বা ইনজুরি: ঘাড়ের ডান পাশে আঘাত পেলে বা ইনজুরি হলে ব্যথা হতে পারে। এটি দুর্ঘটনা বা খেলাধুলায় আঘাতের কারণে হতে পারে।
অস্টিওআর্থারাইটিস: ঘাড়ের ডান পাশের জয়েন্টে অস্টিওআর্থারাইটিস হলে ব্যথা হতে পারে। এটি জয়েন্টের কার্টিলেজ ক্ষয়ের কারণে হয়।
লিম্ফ নোড ফোলা: ঘাড়ের ডান পাশে লিম্ফ নোড ফুলে গেলে ব্যথা হতে পারে। এটি সাধারণত সংক্রমণ বা অন্যান্য রোগের কারণে হতে পারে।
অনেক সময় দেখা যায় যে আমরা কোন জায়গায় যাওয়ার সময় গাড়ি জানালা দেখতে এক সাইডে তাকিয়ে থাকি হয়তো ডান সাইডে আবার হয়তো কখনো বাম সাইডে একটু লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে আমরা যে সাইটটাতে তাকিয়ে থাকি মনে করা যাক যে আমার ডান সাইডে তাকিয়ে থাকি।
এক দিকে অসংখ্য সময় তাকে থাকার কারণে আমাদের ঘাড়ের রগ স্থির হয়ে যায় এবং রক্ত চলাচল ক্ষমতা কমে যায়। সেটা আস্তে আস্তে পরে কোন লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে সেটা ঘাড়ের একটি সমস্যায় দেখা দিয়েছে যেমন ঘাড়ের ডান পাশে এবং বাম পাশে ব্যথা পরিণত হয়েছে। আবার অনেক সময় যখন আমরা মোবাইল টিপি তখন কোন কিছুতে বসে কিন্তু মোবাইল টিপি অসংখ্য সময় আমরা যখন মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকি।
আমরা যখন স্থির ভাবে মাথা বা ঘার না নারিয়ে স্থির ভাবে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকি একাধিক ভাবে তাকিয়ে থাকার ফলে আমাদের ঘাড়ের রগ শক্ত হয়ে যায় সে কারণে আমরা যখন ঘাড় নড়াতে যাই তখন আমাদের ঘাড়ের ডান পাশে এবং বাম পাশে ব্যথা করে। আবার আমরা অনেক সময় যখন বিছানাতে ঘুমাই তখন আমাদের মাথার বালিশ অনেক সময় সাপোর্ট আবার অনেক সময় উঁচু উঁচু হয়। মাথা যখন সমান ভাবে স্থির ভাবে শান্ত হয়ে থাকতে না পারে।
তখন আস্তে আস্তে বা এক কাজ হয়ে শুয়ে থাকি সেভাবে ঘাড়ের রগ বেহুশ হয়ে যায়। এবং রক্ত চলাচল ক্ষমতা খুবই কমে যায় যার ফলে রক্ত চলাচল করতে পারেনা ঠিকভাবে এভাবে অতিরিক্ত সময় থাকার কারণে এটি আস্তে আস্তে ঘাড় ব্যথায় পরিণত হয়। আবার অনেক সময় আমাদের এই কারণে ঘাড় ফুলেও যায় তাহলে আমরা জানতে পারলাম যে আমাদের ঘাড়ের ডান পাশে এবং বাম পাশে ব্যথা করার কারণটা আসলে কি।
ঘাড় ব্যথার ঔষধ বাংলাদেশ
ঘাড়ের ব্যথার চিকিৎসা নির্ভর করে ব্যথার কারণের উপর। সাধারণত ব্যথা কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ঔষধ ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে ঘাড়ের ব্যথার জন্য নিম্নলিখিত ঔষধগুলি পাওয়া যায়:
১। ব্যথানাশক ঔষধ
- প্যারাসিটামল: এটি একটি সাধারণ ব্যথানাশক ঔষধ, যা হালকা থেকে মাঝারি ব্যথার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি বাংলাদেশে সহজলভ্য এবং সস্তা।
- আইবুপ্রোফেন: এটি একটি নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি ড্রাগ (NSAID), যা ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- ডাইক্লোফেনাক: এটি আরেকটি NSAID, যা ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে ব্যবহৃত হয়। এটি ট্যাবলেট, জেল বা ইনজেকশন আকারে পাওয়া যায়।
২। মাংসপেশী শিথিলকারী ঔষধ
- ক্লোরজক্সাজোন: এটি মাংসপেশী শিথিলকারী ঔষধ, যা পেশী টান বা স্ট্রেনের কারণে হওয়া ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- মেফেনেসিন: এটি আরেকটি মাংসপেশী শিথিলকারী ঔষধ, যা পেশীর টান কমাতে সাহায্য করে।
৩। স্টেরয়েড
- প্রেডনিসোলন: এটি একটি কর্টিকোস্টেরয়েড, যা গুরুতর প্রদাহ এবং ব্যথা কমাতে ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়।
৪। ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট
- ভিটামিন বি কমপ্লেক্স: এটি নার্ভের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে এবং ব্যথা কমাতে পারে।
- ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি: এটি হাড়ের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে, বিশেষ করে অস্টিওআর্থারাইটিস বা অস্টিওপোরোসিসের ক্ষেত্রে।
৫। জেল ও ক্রিম
- ভল্টারেন জেল: এটি ডাইক্লোফেনাক সমৃদ্ধ জেল, যা ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- কাউন্টারপেইন জেল: এটি একটি জনপ্রিয় জেল, যা ব্যথা কমানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।
ঘাড় ব্যথার চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
ঘাড়ের ব্যথার চিকিৎসা নির্ভর করে ব্যথার কারণের উপর। সাধারণত নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করা হয়:
১। ফিজিওথেরাপি
ফিজিওথেরাপি ঘাড়ের ব্যথা কমাতে খুবই কার্যকর। এটি পেশী শক্তিশালী করে, নমনীয়তা বাড়ায় এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
২। ব্যায়াম
ঘাড়ের ব্যায়াম ব্যথা কমাতে এবং ঘাড়ের পেশী শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। তবে ব্যায়াম করার আগে ডাক্তার বা ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৩। জীবনযাত্রার পরিবর্তন
ভুল ভঙ্গিতে ঘুমানো, দীর্ঘ সময় কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। সঠিক ভঙ্গিতে বসা এবং দাঁড়ানো ঘাড়ের ব্যথা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৪। সার্জারি
যদি ব্যথার কারণ হার্নিয়েটেড ডিস্ক বা নার্ভ কম্প্রেশন হয় এবং অন্যান্য চিকিৎসা কাজ না করে, তাহলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
ঘাড়ের ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা, যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। ঘাড়ের বাম বা ডান পাশে ব্যথার কারণগুলি একই রকম হতে পারে, তবে কিছু ক্ষেত্রে পার্থক্যও থাকতে পারে। বাংলাদেশে ঘাড়ের ব্যথার জন্য বিভিন্ন ধরনের ঔষধ পাওয়া যায়, যেমন ব্যথানাশক, মাংসপেশী শিথিলকারী, স্টেরয়েড এবং ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট। তবে ঘাড়ের ব্যথার চিকিৎসার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন, ফিজিওথেরাপি এবং ব্যায়াম ঘাড়ের ব্যথা প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
লেখকের শেষ মতামত
ঘাড় ব্যথা খুবই যন্ত্রণাদায়ক একটি ব্যাথা। বিভিন্ন সময় নানা কারনে ঘাড়ে ব্যাথা হয়ে থাকে। ঘাড় ব্যথার কারন কী? লক্ষণ ও মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থেকে ঘাড়ে ব্যাথা সম্পর্কে অনেক কিছু জানা গিয়েছে। ঘাড়ে ব্যাথা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি নিরাময় যোগ্য ব্যাথা। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি ঘাড় ব্যাথা ভাল হয়ে থাকে।
ঘাড় ব্যাথা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে আকুপাংচার একটি কার্যকরী চিকিৎসা হিসেবে ভূমিকা পালন করে থাকে। আকুপাংচারের মাধ্যমে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়াই ঘাড়ের ব্যাথা ভাল করা যায়।
এই ছিল আজকের ঘাড় ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এবং ঘাড় ব্যথা কিসের লক্ষণ সম্পর্কিত সকল তথ্য সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আশা করছি আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ে ঘাড় ব্যথার কারণ জানতে পেরেছেন।
এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও ঘাড় ব্যথার কারণ ও প্রতিকার এবং ঘাড় ব্যথা কিসের লক্ষণ সম্পর্কে জানতে পারবে। ধন্যবাদ।