গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় বিস্তারিত জানুন

আজকে আমাদের আর্টিকেলের বিষয় হচ্ছে হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়। গর্ভাবস্থায় কম বেশি প্রতিটি মহিলার একটি প্রধান সমস্যা হিসেবে দাঁড়াই শরীরে হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা কমে যাওয়া। আর সেই কারণে চিকিৎসকগণ গর্ভবতী মায়েদেরকে শিশু প্রসবের পূর্বেই শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। প্রতিটি মানুষের শরীরে একটি নির্দিষ্ট রক্তের পরিমাণ থাকে। 

গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়

আর সেই পরিমাণ কমে গেলেই দেখা দেয় সমস্যা। আপনি কি জানেন হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়। অনেকেই হয়তো জানেন না আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়। আর সেই কারণে আমরা আমাদের আর্টিকেল দ্বারা এই তথ্য আপনাদের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। 

যাতে করে আপনারা খুব সহজে বুঝতে পারেন যে আপনার শরীরের রক্তের পরিমাণ কতটুকু রয়েছে সেটি আপনার শরীরের জন্য ভালো নাকি খারাপ। হিমোগ্লোবিন আমাদের শরীরের একটি অংশ। 

আবার পুরুষদের ক্ষেত্রেও দেখা যায়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকেন নারীরা। আপনারা এই আলোচনা পড়ে অবশ্যই বুঝতে পারবেন যে আপনারা কিভাবে বুঝবেন আপনার শরীরে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি রয়েছে কিনা এবং আপনার শরীরে রক্ত দিতে হবে কিনা। তাহলে চলুন, আর কথা না বাড়িয়ে বিস্তারিত জেনে নেই।

গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয়

গর্ভাবস্থায় রক্তশূন্যতা হবার যথেষ্ট কারণ থাকে গর্ভবতী নারীর ক্যালরির সঙ্গে লৌহ বা আইরনের চাহিদা বৃদ্ধি পায় গর্ভাবস্থায় এই জন্য চাহিদা মত লৌহ পূরণ না হলে এই সময় রক্তশূন্যতা দেখা দেয় স্বাভাবিক একজন গর্ভবতী নারীর দেহে রক্তের পরিমাণ 15 থেকে 20 শতাংশ থাকে রক্তের তরলের পরিমাণ 30% বৃদ্ধি পায় এবং শরীর বৃদ্ধি ও রক্তশূন্যতা হতে পারে।

আগে থেকে রক্তশূন্যতা পুষ্টিহীনতা ও ঘন ঘন সন্তান জন্ম দেন এই ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দেয় এই জন্য আপনাদের গর্ব অবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হবে এই সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে আপনার যদি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা গর্ভাবস্থায় কমে যায় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রক্ত দিতে হবে। 

একজন মানবদেহে স্বাভাবিক মাত্রার থেকে কম পরিমাণে রক্ত থাকলে কিন্তু তখন শরীরের রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়। তবে বিশেষজ্ঞ বা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভবতী নারীর ১১ বা তার থেকে বেশি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সাধারণত স্বাভাবিক বলে মনে করা হয়। এর থেকে কম হলে তখন রক্ত দিতে হয়। 

একজন গর্ভবতী নারী শরীরের যদি ১১% হিমোগ্লোবিন থাকে তাহলে রক্ত দিতে হবে না। কিন্তু এর থেকে যখন কম হয়ে যাবে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ তখনই তার রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। হিমোগ্লোবিনের ফলে ক্লান্তি দূর্বলতা এবং শ্বাসকষ্টের মতো নানা রকমের সমস্যা দেখা দেয় স্বাস্থ্যকর হিমোগ্লোবিনের জন্য আয়রনসমৃদ্ধ খাবারের সাথে একটি সুষম খাদ্য বজায় রাখা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুষদের জন্য হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক ১৩.৫ থেকে ১৭.৫ গ্রাম প্রতি ডেসিলিটার। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের জন্য হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক ১২ থেকে ১৫.৫ গ্রাম ডেসিলিটার।আর গর্ভবতী নারীর জন্য ১১ বা তার বেশি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা সাধারণ এবং স্বাভাবিক বলে মনে করা হয় তবে এর থেকে কম হলে রক্ত দিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত থাকা দরকার

গর্ভাবস্থায় নারীদের একটি প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়া। আর এই সমস্যার সম্মুখীন প্রায় কমবেশি সকল মহিলাই হয়ে থাকেন। কারো কারো ক্ষেত্রে বাচ্চা প্রসবের পূর্বে বিভিন্ন রকম ঔষধ এবং বিভিন্ন রকম খাবার খেয়ে শরীরে হিমোগ্লোবিন এর ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়।  

আবার কারো কারো ক্ষেত্রে এই ঘাটতি পূরণ হয় না তার ফলে সেই গর্ভবতী মহিলাকে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমাদের মতে বাইরে থেকে রক্ত দেওয়ার থেকে বেশি ভালো হচ্ছে নিজের শরীরেই রক্ত তৈরি করা।  

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার শরীরে যখন ১২ থেকে ১৫ গ্রাম/ডিএল রক্ত থাকে তখন বলা হয় সেই মহিলার শরীরে সঠিক পরিমাণ রক্ত রয়েছে। কিন্তু একজন গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রে দেখা যায় যে যদি কোন গর্ভবতী মহিলার শরীরে ১১ গ্রাম/ডি এল এর বেশি রক্ত থাকে তাহলেই তাকে স্বাভাবিক ধরা হয়ে থাকে। যদি এর থেকে কম থাকে তাহলে বলা হয় যে শরীরে রক্তের ঘাটতি রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভাবস্থায় শরীর দুর্বল হলে করণীয় - গর্ভাবস্থায় ক্লান্তির চিকিৎসা

হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা (গ্রাম/ডেসিলিটার)

হিমোগ্লোবিনের (Hemoglobin) মাত্রা বয়স এবং লিঙ্গের ভিত্তিতে পরিবর্তিত হয়। নিচে বয়স অনুযায়ী হিমোগ্লোবিনের স্বাভাবিক মাত্রা দেওয়া হলো:

  • নবজাতক (১-২ দিন) = 14-24 g/dL
  • নবজাতক (১ সপ্তাহ) = 13-20 g/dL
  • নবজাতক (১ মাস) = 10-18 g/dL
  • ৬ মাস – ১ বছর = 10.5-14 g/dL
  • ১-৫ বছর = 11-14 g/dL
  • ৬-১২ বছর = 11.5-15.5 g/dL
  • ১৩-১৮ বছর (মেয়ে) = 12-16 g/dL
  • ১৩-১৮ বছর (ছেলে) = 13-16 g/dL
  • প্রাপ্তবয়স্ক নারী = 12-15.5 g/dL
  • প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ = 13.5-17.5 g/dL
  • গর্ভবতী নারী = 11-12 g/dL
  • বয়স ৬৫+ (নারী) = 11.7-13.8 g/dL
  • বয়স ৬৫+ (পুরুষ) = 12.4-14.9 g/dL

গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন খাবারে

আমাদের আশেপাশে বেশ কিছু খাবার রয়েছে যে সকল খাবার সঠিক পরিমাণে খেলে আমাদের শরীরে কখনোই হিমোগ্লোবিন এর ঘাটতি দেখা যাবে না। অর্থাৎ সে সকল খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ সঠিক থাকবে।  এখন আমরা আমাদের আর্টিকেলের এই অংশে আপনাদের সাথে আলোচনা করব গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন কোন খাবার খেলে।

প্রাণীজ জাতীয় খাদ্যঃ যে সকল খাবারে প্রাণীজ পদার্থ উপস্থিত রয়েছেন সেই সকল খাবার আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। যেমনঃ কলিজা, দুধ, ডিম, মাংস ইত্যাদি। গর্ভাবস্থায় এই সকল খাবার খেলে শরীরে হিমোগ্লোবিন এর পরিমাণ বৃদ্ধি হবে এবং রক্তস্বল্পতা দেখা দেবে না।

সামুদ্রিক মাছঃ আমরা মাছ ভাতে বাঙালি। ভাতের সাথে এক টুকরো মাছ পেলেই আর কোন কিছু প্রয়োজন পড়ে না। কিছু কিছু মাছ রয়েছে যে সকল মাছ আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে অনেক বেশি সাহায্য করে। তাই বলে সব ধরনের মাছ নয়। 

যেই সকল মাছ সমুদ্রে পাওয়া যায় বলতে গেলে সামুদ্রিক মাছ। তাই গর্ভাবস্থায় যদি কোন মহিলা সামুদ্রিক মাছ খায় তাহলে তার রক্তস্বল্পতার সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।

রঙিন শাক সবজি ও ফলমূলঃ কিছু কিছু ফল রয়েছে যেই সকল ফলে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ক্যালসিয়াম। যা আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সবথেকে বেশি কার্যকরী। 

আপনার শরীরে রক্তের স্বল্পতার কারণে বিভিন্ন রকম লক্ষণ দেখা দিলে এগুলো ফল অথবা শাকসবজি খেতে পারেন। যেমনঃ আপেল, বিটরুট, ডালিম ইত্যাদি।

গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায়

একজন নারী যখন গর্ভবতী হয় তখন কিন্তু তার নানা রকমের সমস্যা হয় এর মধ্যে অন্যতম সমস্যা গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করা। এটি বিশ্বব্যাপী সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা এজন্য স্বল্প উন্নত দেশগুলোতে গর্ভকালীন রক্তশূন্যতার জন্য ২০ শতাংশ নারীর মৃত্যু হয়ে থাকে।

যার ফলে আপনাদের যদি কারো গর্ভবতী অবস্থায় রক্তশূন্যতা দেখা দেয় তখন কিন্তু গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে এবং সেই উপায় গুলো মেনে সেই গর্ভবতী মাকে যত্ন নিতে হবে। গর্ভধারণের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের শতকরা 10 গ্রামের কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। 

এছাড়াও কলিজা, মাংস, ডিম, সবুজ শাক-সবজি, মাটরশুটি, কলা, পেয়ারা, আনারের মতো আমি ভিটামিন ও আয়রন সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। খাদ্যতালিকা আয়রন যুক্ত খাবার নিয়মিত রাখতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আয়রন ট্যাবলেট খেতে হবে।

কোন সংক্রমণ থাকলে দূরত্ব চিকিৎসা করাতে হবে গর্ভকালীন সময় নিয়মিত চেকআপ করতে হবে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতি তিন মাস অন্তরের অন্তর একবার করে হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করতে হবে। রক্তস্বল্পতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে। সুস্থ শিশুর জন্মের প্রধান শর্ত মায়ের পূর্ণ সুস্থতা তাই উভয়ের সার্বিক সুস্থতার জন্য গর্ভবতী মায়ের সুস্থতা নিশ্চিত করতে হবে।

গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার লক্ষণ

  • গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার ফলে কিন্তু গর্ভবতী মায়ের নানা রকমের শরীরে জটিলতা সৃষ্টি হয় অতিরিক্ত রক্তস্বল্পতা কমে যাওয়ার কারণে রক্তের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ৭ এর কম হলে মা ও গর্ভে শিশুর বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে এর মধ্যে রয়েছে প্রি-একলাম্পসিয়া, কার্ডিয়া ফেইিউর, রোগ সংক্রমণ ও প্রসাপ পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ। 
  • ঘন ঘন ক্লান্তি অনুভব ও মাথা ঘোরা
  • শরীরে দুর্বলতা দেখা দেয়
  • শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা হওয়া
  • দ্রুত বা অনিয়মিত হৃদ স্পন্দন
  • বুকে ব্যথা হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
  • ঠোঁটের কোণে ক্ষত, জিহ্বায় ঘা।
  • মুখ ফ্যাকাসে হওয়া ও চোখ সাদা হয়ে যাওয়া
  • পা ফুলে যেতে পারে ওবুক ধরফর করে।
আরো পড়ুনঃ-  গর্ভবতী হওয়ার জন্য সহবাসের নিয়ম জানুন

গুরুত্ব এই লক্ষণ গুলো প্রাথমিকভাবে হালকা হতে পারে তবে এগুলো উপেক্ষা করলে পরবর্তী সময়ে ঝুকের কারণ হয়ে যায় সাথে সাথে লক্ষণগুলো দেখা দিলে খারাপ দিকে যেতে পারে এই জন্য লক্ষণের উপসর্গ কোনটা দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে এবং সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে

গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতার কারণ

গর্ভবতী নারীদের প্রায় সময়ই শোনা যায় গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতার কারণ হয়েছে,এর কারণ হিসেবে কিন্তু নানা রকমের সমস্যা হতে পারে শরীলে ভিটামিনের ঘাটতি বিশেষ করে ভিটামিন বি ১২ এর ঘাটতির কারণে প্রয়োজনীয় আয়রনের অভাব হলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়। 

লিউকোমিয়া দেখা দিলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলেও শরীর থেকে রক্ত কমে যেতে পারে। এবং সাথে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যেতে পারে যে ধরনের গুরুত্ব রোগ যেমন ক্যান্সারের, পাইলস,লিভার ইত্যাদি কারনে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায়। 

গর্ভকালীন শরীরে ক্যালরি সঙ্গে লৌহ বা আয়রনের চাহিদা বৃদ্ধি পায় চাহিদা মতো যখন লোভবা আয়রন শরীরের না পাওয়া যায় তখনই রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। স্বাভাবিক একজন গর্ভবতী নারীর দেহে রক্তের পরিমাণ ১৫ থেকে ২০% থাকে রক্তে তরলের পরিমাণ ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায় এবং শরীল বৃত্তীয় রক্তশূন্যতা হতে পারে। একজন গর্ভবতী নারীর রক্তে যদি হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ 11 এর কম থাকে সেক্ষেত্রে এই অবস্থাকে গর্ভবতী রক্তশূন্যতা বলা হয়।

কারণ :গর্ভধারণের কারণে রক্তস্বল্পতা হতে পারে কারণ এই সময় শরীরের জলীয় উপাদান বেড়ে যায়তখন রক্তে লোহিত কণিকা কম তৈরি হয় সে কারণে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।গর্ভাবস্থায় আগে থেকে রক্তস্বল্পতা থাকতে পারে গর্ব অবস্থায় পর সেটি বেড়ে যেতে পারে।আয়রন যুক্ত খাবার কম খেলে রক্তশূন্যতা হয়।গর্ভাবস্থায় বমি হওয়াকেও রক্তশূন্যতার জন্য দায়ী করা হয়।

ভুল খাদ্য অভ্যাস অর্থাৎ সুষম সঠিক খাবার না খাওয়ার কারণে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এর প্রভাব তো হবেই আবার অনেক গর্ভবতী মা জাং ফুড বা পচনশীল খাবার খেয়ে থাকেন। এটি রক্তশূন্যতার ঝুঁকি তৈরি করে আমরা স্বাভাবিক ভাবে জানি লাল শাক,কচুর শাক, ছোট মাছ, ডিম, শিং মাছ, কলা কাঁচা, আনারের মতো খাদ্যে আয়রন রয়েছে।

প্লেটের অভাবে রক্তশূন্যতা হয়, ফুলেট হলো এক ধরনের ভিটামিন বি যা শরীরের নতুন কোষ তৈরি করতে দরকার হয় এটি রক্তের লোহিত কণিকা গঠনে সহায়তা করে গর্ব অবস্থায় চাহিদা বাড়ে ফুলেটের অভাবে স্বাস্থ্যকর লোহিত কণিকার পরিমাণ কমে যেতে পারে যার কারণে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।

আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এছাড়াও লোহিত কণিকা সময়ের আগে ভেঙ্গে গেলে রক্তশূন্যতা হয়।দীর্ঘদিন নানা রোগ যেমন কিডনি ড্যামেজ বা অকেজো লিভার অকার্যকর, থাইরয়েড, গ্রন্থির সমস্যা,যক্ষা সহ নানা রকমের রোগের কারণে রক্তস্বল্পতা হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কমে গেলে করণীয়

সাধারণত পুরুষের তুলনায় নারীদের রক্তে হিমোগ্লোবিন কম থাকে।আর গর্ভাবস্থায় এই সমস্যাটি প্রকট হয়ে যায়।বিশেষজ্ঞরা অনেক সময় শিশু সুস্থ ভাবে গর্ভে বেড়ে উঠতে গর্ভবতী নারীকে রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।কারণ আমাদের দেহের কোষ গুলোকে সক্রিয় এবং কর্মক্ষম রাখতে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকা খুবই জরুরী।

রক্তে হিমোগ্লোবিনে মাত্রা কম হলে,কিছু সিমটম দেখা দিতে পারে।যেমন চেহারা ফেকাসে আছে দেখায়,সারাক্ষণ ক্লান্তি লাগে,সামান্য পরিশ্রমে কষ্ট হয়।খাবারে অরুচি থাকে। সবকিছুতেই মনোযোগের অভাব দেখা যায়।হজমে অসুবিধা হয়, বুক ধরফর করে,জিব্বা মুখে ঘা হতে পারে ইত্যাদি।আবার কখনো কখনো শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।

গর্ভাবস্থায়ী হিমোগ্লোবিন কমে গেলে এর করনীয় ও প্রতিকার।

শরীরের রক্ত চাহিদা পূরণ করতে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কিছু খাবার খেলে উপকার পাওয়া যায়।এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন সি।

১।  ভিটামিন সি

এর অভাবে হিমোগ্লোবিন কমে যেতে পারে।তাছাড়াও ভিটামিন সি ছাড়া আয়রন শরীরে পুরোপুরিভাবে শোষণ হয় না।আমলকি পেঁপে বাতাবি লেবু কমলালেবু স্ট্রবেরি গোলমরিচ ব্লকলি আঙ্গুর টমেটো ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে।তাই গর্ভাবস্থায়ী এই খাবারগুলো শুরু থেকে খাওয়ার চেষ্টা করবেন।

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা - কলা খেলে কি হয়

২। আয়রন

হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে লোহা বা আয়রনের গুরুত্ব অনেক বেশি।দেশি মুরগির কলিজা।কচু শাক লাল মাংস,চিংড়ি পালং শাক খেজুর ইত্যাদি ইত্যাদি খাবারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। তাই গর্ভাবস্থায় এসব খাবার গর্ভাবস্থায় শুরু থেকেই খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।আইরন ক্যালসিয়াম কার্বহাইড্রেট এবং ফাইবার সংযুক্ত বেদনা হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে।

তাই চেষ্টা করবেন প্রতিদিন একটি করে বেদানা খাবার।প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলেও রক্ত হিমোগ্লোবিনে মাত্রা ঠিক রাখে।আয়রনের উৎস আপেলে আরো নানান প্রকার পোস্টটি উপাদান রয়েছে।তাই প্রতিদিন খোসা সহ একটি আপেল খান।

৩। মধু

এছাড়াও মধু আয়রনের একটি ভালো উৎস।আয়রন ছাড়াও মধুতে কপার ও ম্যাঙ্গানিজ আছে। এর উপকরণগুলো দেহে গিয়ে প্রচুর পরিমাণ হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য করে।

৪। দুধ ও ডিম

গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণ আপনাকে দুধ এবং ডিম খেতে হবে।হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ জেনে খাবার এবং ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে গর্ভাবস্থার শুরু থেকে আপনাকে এসব মেনে চলতে হবে।নিজের এবং বাচ্চার ভালোর জন্য এসব আপনাকে করতে হবে।গর্ভবতী মায়ের খাবার এবং বিশ্রামের ব্যাপারে শুধু মাই নয় গর্ভ অবস্থায় শুরু থেকেই পরিবারের সকল সদস্যর লক্ষ রাখতে হবে।তার সকল ব্যাপারে নজর রাখতে হবে।

হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন মাছে

আপনার যদি হিমোগ্লোবিন কম হয়ে যায় তাহলে কিন্তু অবশ্যই খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনতে হবে খাদ্য তালিকায় এমন সকল খাবার রাখতে হবে যে খাবারগুলো খেলে রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি পাবে। রক্তের হিমাগুলো বৃদ্ধি করার জন্য কিন্তু আপনারা সামুদ্রিক মাছ খেতে পারেন। হিমোগ্লোবিন বাড়ে কোন মাছে এই সম্পর্কে আপনাদের অনেকেরই জানার আগ্রহ ছিল তাহলে আপনারা বুঝতে পারছেন।

সামুদ্রিক মাছের মধ্যে রয়েছে আয়রন যার ফলে আপনি রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করতে পারবেন। সামুদ্রিক মাছ ও বিভিন্ন খাবারে পাওয়া যায় আয়রন এবং অন্যান্য খনিজ পুষ্টি। তাই যাদের আগে থেকেই অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা রয়েছে তারা নিয়মিত চিংড়ি, কাঁকড়া সহ বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ খেতে পারেন এতে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়বে।

রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে নানা রকমের সমস্যা দেখা দেয় দুর্বলতা, নিঃশ্বাসের সমস্যা, মাথাব্যথা, মাথা ঘুরানো, হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, আবার হার্টবিট বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। তাই নিয়মিত যে সকল খাবারের মধ্যে হিমোগ্লোবিন রয়েছে সেই খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।

গর্ভবতীর রক্ত কম থাকলে গর্ভের বাচ্চার কি হয়

বিশ্বের স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে অনু রবিনের মাত্রা ১১ পয়েন্টকম থাকলে গর্ভকালীন সময়ে রক্তস্বল্পতা বলা হয়। উন্নত দেশের শতকরা ৩০ থেকে ৪০ ভাগ গর্ভবতীদের মধ্যে রক্তস্বল্পতা দেখা যায়। যেখানে আমাদের দেশে ৮০% নারী এই সমস্যায় ভুগেন। গর্ভকালীন সময় রক্তস্বল্পতা কেন হয়।

এর ফলে কি কি সমস্যা হতে পারে এবং। এটি নিরাময় করনীয় সম্পর্কে আজকের আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করব। গর্ভকালীন রক্তস্বল্পতার কারণ।আইরন আমির ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়া।গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ ঘটলে। পারিবারিক ইতিহাসের কারণে অনেকর হিমোগ্লোবিন কম থাকে।ম্যালেরিয়া যক্ষা মূত্রনালী সংক্রমণ ঘটলে। প্রাকৃতিক কারণ। গর্ভবতীদের এমনিতেই হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন অন্যান্য সময়ের থেকে কিছুটা কম থাকে।

লেখকের শেষ মতামত

সাধারণত পুরুষের তুলনায় নারীদের রক্তে হিমোগ্লোবিন কম থাকে।আর গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা আরও বেশি দেখা যায়।হিমোগ্লোবি হলো রক্ত একটি জটিল প্রোটিন।যা শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইড সরবরাহের সাহায্য করে থাকে।অনেক সময় গর্ভের শিশু সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে গর্ভবতী নারীকে রক্ত দেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

কারণ দেহের কোষগুলোকে সক্রিয় এবং কর্মক্ষম রাখতে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকাটা অত্যন্ত জরুরী।গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১১.৫ হওয়া স্বাভাবিক।গর্ভাবস্থায় যে কোন টাইম স্টার মায়ের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১১ এর উপরের হলে মায়ের জন্য ভালো।

এজন্য দেখা যায় যে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১০ থেকে ১০.৯ মধ্যে হয় তাহলে এটি মায়ের এনিমিয়া বা স্বল্পমাত্রায় রক্তশূন্যতা বলা হয। রক্তে হিমোগ্লোবিনে মাত্রা কম হলে,কিছু সিমটম দেখা দিতে পারে।যেমন চেহারা ফেকাসে আছে দেখায়,সারাক্ষণ ক্লান্তি লাগে,সামান্য পরিশ্রমে কষ্ট হয় ও খাবারে অরুচি থাকে।

এই ছিল আজকের গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় সম্পর্কিত সকল তথ্য এখানে সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন।

তো বন্ধু আশা করছি আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ে গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও গর্ভাবস্থায় হিমোগ্লোবিন কত হলে রক্ত দিতে হয় সম্পর্কে জানতে পারবে। ধন্যবাদ।

Leave a Comment