গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে – বাচ্চা পেটের ভিতর কিভাবে থাকে

গর্ভবতী মায়েরা গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে তা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। তারা নিয়মিত জানতে চান বাচ্চা পেটের কোন দিকে থাকে সে সম্পর্কে। অনেক গর্ভবতী মায়েরা জানেন না বাচ্চা পেটের ডান পাশে নড়াচড়া করলে কি হয়। আজকের আর্টিকেলটিতে গর্ভবতী মায়েদের প্রত্যেকটি অজানা প্রশ্নের সঠিক উত্তর সম্পর্কে থাকছে বিস্তারিত।

গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে

গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে এটি জানলে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন আপনার গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে কোনটি হতে যাচ্ছে। আপনার গর্ভের সন্তান সুস্থ আছে কিনা।  

আপনি যদি একজন গর্ভবতী মা হয়ে থাকেন কিন্তু গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে তা জেনে না থাকেন তাহলে আপনার জন্য জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়েন তাহলে ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ এবং গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে এর পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় খালি পেটে থাকলে কি হয় এরকম বিভিন্ন রকমের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন এই আর্টিকেলে।

গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে

আমরা অনেকে জানি না গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে সে সম্পর্কে। গর্ভাবস্থায় মায়েদের মনে এরকম কৌতুহলী আসে আসলে গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে। প্রথম অবস্থায় গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের মাঝামাঝি অবস্থান করে। এরপর বাচ্চার বয়স বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে বাচ্চা পেটের চারিদিকে জায়গা দখল করতে থাকে। 

বাচ্চার বয়স কম থাকা অবস্থায় বাচ্চা পেটের মাঝখানে থাকে। এরপর বাচ্চার বয়স বেশি হলে এবং তার আকার বৃদ্ধি পেলে বাচ্চা পেটের চারিদিকে ছড়িয়ে যায়। যদি ছেলে বাচ্চা হয় সে ক্ষেত্রে পেটের ডান দিকে কিছুটা বেশি অংশ দখল করে থাকে। যদি পেটের সন্তান মেয়ে হয় সে ক্ষেত্রে বাচ্চা কিছুটা বামদিকে বেশি অংশ দখল করে থাকে। 

তবে দিনের অধিকাংশ সময় বাচ্চা তার পজিশন পরিবর্তন করতেই থাকে। কখনো ডানে কখনো বামে অথবা কখনো পেটের মাঝখানে। গাইনি চিকিৎসকদের মতে, বাচ্চা পেটের যেকোনো পাশে থাকতে পারে। তবে ছেলে সন্তান হলে কিছুটা ডানে এবং মেয়ে সন্তান হলে কিছুটা বামে বেশি অবস্থান করে। বাচ্চা জন্মগ্রহণ এর সময় হলে ধীরে ধীরে বাচ্চা নিচের দিকে নামতে শুরু করে। 

এবং সঠিক সময় বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে। ৩২ থেকে ৩৮ সপ্তাহ হলে বাচ্চার মাথা নিচের দিকে রেখে পা কুঁচকে নেয়, এতে শিশু জন্মগ্রহণ এর সুবিধা হয়। তবে এক এক ক্ষেত্রে এটি ভিন্ন রকম হতে পারে। বাচ্চা পেটের যেকোনো পাশে অবস্থান করতে পারে। কোন পাশে দীর্ঘ সময় ও কোন পাশে স্বল্প সময়ের জন্য। 

বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভাবস্থায় বাচ্চার তিনটি পজিশনে পরিবর্তন করে থাকে। প্রথমত শীর্ষবিন্দু পজিশন এবং দ্বিতীয়ত শীর্ষবিন্দু অবস্থানে এবং শেষে বাচ্চা যে অবস্থানে থাকে সেটি হচ্ছে বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গে। বিশেষ করে বাচ্চার হাত ও পা পেটের সামনের দিকে থাকে যা দিয়ে মায়ের পেটে স্পর্শ করে এবং মা সেটা টের পাই।

তবে গর্ব অবস্থায় প্রথমের দিকে বাচ্চা সাধারণত পেটের মাঝখানে অবস্থান করে এরপর বাচ্চা যখন আস্তে আস্তে বড় হয় তখন বাচ্চা নিজে নিজেই পেটের ভিতর বিভিন্ন জায়গায় নড়াচড়া করে অবস্থান করে যার ফলে বলা যায় বাচ্চা পেটের বাম পাশে এবং ডান পাশে উভয় পাশে থাকে। আশা করি গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।

গর্ভাবস্থায় ছেলে বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে

আমরা গর্ভের বাচ্চা ছেলে হবে নাকি মেয়ে হবে তা জানতে বেশ কৌতুহলী হয়ে উঠি। আল্ট্রাসনোগ্রাম বা কোন পরীক্ষা ছাড়াই বা পরীক্ষা করার সময় হওয়ার আগেই জানতে খুব ইচ্ছে করে গর্ভের বেড়ে ওঠা সন্তানটি ছেলে নাকি মেয়ে। প্রচলিত কিছু ধারণা থেকে আপনি এ সম্পর্কে একটা আইডিয়া নিতে পারবেন কেননা প্রচলিত ধারণা বা কুসংস্কার গুলোর গ্রহণযোগ্যতা নেহায়েত কম নয়।

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয় - গর্ভাবস্থায় ডান পাশে ঘুমালে কি হয়

প্রায় ৬০ থেকে ৭০% মানুষের বেলায় সঠিক ফল দেয় যদিও এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই এটা অনেক পুরনো দাইমাদের গল্প। চলুন তাহলে গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে এবং গর্ভাবস্থায় মেয়ে বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে এর প্রচলিত ধারণা এবং বিজ্ঞান কি বলে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

  • আপনার গর্ভে যদি ছেলে বাচ্চা থাকে তাহলে ভুড়িটা নিচের দিকে ঝুলে যাবে।
  • যদি একটু নিচের দিকে হয়ে গোল একটা বলের আকারে ফুলতে থাকে তাহলে ভাবী সন্তান ছেলে হয়।
  • আপনার পেটটি দেখতে কেমন লাগছে বাস্কেটবলের মত না তরমুজের মত যদি সেটা বাস্কেটবলের মত দেখায় সেটা লক্ষণ ছেলে সন্তানের।
  • গর্ভাবস্থায় পেট যদি কম ভারী অনুভূতি হয় তাহলে ছেলে সন্তান হবে।
  •  আর যদি সমস্ত পেটজুড়ে বা বামদিকে অনুভূত হয় তাহলে ছেলে হবে।

বিজ্ঞান যেটা বলেঃ আসলে সত্যিটা কি? গর্ভাবস্থায় পেটের আকার কেমন হবে সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের উপর যেমনঃ 

  • মায়ের পেটের পেশী 
  • পেশী দৃঢ়তা 
  • মায়ের পেটের আকারের উপর 
  • গর্ভস্থ সন্তানের আকার মায়ের শারীরিক গঠন 
  • মায়ের গর্ভের সন্তানের অবস্থান 
  • ইউটেরাসে কতটা ফ্লুইড আছে

উপরে উল্লেখিত এগুলার ওপর মূলত গর্ভাবস্থায় পেটের আকার কেমন হয় তা নির্ধারিত হয়ে থাকে। যারা আগে মা হয়ে গিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে পেট নিচের দিকে এসেই ফুলে ওঠে এর কারণ তাদের পেটের পেশি আগে থেকেই শিথিল হয়ে আছে।

গর্ভাবস্থায় মেয়ে বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে

অনেকেই জানতে চেয়ে থাকে তার গর্ভের বাচ্চা যদি মেয়ে বাচ্চা হয় তাহলে পেটের কোন পাশে থাকবে। কারণ অনেকেই জানতে চাই গর্ভে বাচ্চা থাকাকালীন মেয়ে বাচ্চা নাকি ছেলে বাচ্চা। উপরের অংশে ইতিমধ্যে আপনাদের জানিয়েছি গর্ভাবস্থায় ছেলে বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে। 

চলুন তাহলে গর্ভাবস্থায় মেয়ে বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে জেনে নেওয়া যাক যদিও এটি আগে যুগের মানুষের কথা আর এই কথায় কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই।

  • যদি আপনার গর্বের বাচ্চাটা কন্যা হয় তাহলে উপরের দিকে ভুড়িটা বেশি হয়।
  • আবার যদি হবু মায়ের পেট বেশ ছড়িয়ে প্রায় পেটের পুরো অংশ নিয়েই ফুলে ওঠে তাহলে গর্ভের সন্তান মেয়ে হয়।
  • যদি আপনার পেট দেখায় তরমুজের মতো তাহলে সেটা হতে পারে কন্যা সন্তানের লক্ষণ।
  • গর্ভাবস্থায় পেট বেশি ভারী মনে হলে মেয়ে শিশু হবে।
  • শিশুটি যদি পেটের ডান দিকে আছে বলে মনে হয় তাহলে মেয়ে হবে।

আর যদি আপনি এই আগে যুগের মানুষের কথা বিশ্বাস না করেন তাহলে আপনি আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করে খুব সহজেই জেনে নিতে পারবেন আপনার গর্ভে বাচ্চাটি মেয়ে বাচ্চা নাকি ছেলে বাচ্চা এবং আপনার মেয়ে বাচ্চা পেটের কোন পাশে রয়েছে বিস্তারিত ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিতে পারবেন।

বাচ্চা পেটের কোন দিকে থাকে

বাচ্চা পেটের কোন দিকে থাকে তা অনেকে জানেন না। বাচ্চা পেটের উভয় পাশেই থাকে। প্রথম অবস্থায় বাচ্চা পেটের মাঝখানে এবং বাচ্চার বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বাচ্চা পুরো পেটের চারিদিকে ছড়িয়ে থাকে। কখনোবা ডানে কখনো বামে এবং বাচ্চার বয়স বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে বাচ্চা নিচের দিকে নামতে থাকে। এরপর সঠিক সময়ে বাচ্চা জন্মগ্রহণ করে। 

গর্ভাবস্থায় প্রথম দিকে এই পরিবর্তন কিছুটা কম বোঝা যায়। তবে গর্ভাবস্থায় শেষের দিকে আপনি এই পরিবর্তন সবচেয়ে বেশি বুঝতে পারবেন।

বাচ্চা ডান পাশে নড়াচড়া করলে কি হয়

বাচ্চা ডান পাশে নড়াচড়া করলে কি হয় তা নিয়ে অনেক গর্ভবতী মায়েরা চিন্তিত থাকেন। বাচ্চা ডান পাশে নড়াচড়া করলে এটি আপনার শিশুর জন্য স্বাভাবিক বিষয়। কেননায় শিশু যখন সুস্থ থাকে তখন শিশু স্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করে। দুর্বল ও অসুস্থ শিশু কম নড়াচড়া করে। 

তবে পেটের ডান দিকে যদি অতিরিক্ত নড়াচড়া করে তাহলে সেক্ষেত্রে, আপনার শিশুটি ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তবে এটি কখনোই নিশ্চিত ভাবে ধরে নেওয়া যাবে না যে গর্ভের সন্তানটি ছেলে হবে। তবে পেটের ডান পাশে বেশি নড়াচড়া করলে সন্তান ছেলে হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। 

আপনার গর্বের সন্তান ডান পাশে নড়াচড়া করলে যদি আপনার ঘুমানোর চলাফেরার বিশ্রামের সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে বাম পাশে কাত হয়ে বিশ্রাম করুন।  আপনার এই বিষয়গুলো যদি অস্বাভাবিক মনে হয় অথবা প্রত্যেকটি বিষয় যদি অতিরিক্ত হয় সে ক্ষেত্রে একজন গাইনি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়

নাভি কেমন হলে ছেলে হয়

নাভি কেমন হলে ছেলে হয় এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। নাভি কেমন হলে ছেলে হয় এর কোন পরীক্ষিত প্রমাণ নেই। নাভির আকার ও অবস্থানের ভিত্তিতে ছেলে অথবা মেয়ে সন্তান নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে গ্রাম্য মহিলারা দীর্ঘদিন ধরে গর্ভবতী মহিলাদের দেখে, তাদের সম্পর্কে জেনে যে সঠিক বিষয়গুলো প্রকাশ করেছেন তা হলো নাভির আকার ছোট হলে ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। অন্যদিকে নাভির আকার বড় হলে মেয়ে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ

নিজের শরীরে একটা প্রাণের তিলে তিলে বেড়ে ওঠার মতো অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারেন না অনেক হবু মায়েই ভয় আনন্দ উৎকণ্ঠ মিলিয়ে এক মিশ্র অনুভূতি কাজ করে সকলের মধ্যে সঙ্গে থাকে একটা জিনিস জানার কৌতূহল গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে। মা খালাদের দেওয়া টোটকা দিয়ে খুব সহজেই আপনি বুঝতে পারবেন ছেলে নাকি কন্যা সন্তানের জননী হতে চলেছেন আপনি। চলুন তাহলে ছেলে সন্তান হওয়ার লক্ষণ সমূহ জেনে নেওয়া যাক।

পেটের আকারঃ আপনার পেট যদি দেখেন নীচের দিকে বেশি ঝুঁকে গেছে তাহলে বুঝবেন আপনার ছেলে সন্তানের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইউরিণের রংঃ অনেক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে গর্ভ অবস্থায় মায়ের প্রসবের রঙ যদি হলদে গারো হয় বুঝতে হবে ছেলে সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

ব্রেস্টের মাপঃ গর্ভাবস্থায় মায়ের ব্রেস্টের মাপ এমনিতেই বেড়ে যায় কারণ এই সময় মায়ের শরীরে দুধের পরিমাণ বাড়তে থাকে। সাধারণত এই সময় ডান দিকের থেকে বাঁদিকের ব্রেস্ট একটু বেশি ভারী হয় তবে আপনার ক্ষেত্রে যদি উল্টো ঘটনাটা ঘটে তাহলে নিশ্চিত থাকুন আপনার ছেলে হতে চলেছে।

পায়ের পাতা ঠান্ডা হয়ে যাওয়াঃ এমন ধরনের লক্ষণে বহিঃপ্রকাশ ঘটলে মনে সন্দেহ রাখবেন যে ছেলে সন্তানের জন্ম হতে চলেছে।

হার্টের রেট ওঠা নামাঃ গর্ভাবস্থায় প্রায়শই চিকিৎসকরা বাচ্চার হার্ট রেট মেপে থাকেন এই সময় যদি দেখা যায় বাচ্চার হার্টের প্রতি মিনিটে ১৪০ বিট রয়েছে তাহলে মনে কোন সন্দেহ রাখবেন না যে ছেলে ব্যবসায় জন্ম নিতে চলেছে।

চুলের ঘনত্বে পরিবর্তন আসবেঃ মায়ের চুলের বৃদ্ধির হার দেখেও বলে দেওয়া সম্ভব ছেলে হতে চলেছে না মেয়ে। একাধিক গবেষণা করে দেখা গেছে মায়ের চুলের ঘনত্ব যদি স্বাভাবিকের থেকে বেশি হয় তাহলে কোন সন্দেহ থাকে না যে আসন্ন বাচ্চা ছেলে হতে চলেছে।

ক্ষুধা বেশি লাগাঃ গর্ভাবস্থায় খিদে কি খুব বেড়ে গেছে ছেলে সন্তান হওয়ার আগে এমনই সব লক্ষণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে।

ঘুমানোর অবস্থানঃ কোন দিকে ফিরে ঘুমাচ্ছেন খেয়াল করুন। এই সময় মা এতটাই ক্লান্ত থাকেন যে শোয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘুম চলে আসে তার পক্ষে এটা বোঝা সম্ভবই হয় না যে কোন দিকে ফিরে তিনি ঘুমাচ্ছেন এক্ষেত্রে এই কাজটি করতে হবে স্বামীকে যদি দেখেন আপনার স্ত্রী বাদিকে ফিরে ঘুমাচ্ছে তাহলে আশা রাখতে পারেন যে আপনাদের ছেলেই হবে।

ওজন বৃদ্ধিঃ পেটে ছেলে সন্তান থাকলে গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন স্বাভাবিকের থেকে অনেক গুণ বেড়ে যায় এবং পেটটা একটু অতিরিক্ত মাত্রায় ফোলা মনে হয়।

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া কখন বোঝা যায়

যারা প্রথমবারের মতন প্রেগন্যান্ট হয়েছেন কিংবা গর্ভাবস্থায় আছেন তাদের খুবই একটা উৎসাহের বা খুবই একটা জানার ইচ্ছা সেটা হচ্ছে কখন আমি বাচ্চা নড়াচড়ার টের পাব। যে প্রথম গর্ভধারণ করেছেন যিনি আগে কখনো মা হননি তাদের ক্ষেত্রে ৫ মাসের সময় বাচ্চার নড়াচড়া বোঝা যায়। প্রথম দিকে বাচ্চার নড়াচড়া টা খুব মৃদু নাড়াচড়া দিয়ে থাকে।

তারপর আস্তে আস্তে যতদিন যাবে তত বাচ্চার নড়াচড়া আরো ভালোভাবে বোঝা যাবে অর্থাৎ যখন ৭-৮ মাসের দিকে চলে যাবে তখন বাচ্চার বেশি নড়াচড়া টের পাবেন। আশা করি আপনি গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া কখন বোঝা যায় তা জানতে পেরেছেন এবং এবার থেকে আপনি মনে হয় বাচ্চার নড়াচড়ার অপেক্ষায় রইবেন শুভকামনা রইল।

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার নড়াচড়া বোঝার উপায়

গর্ভাবস্থায় আপনি প্রথম অবস্থায় খুব একটা নড়াচড়া বুঝতে পারবেন না। তবে ১৮-২৫ সপ্তাহ থেকে শিশু নড়াচড়া অনুভব করতে পারবেন। প্রথম অবস্থায় আপনার পেটে গ্যাসের অনুভূতি হতে পারে। প্রথম অবস্থায় অস্পষ্ট ভাবে পেট মোটর দেওয়া পেটে স্পষ্ট লাথি ও মোচড়ের মত অনুভব করবেন। ২৮ সপ্তাহ পরে দিনে কমপক্ষে ১০ বার নড়াচড়া অথবা এর চাইতে বেশি নড়াচড়া করতে পারে। আপনার শিশুর যদি নড়াচড়া একেবারেই কম হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা - কলা খেলে কি হয়

জরায়ু পেটের কোন পাশে থাকে

জরায়ু কে গর্ভাশয়ও বলা হয়ে থাকে। অনেক মহিলারাই জানতে চেয়ে থাকে মহিলাদের জরায়ু পেটের কোন পাশে থাকে। জরায়ু হলো একটি ফাঁপা, নাশপাতি আকৃতির অঙ্গ যা একজন মহিলার তলপেটে মূত্রাশয় এবং মলদ্বারের মধ্যে অবস্থিত থাকে। অনেকেই বলে থাকে জরায়ু পেটের বাম দিকে অথবা ডানদিকে হয়ে থাকে বরং এটি ডান এবং বাম কোন দিকেই থাকে না বরং এটি অঙ্গ গুলোর মধ্যে আরো গভীরে অবস্থান করে।

জরায়ু পেটের কোন পাশে থাকে আরেকটু আপনাদের সহজ ভাষায় বলি। একজন মহিলার পেটের নিচে যে তলপেট থাকে এবং মুত্রাশয় অর্থাৎ মূত্রথলী এবং প্রসাবের রাস্তায় যেখানে দিয়ে শুরু হয়েছে ঠিক তার মাঝখানে গভীরে অঙ্গের মধ্যে জরায়ু অবস্থান করে। আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন এখন জরায়ু পেটের কোন পাশে থাকে এবং কোন পাশে অবস্থান করে।

বাচ্চা পেটের ভিতর কিভাবে থাকে

অনেক গর্ভবতী মহিলাদের মনে একটি কমন প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে সেটি হচ্ছে বাচ্চা পেটের ভিতর কিভাবে থাকে। গর্ভাবস্থায় ৩৬ নাগাদ বেশিরভাগ শিশুই মায়ের জরায়ুতে এমন ভাবে অবস্থান করে যাতে তার মাথা নিচের দিকে জন্ম নালীর দিকে থাকে আর এটি প্রসবের জন্য স্বাভাবিক এবং নিরাপদ পজিশন। কিন্তু ব্রিচ পজিশনের ক্ষেত্রে শিশুর মাথা উপরের দিকে এবং তার নিম্নভাগ বা পা নিচের দিকে থাকে। আশা করি বাচ্চা পেটের ভিতর কিভাবে থাকে তা বুঝতে পেরেছেন।

গর্ভাবস্থায় খালি পেটে থাকলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়। এই সময় স্বাভাবিক বিকাশের জন্য সময় ও পরিমাণমতো পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রত্যেকেরই জরুরি। এই সময় খাবার ঠিক সময় মত খাওয়া উচিত। একবেলা না খেলে গর্ভস্থ শিশুর পুষ্টির ঘাটতে দেখা যায় এবং বাচ্চা ক্ষতি হতে পারে। গর্ভাবস্থায় না খেয়ে থাকলে বা একবেলা উপোষ থাকলে এতে শরীরের শক্তি কমে যেতে পারে এবং দুর্বল হয়ে যেতে পারেন।

গর্ভাবস্থায় খালি পেটে থাকলে আয়রণ ও হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। অথবা আপনি যদি গর্ভাবস্থায় এক বেলা না খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার ওজন অনেকটাই কমে যাবে। টানা ২৪ ঘন্টা না খেয়ে থাকলে সবচেয়ে বড় যে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। গর্ভাবস্থায় জল কম খেলে গর্ভস্থ সন্তানের পুষ্টি অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহের অভাব থেকে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এর ফলে কম ওজন সন্তান জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় শুরু থেকে শেষ অব্দি না খেয়ে থাকবেন না এতে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হবে। যদি আপনাদের খেতে ইচ্ছে না করে তাহলে শুকনো ফল খান এতেও অনেকটা উপকার পাবেন। শুকনো ফলের মধ্যে রয়েছে যেমনঃ কাজু, কিসমিস, বাদাম, আপেল, আঙ্গুর ইত্যাদি।

বাচ্চা ডান পাশে নড়াচড়া করলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকভাবে একটি বাচ্চা ২৪ ঘন্টায় ১০ থেকে ১২ বার নাড়াচড়া করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় যে বাচ্চা নির্দিষ্ট সময়ে অনেকক্ষণ ঘুমিয়ে থাকছে যার কারনে সে নড়াচড়া করছে না। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে টানা অনেক নড়াচড়া করছে এতে আসলে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। এমন যদি হয় বাচ্চাটা এক টানাই ১০ বার নড়ে গেল তাহলেও চিন্তিত হওয়ার কিছুই নেই।

বাচ্চা যদি স্বাভাবিকের চাইতে বেশি নড়াচড়া করে তাহলে অস্বাভাবিক কিছুই নয়। অনেকে আবার জানতে চেয়ে থাকেন বাচ্চা ডান পাশে নড়াচড়া করলে কি হয়। বাচ্চার ডান পাশে কিংবা বাম পাশে নড়াচড়া করলে কিছুই হয় না। বাচ্চা গর্ভ অবস্থায় এদিক সেদিক নড়াচড়া করবে এটি স্বাভাবিক। যদি বাচ্চা একদমই নড়াচড়া না করে তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

লেখকের শেষ মতামত

একজন নারীর জীবনে তার মহামূল্যবান সময় হচ্ছে গর্ভকালীন সময়টি। প্রথম তিন মাস এবং শেষের তিন মাস নারীর গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত পরিশ্রম না করে হালকা হাঁটাচলা বা হালকা ঘরের কাজকর্ম করা উচিত। এই সময়টুকু দিনের বেলা অত্যন্ত ২ ঘণ্টা এবং রাতে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। এতে মা ও গর্ভের সন্তান দুজনেই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে।

এই ছিল আজকের গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে সেই সম্পর্কিত সকল তথ্য এখানে সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন।

তো বন্ধু আশা করছি আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ে গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে সেই সম্পর্কে জানতে পারবে। ধন্যবাদ।

Leave a Comment