গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার উপকারিতা – গর্ভাবস্থায় করমচা বেশি খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় মায়ের স্বাস্থ্য ও গর্ভস্থ শিশুর বিকাশের জন্য পুষ্টিকর খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। করমচা একটি পুষ্টিকর ফল যা গর্ভাবস্থায় নানাভাবে উপকারী হতে পারে। তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতা ও সতর্কতাও রয়েছে। এই নিবন্ধে গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা, নিয়ম এবং এর গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়া কিছু উপকারিতা প্রদান করতে পারে, তবে এটি খাওয়ার আগে অবশ্যই পরিমিতি বজায় রাখা উচিত এবং কোনো ধরনের অসুবিধা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। করমচা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ, যা গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য এবং ভ্রূণের বিকাশের জন্য সহায়ক হতে পারে। করমচা ভিটামিন সি-এর একটি ভালো উৎস। 

উপস্থাপনা

করমচা বৈজ্ঞানিক নাম Carissa carandas একটি গুল্মজাতীয় গাছ, যার ছোট ও গোলাকার ফলগুলি পুষ্টিকর এবং ঔষধি গুণাবলী সমৃদ্ধ। এই করমচা গাছের ফল বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিগুণ মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। করমচা ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, আয়রন এবং ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ। এসব পুষ্টি উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এবং হাড় মজবুত করতে সহায়তা করে। 

এতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা দেহের কোষগুলিকে ফ্রি র‌্যাডিকাল দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্যের প্রভাব কমাতে সহায়তা করে। এছাড়া করমচা আয়ুর্বেদিক এবং অন্যান্য প্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থায় ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত জ্বর, গ্যাস্ট্রিক, এবং ক্ষত নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি করমচা ফল এর টক-মিষ্টি স্বাদের জন্য চাটনি ও আচার তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, যা বিভিন্ন খাবারের সাথে খাওয়া হয়।

করমচার পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম করমচা ফলের মধ্য আসলে কতটুকু পুষ্টিগুণাগুণ থাকে তা নিচে তুলে ধরা হলোঃ

  • শক্তিঃ ৬২ কিলোক্যালরি
  • কার্বোহাইড্রেটঃ ১৪ গ্রাম
  • প্রোটিনঃ ০.৫ গ্রাম
  • ভিটামিন এঃ ৪০ আইইউ
  • ভিটামিন সিঃ ৩৮ মিলিগ্রাম
  • রিবোফ্লেভিনঃ ০.১ মিলিগ্রাম
  • নিয়াসিনঃ ০.২ মিলিগ্রাম
  • আয়রনঃ ১.৩ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়ামঃ ১৬ মিলিগ্রাম
  • পটাশিয়ামঃ ২৬০ মিলিগ্রাম
  • কপারঃ ০.২ মিলিগ্রাম

গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার উপকারিতা

ভিটামিন সি গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক এবং মায়ের ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ভ্রূণের কোষের বৃদ্ধিতে সহায়ক। করমচা আয়রন সমৃদ্ধ, যা গর্ভবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আয়রন রক্তের হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়ক, যা অক্সিজেন পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ। 

আয়রন অভাবের কারণে অ্যানিমিয়া হতে পারে, যা গর্ভাবস্থায় জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। করমচায় অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল গুণাবলী থাকতে পারে, যা মায়ের শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সহায়ক হতে পারে। গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়া পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং স্বাস্থ্যকর হতে পারে, তবে সঠিক পরিমাণে এবং সতর্কতা অবলম্বন করে খাওয়া উচিত।

করমচা (Carissa carandas) একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল যা গর্ভাবস্থায় নিম্নলিখিত উপকারিতা প্রদান করতে পারে:

  • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ: করমচায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং গর্ভাবস্থায় সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়।
  • আয়রনের উৎস: গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে আয়রন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। করমচা আয়রনের ভালো উৎস।
  • ফাইবার সমৃদ্ধ: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে, যা গর্ভাবস্থায় একটি সাধারণ সমস্যা।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: করমচায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গর্ভাবস্থায় অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়।
  • ক্যালসিয়াম: হাড় ও দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে।
  • ফোলেট সমৃদ্ধ: গর্ভস্থ শিশুর স্নায়বিক বিকাশে ফোলেট অপরিহার্য।
  • রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ: আয়রন ও ভিটামিন সি এর সমন্বয় রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
  • হজমশক্তি বৃদ্ধি: করমচা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং অ্যাসিডিটি কমায়।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: পটাসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • প্রদাহ বিরোধী: গর্ভাবস্থায় জয়েন্টে ব্যথা বা ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
  • ত্বকের স্বাস্থ্য: ভিটামিন সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখে এবং গর্ভাবস্থায় ত্বকের সমস্যা কমায়।
  • শক্তি বৃদ্ধি: প্রাকৃতিক শর্করা ও পুষ্টি উপাদান শক্তি সরবরাহ করে।
  • ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী: ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • গর্ভস্থ শিশুর বিকাশ: পুষ্টি উপাদান শিশুর সঠিক বিকাশে সাহায্য করে।
  • বমি বন্ধ করা: গর্ভাবস্থায় সকালের অসুস্থতা কমাতে সাহায্য করে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: করমচা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • হার্টের স্বাস্থ্য: পটাসিয়াম ও ফাইবার হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে।
  • মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধ: অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য মূত্রনালীর সংক্রমণ কমায়।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ: কম ক্যালোরি ও উচ্চ ফাইবার ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • মানসিক স্বাস্থ্য: পুষ্টি উপাদান মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
আরো পড়ুনঃ-  গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়া যাবে কিনা - গর্ভাবস্থায় কদবেল খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় করমচা কেন খাবেন

গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার প্রধান কারণ হলো এর পুষ্টিগুণ। এটি মায়ের এবং গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। নিম্নলিখিত কারণে গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়া উচিত:

  • করমচা ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফোলেট ইত্যাদি পুষ্টি সরবরাহ করে।
  • ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • করমচায় থাকা পুষ্টি উপাদান শিশুর মস্তিষ্ক ও শারীরিক বিকাশে সাহায্য করে।
  • ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি হজমশক্তি উন্নত করে।
  • প্রাকৃতিক শর্করা ও পুষ্টি উপাদান শক্তি সরবরাহ করে।

গর্ভাবস্থায় করমচা বেশি খেলে কি হয়

গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়া উপকারী হলেও অতিরিক্ত খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে:

  • পেটে গ্যাস ও বদহজম: অতিরিক্ত করমচা খেলে পেটে গ্যাস, বদহজম বা ডায়রিয়া হতে পারে।
  • রক্তে শর্করা কমে যাওয়া: করমচা রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করে, কিন্তু অতিরিক্ত খাওয়া হাইপোগ্লাইসেমিয়া ঘটাতে পারে।
  • অ্যালার্জি: কিছু মহিলার করমচায় অ্যালার্জি থাকতে পারে, যা ত্বকে র্যাশ বা চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে।
  • গর্ভপাতের ঝুঁকি: অতিরিক্ত করমচা খাওয়া গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, কারণ এটি গর্ভাশয়ের সংকোচন ঘটাতে পারে।
  • পুষ্টির ভারসাম্যহীনতা: অতিরিক্ত করমচা খেলে অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার অপকারিতা

গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার কিছু অপকারিতা বা সতর্কতা রয়েছে:

  • অতিরিক্ত করমচা খাওয়া গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • কিছু মহিলার করমচায় অ্যালার্জি থাকতে পারে।
  • অতিরিক্ত করমচা খাওয়া গ্যাস, বদহজম বা ডায়রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত করমচা খাওয়া হাইপোগ্লাইসেমিয়া ঘটাতে পারে।
  • করমচা বেশি খেলে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার নিয়ম

গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত:

  • দিনে ৫-৬ টি করমচা খাওয়া নিরাপদ।
  • করমচা ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে খান।
  • গর্ভাবস্থায় যে কোনো নতুন খাবার খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • অতিরিক্ত করমচা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • করমচা কাঁচা, জুস বা চাটনি হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।

গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়া অনেক উপকারী হতে পারে, তবে এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। এর পুষ্টিগুণ মায়ের এবং গর্ভস্থ শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অতিরিক্ত খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে, তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করমচা খাওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় সঠিক পুষ্টি ও সতর্কতা মেনে চললে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয় - গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা

করমচা ফল কিভাবে খায়

করমচা ফলের টক-মিষ্টি স্বাদ এবং পুষ্টিগুণের জন্য এটি বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। এই ফলটি রান্না ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করার জন্যও বেশ জনপ্রিয়। করমচা ফল খাওয়ার কিছু সাধারণ উপায় নিম্নে তুলে ধরা হলো-

করমচা ফল তাজা অবস্থায় কাঁচা খাওয়া যায়। এটি সাধারণত টক-মিষ্টি স্বাদের হয়। কিছু মানুষ ফলটি লবণ ও মরিচ গুঁড়া ছিটিয়ে কাঁচা খায়, যা স্বাদকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

করমচা ফল আচার তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি টক আচার হিসেবে প্রচলিত, যা খিচুড়ি, ভাত, বা অন্যান্য খাবারের সাথে খাওয়া হয়। আচার তৈরি করতে করমচা ফলকে লবণ, মশলা, সরিষার তেল ইত্যাদির সাথে মিশিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়।

করমচা থেকে জ্যাম ও জেলি তৈরি করা হয়। করমচা ফল চিনি এবং অন্যান্য উপাদানের সাথে রান্না করে জ্যাম তৈরি করা হয়, যা পাউরুটি বা রুটির সাথে খাওয়া হয়। করমচা চাটনি তৈরি করাও একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। টক-মিষ্টি স্বাদের চাটনি হিসেবে এটি খিচুড়ি, ভাত, বা রুটি-পরোটার সাথে খাওয়া হয়। চাটনি তৈরি করতে করমচা ফলের সাথে চিনি, লবণ, এবং মশলা মিশিয়ে রান্না করা হয়। 

করমচা ফল অনেক সময় মাংস বা মাছের সাথে ক্যারি বা তরকারিতে যোগ করা হয়। এটি তরকারির স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করে এবং একটি টক স্বাদ প্রদান করে। করমচা থেকে রস বা শরবত তৈরি করা যায়, যা গরম আবহাওয়ায় শরীরকে শীতল রাখতে সহায়ক। ফলের রস বের করে চিনি, লবণ এবং পানি মিশিয়ে শরবত তৈরি করা হয়। 

করমচা ফল খাওয়ার উপায়গুলি খুবই বৈচিত্র্যময় এবং প্রতিটি উপায়েই এটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। করমচা ফলের টক-মিষ্টি স্বাদ ও পুষ্টিগুণের জন্য এটি রান্নায় এবং খাবারে ব্যবহার করা খুবই জনপ্রিয়। উপকারী ফলের মধ্যে একটি ফল হলো করমচা। এই করমচা ফল হতে অনেক উপকার পাওয়া যায় যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 

এই করমচা ফল সম্পর্কে কম পরিচিত হলোও এর উপকারী গুণ অনেক বেশি। হাটবাজারে এই ফল কিনতে পাওয়া যায় কিন্তু কম মানুষ এটি কিনে খায়। এদিকে করমচা ফলটি অবহেলার কারণে এর নানা ধরনের পুষ্টিগুণ থেকে আমরা বঞ্চিত। 

তাই আমাদের করমচার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা বিশেষ প্রয়োজন। কেননা করমচার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারলে এ ফলটির পুষ্টিগণ আমাদের মানবের জন্য অনেক কার্যকরী অবদান রাখে।

করমচা খেলে কি ওজন কমে 

আপনারা অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন করমচা খেলে কি ওজন কমে নাকি? কারণ যে থেকে ফাইবার পাওয়া যায় ওজন কমাতে সাহায্য করে। ওজন কমানোর জন্য ক্যালরিযুক্ত খাবারগুলো দিতে হবে আর করমচা থেকে খুব অল্প পরিমাণে ক্যালরি পাওয়া যায় তাই করমচা খাওয়ার মাধ্যমে ওজন কমানো যায়। 

অতিরিক্ত ওজন থাকলে দেখতে ভালো লাগে না আবার অতিরিক্ত ওজন কম থাকলেও দেখতে ভালো লাগে না একটি পারফেক্ট ওজন পাওয়া খুবই জরুরী। পারফেক্ট ওজন পেলে নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। 

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়

ওজন কমানো খুবই সহজ। ওজন কমাতে শর্করা এবং ক্যালরিযুক্ত খাবার গুলো খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে এবং নিয়মিত সকালে এক গ্লাস করমচার রস পান করবেন। এতে দ্রুত ওজন কমতে থাকবে।

ওজন কমানোর জন্য খাবার তালিকা তৈরি করার পাশাপাশি নিয়মিত এক্সারসাইজ করতে হবে। পারফেক্ট বডি পাওয়ার জন্য এক্সারসাইজ করা খুবই জরুরী। এক্সারসাইজ করলে রোগবালাই দূর হবে শরীর সবসময় হালকা মনে হবে।

করমচা খেলে কি গ্যাসের সমস্যা দূর হয়

করমচা থেকে কিছু মসলা এবং ভেষজ উপাদান পাওয়া যায় যার গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। অতিরিক্ত মসলা কিংবা ঝাল জাতীয় খাবার খাওয়ার ফলে গ্যাসের সমস্যা তৈরি হয়। ক্যাশ থেকে বুকে জ্বালাপোড়া এবং পেটে ব্যথা অনুভূত হয়। আমরা অনেকেই গ্যাসের সমস্যা হলে ঔষধ সেবন করি কিন্তু গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ কিডনি জনিত রোগের জন্য দায়ী তাই অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

করমচা থেকে প্রচুর ফাইবার এবং মসলা পাওয়া যায় যা গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে নিয়মিত গরম চা খেলে চিরতরে গ্যাসের সমস্যা দূর হবে। গ্যাসের সমস্যা হলে অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ সেবন করা যাবে না এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিডনি রোগ এবং হৃদ রোগের জন্য দায়ী গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ।

করমচা ফলের দাম কত 

১ কেজি করমচা ফলের দাম হলো ৩০০ টাকা। আগে বাসার আশেপাশে গরম চা গাছ দেখতে পাওয়া যেত আর গরম চা গাছের ধোকা থেকে গরম ধরে থাকে। কিন্তু বর্তমান সময়ে করমচা গাছের পরিমাণ খুবই কম এই জন্য গরম চা গাছের চাহিদা বেড়ে গেছে এবং এর ফলের দামও বেড়ে গেছে। আগে করমচা বাজারে ১০০ টাকা কেজি পাওয়া যেত কিন্তু এখন করমচা ফলের দাম ৩০০ টাকা কেজি। 

  • ১ কেজি করমচা ফলের দাম ২৫০ – ৩০০ টাকা
  • ৫ কেজি করমচা ফলের দাম ১২০০ – ১৩০০ টাকা

করমচা খেতে টক স্বাদযুক্ত। করমচা থেকে ভরপুর ভিটামিন সি পাওয়া যায় যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তাই নিয়মিত করমচা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরকে সুস্থ রাখুন।

লেখকের শেষ মতামত

করমচাতে থাকা পুষ্টিগুণ গর্ভবতী মহিলা ও গর্ভস্থ শিশুর জন্য উপকারী, তবে অতিরিক্ত করমচা খাওয়া এড়ানো উচিত। গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো ও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

গর্ভকালীন সময়ে প্রতিটি মায়ের সচেতন থাকা উচিত। কারণ মা অসুস্থ থাকলে সন্তান সুস্থ থাকবে। এজন্য গর্ভকালীন সময়ে প্রত্যেক মায়ের উচিত যে কোন খাবার খাওয়ার আগে ভেবে চিন্তা খাওয়া। এমন খাবার খাওয়া উচিত নয়, যা গর্ভবতী মায়ের ও সন্তানের সমস্যা হয়।

আবার এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে মা ও সন্তান ও ভাই ভালো থাকে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা লাভ করেন। এমনই একটি খাবার হল করমচা। গর্ভবতী মায়েরা পরিমাণ মতো করমচা খাওয়ার কারণে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি লাভ করে।

এই ছিল আজকের গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় করমচা বেশি খেলে কি হয় সম্পর্কিত সকল তথ্য এখানে সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন।

তো বন্ধু আশা করছি আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ে গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় করমচা বেশি খেলে কি হয় তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও গর্ভাবস্থায় করমচা খাওয়ার উপকারিতা এবং গর্ভাবস্থায় করমচা বেশি খেলে কি হয় সেই সম্পর্কে জানতে পারবে। ধন্যবাদ।

Leave a Comment