পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র

নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র খুব সহজে লিখতে পারবেন। অন্যের কাছে থেকে পরামর্শ না নিয়ে শুধুমাত্র অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই নতুন মিটারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া নতুন মিটারের আবেদন অনুসন্ধান করবেন কিভাবে আর্টিকেলটির মধ্যে পুরো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র

আমাদের দেশের ১০০ ভাগ মানুষের মধ্যে প্রায় ৯৯ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করছেন। তাছাড়া যারা নতুন বসত বাড়ি তৈরি করেছেন বা বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নতুন বৈদ্যুতিক সংযোগের জন্য নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র লিখতে চাচ্ছেন তারা খুব সহজেই নতুন মিটারের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

আমাদের মধ্যে অনেকেই পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র সম্পর্কে গুগলের কাছে জানতে চান বা সার্চ করে থাকেন। এজন্য আমরা শুধুমাত্র আপনাদের সুবিধার্থে আজকের পোষ্টে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। তাই অবহেলা না করে এই পোষ্টটি শেষ পর্যন্ত আমাদের সাথে থাকুন।

পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র

আপনি নতুন সংযোগ অথবা নতুন মিটার নেয়ার জন্য খুব সহজে আবেদন করতে পারেন। নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র লিখে অন্যের সাহায্য ছাড়াই আপনি নিজে নিজেই আবেদন করে জমা দিতে পারবেন। নিজেই নতুন মিটারের জন্য আবেদনপত্র লিখে জমা দিলে, দালাল দের মত খপ্পর থেকে আপনি রক্ষা পাবেন। নিচে নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র লিখার নিয়ম দেওয়া হল-

বরাবর

বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক,

[বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির নাম],

বিদ্যুৎ অফিসের[শাখার ঠিকানা],

আবেদন লিখার [তারিখ]

বিষয়ঃ নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ ও মিটার স্থাপনের জন্য আবেদন পত্

মহাশয়,

বিনীত নিবেদন এই যে, আমি [আপনার নাম], পিতা/স্বামীর নাম [পিতার বা স্বামীর নাম], ঠিকানা [পুরো ঠিকানা]। আমি আমার বাড়ি/ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের প্রয়োজন অনুভব করছি।  মহাশয় আমার নাম মহাশয় আমার পরিবারে এখনও বিদ্যুৎ সেবা নেই। এর জন্য আমি পারিবারিক ভাবে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। মহাশয়ের নিকট আমি আমার নিজস্ব সকল কাগজপত্র সহকারে আবেদন করিতেছে যে আপনি আমাকে বিদ্যুতের নতুন পরিষেবা প্রদান করে সাহায্য করবেন।

অতএব

অতএব, মহাশয়ের নিকট আমার প্রার্থনা এই যে আমার বাড়িতে/প্রতিষ্ঠানে দ্রুত নতুন মিটার স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

নিবেদক

[আপনার নাম]

ঠিকানা: [আপনার ঠিকানা]

মোবাইল: [আপনার মোবাইল নম্বর]

ইমেইল: [আপনার ইমেইল]

আরো পড়ুনঃ-  দুবাই বাংলাদেশ এম্বাসি মোবাইল নাম্বার

উপরের উল্লেখিত নিয়ম গুলো মেনে যদি আপনি আবেদন পত্র লিখেন তাহলে আপনি নতুন মিটারের জন্য খুব সহজেই আবেদন পত্র নিজে লিখে জমা দিতে পারবেন।

নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন

আপনারা কি নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম জানতে আগ্রহী? তাহলে পোষ্টের এই অংশটি আপনার জন্য উপকার হতে চলেছে। আপনি নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করবেন কিভাবে তা জানতে শুধু মনোযোগ সহকারে এই অংশটি পড়তে থাকুন। কেননা নতুন মিটার আবেদন সম্পর্কে আমরা এই অংশে ছবিসহ বিস্তারিত আলোচনা করব।

নতুন মিটার আবেদন করতে হলে আপনাকে প্রথমেই আপনার নিজের একটি পাসপোর্ট সাইজের (Passport Size) ছবি এবং আপনার ভোটার আইডি কার্ডের (National ID card) অর্থাৎ জাতীয় পরিচয় পত্রের ছবি তুলে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে নিয়ে নিতে হবে।

এবং আরো নানান ধরনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন পড়বে যেগুলো একসাথে ছবি তুলে নেবেন। সকল কিছু নেওয়া শেষে আপনার আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটার থেকে যেকোন ব্রাউজার থেকে www.rebpbs.com এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।

এরপর সেই ওয়েবসাইটের ভিজিট করার পরে নতুন মিটার অনলাইন আবেদন করার জন্য একটি কাঙ্খিত ফর্ম পেয়ে যাবেন। এই ফর্মে সব যেসব তথ্য চাইবে আপনাকে সেসব প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে। 

এরপর আপনার নিজস্ব ছবি ও এনআইডি কার্ডের ছবিসহ এই ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে। তবে আপনি যেই ছবিটি আপনার মোবাইলে কিংবা কম্পিউটারে সেভ করে রেখেছেন সেটি কিন্তু নির্দিষ্ট সাইজের হতে হবে। নির্দিষ্ট সাইজের বেশি ছবি হলে উল্লেখিত ওয়েবসাইটে ছবিগুলো সাপোর্ট করবে না।

আপনাকে অবশ্যই নিজের একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি কাঙ্খিত ওয়েবসাইটে আপলোড করে দিতে হবে। সেই আপলোডকৃত ছবির সাইজ হবে তার সাইজ হবে 300*300 পিক্সেল এবং  সর্বনিম্ন ছবির সাইজ হবে 50 KB মধ্যে আর সর্বোচ্চ ১৫০ KB এর মধ্যে হতে হবে

এখন আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের স্ক্যান করা ছবি বা স্ক্যান অবশ্যই রঙিন কপি সেই ওয়েবসাইটে আপলোড করা লাগবে। আর ছবির সাইজ হতে হবে  (600*475) পিক্সেল ও ছবির সর্বোচ্চ সাইজ 300 KB এর মধ্যে হতে হবে।

এছাড়াও মিটার স্থাপনকৃতত স্থানের জমির খারিজের ছবিগুলাও আপলোড করতে হবে। এর সাইজ 700 KB হতে হবে। আর যদি কাগজগুলো বেশি হয় তাহলে অবশ্যই সেগুলো পিডিএফ ফাইল আকারে আপলোড করতে পারবেন।

অনলাইনে ছবি আপলোড করার নির্দেশনা গুলো তো জেনে নিলাম। এবার চলুন, অনলাইনে মিটারের জন্য আবেদন আপনি কিভাবে করবেন সেই বিষয়ে ধাপে ধাপে জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ-  সরকারি ভাবে বিদেশ যাওয়ার উপায় - বিদেশ যাওয়ার নিয়ম

ধাপ ১: সর্বপ্রথম আপনি আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলের ক্রোম ব্রাউজার অথবা যে কোন ব্রাউজার ব্যবহার করে www.rebpbs.com এই লিংকে ক্লিক করতে হবে। তাহলে আপনাকে সরাসরি পল্লী বিদ্যুৎ আবেদন করার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন। এরপর খেয়াল করবেন আবেদন নামক একটা অপশন দেখতে পাবেন সেই অপশনে ক্লিক করতে হবে।

নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন

ধাপ ২: এরপর আপনার সামনে আপনার সামনে নিম্নে দেওয়া স্ক্রিনশট এর মত একটি আবেদন ফরম আসবে। 

নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন

ধাপ ৩: উপরের স্ক্রিনশটে দেওয়া লাল কালারের স্টার চিহ্ন গুলো আপনাকে অবশ্যই পূরণ করতে হবে। কারণ এগুলো রিকমেন্ডেড এগুলো পূরণ না করলে আপনি পরের ধাপে যেতে পারবেন না।

তথ্যগুলো হচ্ছে আপনি যে এলাকায় বসবাস করেন সেই এলাকা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সমিতি ও থেকে জোনাল অফিস লিস্ট থেকে বাছাই করুন। আপনার বাসা যদি একক হয় তাহলে অবশ্যই আপনি আবাসিক বাছাই করবেন। আর যদি তা না হয়ে ফ্ল্যাট আকারে হয়ে থাকে তাহলে আপনি এমটি-এ (MTA) আবাসিক বাছাই করবেন। 

নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন

ধাপ ৪: এরপর আবেদনকৃত ব্যক্তির বাংলায় মাতা পিতার নাম  লিখে পূরণ করতে হবে। অনলাইন আবেদন ফরমে  যেই স্থানে  ইংরেজি লেখা রয়েছে সেখানে ইংরেজি তথ্য লিখতে হবে। এরপর  আবেদনকৃত ব্যক্তির অবশ্যই স্থায়ী ঠিকানা দিতে হবে। এভাবে  আপনাকে এসব প্রাথমিক পর্যায়ের তথ্যগুলো ফর্মে ভালোভাবে পূরণ করে দিতে হবে।

নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন

ধাপ ৫: উপরে সকল তথ্যগুলো দেওয়া হয়ে গেলে এবং বিভিন্ন ডকুমেন্টস বা ছবিগুলো আপলোড করার পরে ফর্মের একেবারে নিচের দিকে চলে আসবেন সেখানে একটি বক্সে হিউম্যান ভেরিফিকেশন করার জন্য একটি কোড দেওয়া আছে সেই কোডটি উক্ত ছবিতে মার্কর্কৃত স্থানে লিখবেন। এরপর আপনাকে “সংরক্ষণ করুন” অপশনে ক্লিক করতে হবে। তাহলেই আবেদন করা হয়ে যাবে।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন অনুসন্ধান

আপনারা অনেকেই হয়তো পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন অনুসন্ধান করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়ে আমাদের ওয়েবসাইটে এসেছেন। এজন্য আমরা পোষ্টের এই অংশের মাধ্যমে আপনাদের আবেদনের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানাব।

সর্বপ্রথম আপনাকে গুগলে “www.rebpbs.com” লিখে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আবেদন অপশন থেকে আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা জানুন অপশনে ক্লিক করতে হবে।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন অনুসন্ধান

এরপর খেয়াল করলে দেখতে পাবেন আপনার স্ক্রিনে একটি আবেদন অনুসন্ধান ফরম আসবে।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন

তারপর আপনাকে আবেদনের আইডি নম্বর ও পিন নম্বর  লিখে “সাবমিট করুন” অপশনে ক্লিক করে ফর্মটি সাবমিট দিতে হবে।

মূলত এখানে আবেদন আইডি বলতে ট্রাকিং নাম্বার বলা হচ্ছে যা নিচের ছবিতে দেখলে বুঝতে পারবেন।

সাবমিট বাটনে ক্লিক করার পর কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পরে (মানে যতক্ষন লোড নিবে) খেয়াল করবেন আপনার আবেদন সম্পর্কিত সকল যাবতীয় তথ্য দেখাচ্ছে।

আরো পড়ুনঃ-  ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ অনলাইনে প্রদান করুন

সাধারনত এ তথ্য দেখেই নিশ্চিত হওয়া যায় যে অনলাইনে আবেদনটি গ্রহণযোগ্য হয়েছে কিনা। এছাড়াও আপনার মিটার কবে কোন তারিখে আসবে সে সকল তথ্যও জেনে নিতে পারবেন। তবে কোন তথ্য যদি না দেখাই তাহলে বুঝতে হবে আপনার ট্রাকিং নম্বর এ ভুল হয়েছে।

আবার সর্বশেষে যদি সকল তথ্য ঠিক থেকেও কোন তথ্য না দেওয়া থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনার মিটারের জন্য আবেদনটি গ্রহণযোগ্য করেনি কিংবা আরও বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। আর যদি কোন কারণে আপনার আবেদনটি বাতিল করে দেওয়া হয় তাহলে আপনাকে আবারও আবেদন করতে হবে নতুবা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন ফি কত

পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন ফি কত এটি অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন। তাই পোষ্টের এই অংশে পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের আবেদন ফি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। মূলত আবেদন ফি খুব একটা বেশি নয়। পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন ফি মাত্র ১১৫ টাকা। যখন আপনি অনলাইনের মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুৎ মিটারের জন্য আবেদন করবেন তখন আপনাকে সেই মিটার বাবদ ফি মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ব্যবহার করে ফি পেমেন্ট করে দিতে হবে।

তবে আপনার সম্ভব হলে আমার উপদেশ থাকবে আপনি বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে সরাসরি সেখানে ফি জমা দিয়ে আসবেন। তবে আরেকটা বিষয় হচ্ছে এই ফি এর সাথে নিরাপত্তা মূলক জামানত হিসেবে তাদেরকে দুই কিলোওয়াট (KW) এর জন্য মোট ৪০০ টাকা। এবং যদি ২ কিলোওয়াটের বেশি হয় তাহলে প্রতি কিলোওয়াট এর জন্য আপনাকে অন্তত ৬০০ টাকা পর্যন্ত দিতে হবে।

আমাদের শেষ মতামত

সাধারণত যারা পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটারের মাধ্যমে নতুন বৈদ্যুতিক সংযোগ নিতে চান তারা সঠিক ধারণার অভাবে অতিরিক্ত অর্থের অপচয় করেন। অথচ খুব সহজেই পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র জমা দিলেই নতুন বৈদ্যুতিক সংযোগ পাওয়া সম্ভব। এছাড়া খুব সহজেই পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ নিতে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করা যায়। এজন্য একজন গ্রাহকের উচিত কোন বিদ্যুৎ সংযোগ কর্মীর সাথে কথা না বলে সরাসরি নতুন মিটার নেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ অফিসে কথা বলা।

আশা করি আপনি আমাদের পোস্টটি পড়ে পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র এবং পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন অনুসন্ধান করার নিয়ম জানতে পেরেছেন। যদি আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে এই পোষ্টটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে তারাও পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র সম্পর্কে জানতে পারবে। এমন প্রয়োজনীয় ব্লগ পড়তে লার্ন-বিডি.কম ভিজিট করার অনুরোধ রইলো ধন্যবাদ।

Leave a Comment