গর্ভাবস্থায় সর্দি হলে বাচ্চার কি ক্ষতি হয় জানুন

অসুস্থ হয়ে পরাটা প্রকৃতই সবকিছুর আনন্দকে কেড়ে নেয়,এমনকি গর্ভাবস্থারও।কিছু ট্যাবলেট গ্রহণের প্রত্যাশা কারও কাছেই আবেদন যোগ্য নয় এবং গর্ভাবস্থার সময়, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি সম্পর্কে গুরুতরভাবে বিবেচনা করতে হবে।গর্ভাবস্থায় সর্দি কাশি লাগায় ভয়ের কিছুই নেই যেহেতু এটির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া থেকে আপনার বাচ্চা যথেষ্ট সুরক্ষিত থাকে।

গর্ভাবস্থায় সর্দি হলে বাচ্চার কি ক্ষতি হয়

তবে আপনার শরীরে যে পরিবর্তনগুলি ঘটে তা আপনার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাটির কার্যকরী গতিকে প্রভাবিত করতে পারে এবং এর ফলে ঠাণ্ডা লাগার লক্ষণগুলি আরও বাড়িয়ে তোলে। যেহেতু সাধারণ সর্দি কাশির ওষুধগুলি যেমন টাইলেনল শিশুদের মধ্যে ADHD বৃদ্ধির ঝুঁকির সাথে যুক্ত থাকে,গর্ভাবস্থার সময় ঠাণ্ডা লাগার জন্য ওষুধ গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে চিন্তা করে নিতে হবে।

আপনি যদি একজন মা হতে চলেন এবং কাশিতে ভুগতে থাকেন,এই বিশ্রী জীবাণুর সাথে লড়াই করতে কার্যকর কিছু ঘরোয়া প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিতে পড়ুন।

গর্ভাবস্থায় সর্দি হলে বাচ্চার কি ক্ষতি হয়

গর্ভাবস্থায় সাধারণ সর্দি-কাশি মায়ের জন্য অসুবিধার কারণ হলেও, এটি সাধারণত বাচ্চার জন্য খুব একটা ভয়ের বিষয় নয়। তবুও, এই সময় মায়ের সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হওয়া থেকে সুরক্ষিত থাকা উচিত। যদি ঠাণ্ডা লেগেই যায়, তবে তা দ্রুত নিরাময়ের ব্যবস্থা করা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক যত্ন এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মায়ের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি সন্তানের সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে।

গর্ভাবস্থায় সর্দি বা কাশি হলে সাধারণত তা বাচ্চার সরাসরি ক্ষতি করে না। তবে, কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে:

১। মায়ের স্বাস্থ্য

যদি সর্দি বা কাশি গুরুতর হয়, যেমন উচ্চ তাপমাত্রা বা দীর্ঘস্থায়ী জ্বর হয়, তাহলে মায়ের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। এতে করে গর্ভস্থ বাচ্চারও কিছু ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

২। দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব

যদি সর্দি ও কাশি দীর্ঘদিন ধরে চলে, তবে তা মায়ের শক্তি এবং পুষ্টির উপর প্রভাব ফেলতে পারে, যা পরোক্ষভাবে গর্ভস্থ শিশুর সুস্থতার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

৩। ইনফেকশন

কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যদি সর্দি ও কাশি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের কারণে হয়, তাহলে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করা প্রয়োজন, যাতে ইনফেকশন গর্ভস্থ শিশুর জন্য ঝুঁকির কারণ না হয়।

৪। ড্রাগস ও মেডিসিন

গর্ভাবস্থায় অনেক ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা প্রয়োজন। কিছু ওষুধ শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ নেয়া উচিত নয়।

সাধারণত, সর্দি বা কাশি হলে এটি গর্ভস্থ শিশুর উপর বড় কোনো প্রভাব ফেলে না, তবে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং যদি কোন গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয়, তবে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

গর্ভাবস্থায় সর্দি কাশি হলে করণীয় কি

গর্ভাবস্থায় সর্দি কাশি হওয়ার অভিজ্ঞতাটা কখনো খুব ভাল হয়না। গর্ভাবস্থায় সর্দি কাশি হলে সেটা বড় সমস্যা হয়ে উঠে। সাধারণ সর্দি হলো মূলত এক ধরনের ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট শ্বাসনালীর উপরের অংশে হওয়া একটি অসুখ যা আপনার স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

আরো পড়ুনঃ-  গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা - কলা খেলে কি হয়

সাধারণ সর্দির ক্ষেত্রে কাশি এবং হাঁচি ছাড়াও আরো অনেক সমস্যা হতে পারে। যেমন : নাক বন্ধ হওয়া, নাক থেকে থেকে জল পড়া, গলা ব্যথা করা এবং হাঁচি। গর্ভাবস্থায় সর্দি কাশি হলে যা যা করা দরকার তা নিচে উল্লেখ করে দেয়া হলঃ

রসুন: গর্ভবতী মহিলারা গর্ভাবস্থায় সর্দি এবং কাশির চিকিৎসার জন্য রসুন ব্যবহার করতে পারেন, কারণ রসুন তাঁদের সর্দি এবং কাশিতে কমাতে সাহায্য করতে পারে। এটির অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি সেফটিক এবং অ্যান্টিভাইরাল গুণা গুলির শক্তিশালী সংমিশ্রণের কারণে এটি সেই ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া যা সাধারণ সর্দি কাশি সৃষ্টি করে।

মধু ও পাতিলেবু: মধুর মধ্যে জ্বালা কমানোর গুণ রয়েছে। তাই আদা বা পাতিলেবু চায়ের সাথে মধু মিশিয়ে খেলে সেটা গলার অস্বস্তি দূর করতে সাহায্য করে। এই প্রতিকার টি ব্যবহার করলে কাশি এবং গলা ব্যথার দূর করতে আরাম পাওয়া যায়। মধুর মধ্যে এন্টিভাইরাস এবং ইউনিটি বুস্টিং বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

হলুদ: সর্দি কাশি এবং নাকের জ্বালা সহ বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের জন্য ভিষণ কার্যকর চিকিৎসা হিসেবে যুগ যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। হলুদের মধ্যে কারকিউমিন নামক একটি মূল উপাদান রয়েছে। এটি হলো শক্তিশালী আন্টি এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

পানি: মনে রাখবেন যে পানি সর্দি কাশি থেকে মুক্তি পেতে অনেক বেশি কার্যকরী। শরীরের পানের পরিমাণ ঠিক রাখতে আপনার শরীরকে আদ্র রাখতে হবে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পাশের জন্য শরীরে জলের পরিমাণ অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি কমে যায়।

শরীরের আদ্রতা যাতে না কমে যায় এবং শরীর থেকে কফ সর্দি বের করার জন্য সারা দিনে প্রচুর পরিমাণে গরম পানি করে খেতে হবে। সবজি বা মাংসের গরম গরম স্যুপ খাওয়াটা খুবই উপকার।

নারকেল তেল: নারিকেলের তেল স্বাদ রাখ ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাল সংক্রমণকে প্রতিরোধ করার জন্য সুপরিচিত। নারকেল তেলে লরিক অ্যাসিড ঘনত্বের মাত্রা খুব বেশি থাকে। আর এই কারণে এই তেলটি ভাইরাসের চারপাশে লিপিড আবরণকে এবং ভাইরাসের আবরণীতে ছিন্নভিন্ন করতে পারে।

গর্ভাবস্থায় নারিকেলের তেল ব্যবহার করা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। এটি ত্বকের উপর সরাসরি লাগানো যেতে পারে এবং এটিকে খাওয়াও যেতে পারে। সর্দি থেকে মুক্তি পেতে গরম পানিতে এক চা চামচ নারিকেলের তেল মেশান। নারিকেল তেলে থাকা লরিক অ্যাসিড সংক্রমণ ঘটাতে পারে এমন ভাইরাসকে মেরে ফেলতে সহায়তা করে থাকে।

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কাশি হলে কি করতে হবে

গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কাশি হলে কিছু সতর্কতা ও ঘরোয়া প্রতিকার মেনে চলতে পারেন:

  • ভেজা কাপড়ে বাষ্প নেওয়া: গরম পানির বাষ্প নিলে শ্বাসনালীর কফ কমে এবং কাশির আরাম পাওয়া যায়।
  • গরম চা বা পানীয় পান করা: আদা চা, মধু মেশানো গরম পানীয় বা তুলসি পাতার চা কাশির উপশমে সহায়ক হতে পারে।
  • হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা: ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা বাড়াতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন। শুষ্ক বাতাস কাশি বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • লবণ পানি দিয়ে গড়গড়া করা লবণ পানি দিয়ে গড়গড়া করলে গলা পরিষ্কার হয় এবং ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়।
  • বিশ্রাম নেওয়া: পর্যাপ্ত বিশ্রাম কাশি ও ঠাণ্ডা লাগার উপশমে সহায়তা করতে পারে।
  • প্রচুর পানি পান করা: পানি শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করে এবং শ্বাসনালীর শুষ্কতা কমায়। গরম পানি বা হালকা গরম স্যুপও কাশির উপশমে কার্যকরী হতে পারে।
  • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। কমলা, লেবু, আমলকী ইত্যাদি ফল খাওয়ার মাধ্যমে এই ভিটামিন পাওয়া যায়।
  • আর্দ্র ও তাজা বাতাসে থাকা: ঘরের ভিতরে তাজা বাতাস প্রবাহিত রাখা এবং ধুলা-ময়লা ও ধোঁয়া থেকে দূরে থাকা জরুরি। প্রয়োজনে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন।
  • কফ সিরাপ এড়িয়ে চলা: গর্ভাবস্থায় কফ সিরাপ বা কোনো প্রকার ওষুধ নেওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কিছু কফ সিরাপে এমন উপাদান থাকতে পারে যা গর্ভাবস্থায় ক্ষতিকর হতে পারে।
  • উষ্ণ জলে স্নান করা: গরম পানিতে স্নান করলে শরীরের পেশি শিথিল হয় এবং বাষ্পের মাধ্যমে শ্বাসনালীর সমস্যা কমে।
  • সতর্কভাবে খাবার নির্বাচন করা: অতিরিক্ত ঝাল ও মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলা উচিত কারণ এগুলো গলা এবং পেটের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ-  গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কত দিন পর বোঝা যায়

এছাড়া, যদি আপনার কাশি ৭ দিন বা তারও বেশি স্থায়ী হয়, বা যদি কাশির সাথে রক্ত আসে, শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, বা বুকের ব্যথা হয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এই সময়ে আপনার ও আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা গুরুত্বপূর্ণ।

গর্ভাবস্থায় সর্দির ওষুধ খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় সর্দির ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিছু সর্দির ওষুধ গর্ভাবস্থায় নিরাপদ হতে পারে, তবে কিছু ওষুধ গর্ভের শিশুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। সাধারণত প্যারাসিটামল ভিত্তিক ওষুধ সর্দি-কাশির জন্য নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হয়, তবে অন্যান্য ওষুধের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।

গর্ভাবস্থায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কমে যায়, যার ফলে সর্দি-কাশি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তবে, গর্ভাবস্থায় ওষুধ গ্রহণে সতর্কতা প্রয়োজন কারণ কিছু ওষুধ গর্ভের শিশুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

যেসব ওষুধ সাধারণত নিরাপদ 

  • প্যারাসিটামল: সর্দি বা জ্বর কমানোর জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ওষুধ। 
  • স্যালাইন ন্যাসাল ড্রপ: নাক বন্ধ বা সর্দি সমস্যার জন্য ন্যাসাল ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন। 
  • গরম পানির ভাপ: নাক ও গলার বন্ধভাব দূর করতে কার্যকরী।

যেসব ওষুধ এড়িয়ে চলা উচিত

  • ইবুপ্রোফেন বা নাপ্রক্সেন: গর্ভাবস্থায় এই ধরনের ওষুধ এড়িয়ে চলা ভালো, কারণ এগুলো গর্ভের শিশুর বিকাশে প্রভাব ফেলতে পারে।
  • ডিকনজেস্ট্যান্টস (যেমন: পসুডোএফেড্রিন, ফেনাইলএফ্রিন): প্রথম তিন মাসে এই ধরনের ওষুধ এড়িয়ে চলা উচিত কারণ এগুলো গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • অ্যান্টিহিস্টামিন: কিছু অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ নিরাপদ হতে পারে, তবে কিছু ক্ষেত্রে এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই সঠিক পরামর্শ ছাড়া এড়িয়ে চলা উচিত।

কিছু সাধারণ পরামর্শ

  • সর্দি-কাশি হলে প্রচুর পানি পান করুন এবং বিশ্রাম নিন।
  • সর্দি-কাশির তীব্রতা কমানোর জন্য গরম স্যুপ, মধু মেশানো গরম পানি ইত্যাদি প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করুন।
  • সর্দি-কাশির জন্য কোনো প্রকার ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  • আপনার এবং আপনার গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা উচিত।
আরো পড়ুনঃ-  গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খেলে কি হয় - গর্ভাবস্থায় তেঁতুল খাওয়ার উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় কাশির সিরাপ খাওয়া যাবে কি

গর্ভাবস্থায় কাশির সিরাপ খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু কাশির সিরাপের উপাদান যেমন কোডাইন বা অন্যান্য অপিওইডস, অ্যান্টিহিস্টামিন এবং ডিকনজেস্টান্ট গর্ভাবস্থায় নিরাপদ নাও হতে পারে।

তবে, কিছু ধরনের কাশির সিরাপ (যেমন, যেগুলো শুধুমাত্র গ্লিসারিন, মধু, বা কিছু নির্দিষ্ট হারবাল উপাদান ধারণ করে) অনেক সময় নিরাপদ হতে পারে। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে, শুধুমাত্র ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেগুলো গ্রহণ করা উচিত।

গর্ভাবস্থায় কাশির সিরাপ খাওয়ার বিষয়ে আরও কিছু বিবেচ্য বিষয় রয়েছে:

১। উপাদানের প্রভাব

অনেক কাশির সিরাপে এমন উপাদান থাকে যা গর্ভাবস্থায় নিরাপদ নয়। যেমন:

  • কোডাইন ও অন্যান্য অপিওইডস: এগুলো শিশু এবং মায়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। গর্ভাবস্থার সময় অপিওইডের ব্যবহারে শিশুর শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি এবং প্রসবের পর নবজাতকের প্রত্যাহার (withdrawal) উপসর্গ হতে পারে।
  • ডিকনজেস্টান্টস (pseudoephedrine, phenylephrine): এগুলো প্রথম ত্রৈমাসিকে গ্রহণ করলে কিছু জটিলতা, যেমন শিশুর জন্মগত ত্রুটি, হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।
  • অ্যান্টিহিস্টামিন: কিছু অ্যান্টিহিস্টামিন গর্ভাবস্থায় নিরাপদ হলেও কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ হতে পারে।

২। প্রাকৃতিক বা হারবাল উপাদান

এমনকি কিছু প্রাকৃতিক বা হারবাল উপাদানও গর্ভাবস্থায় নিরাপদ নাও হতে পারে, কারণ সেগুলোর প্রভাব সম্পর্কে প্রায়ই পর্যাপ্ত গবেষণা হয়নি।

৩। সাধারণ পরামর্শ

  • জলের সঙ্গে গরগরা করা: হালকা গরম জলে লবণ মিশিয়ে গার্গল করলে কাশির উপশম হতে পারে।
  • বাষ্প গ্রহণ করা: সর্দি-কাশির সমস্যা থাকলে গরম পানির বাষ্প গ্রহণ করাও সহায়ক হতে পারে।
  • প্রচুর পানি পান করা: পানি পান শরীরের হাইড্রেশন ধরে রাখে এবং কাশির কারণ হিসেবে শ্লেষ্মা জমা হলে তা দূর করতে সহায়ক হতে পারে।

৪। ডাক্তারের পরামর্শ

কোনও ধরনের ওষুধ বা সিরাপ গ্রহণের আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। ডাক্তার আপনার গর্ভাবস্থার নির্দিষ্ট পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিরাপদ ওষুধের পরামর্শ দেবেন। এভাবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সবসময় পেশাদার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর পরামর্শ নেওয়া উচিত।

লেখকের শেষ মতামত

পরিশেষে বলব, ঘরোয়া উপায়ে অনেক সময় কাশি প্রতিরোধ করা সম্ভব নাও হতে পারে। কিন্তু ক্রমাগত কাশি গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ তীব্র কাশি কমাতে অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিকস বা অন্যান্য ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হতে পারে। কাশির তীব্রতা কম হলে অনেক সময় কফ সিরাপ সেবন করলেও উপকার পাওয়া যায়। তবে কোনো অবস্থাতেই চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতিত ওষুধ সেবন করা যাবে না।

আশা করি গর্ভাবস্থায় সর্দি হলে বাচ্চার কি ক্ষতি হয় সেই সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে এই পোষ্টটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও গর্ভাবস্থায় সর্দি হলে বাচ্চার কি ক্ষতি হয় সেই সম্পর্কে জানতে পারবে। এমন প্রয়োজনীয় ব্লগ পড়তে লার্ন-বিডি.কম ভিজিট করার অনুরোধ রইলো ধন্যবাদ।

Leave a Comment