আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হলো ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম নিয়ে। তাছাড়াও ইসলামী ব্যাংক গ্রাহকদের কি কি লোন দিচ্ছে, লোন পাওয়ার জন্য কি কি প্রয়োজন বা শর্ত কি? ইসলামী ব্যাংক থেকে কি লোন নেওয়া সম্ভব? এসব সহ সকল বিষয় সম্পর্কে এই অনুচ্ছেদে জানাবো বিস্তারিত। এবং চেষ্টা করবো Islami Bank Loan পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদের একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা দেওয়ার।
আপনারা যারা ইসলামী ব্যাংকের ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা পেতে চান তারা আমাদের সঙ্গেই থাকুন এবং আমাদের এই অনুচ্ছেদটির পুরোপুরি ভালো করে পড়ুন।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকিং ধারার পথিকৃৎ। এটি ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পরিচালিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটি ১৯৮৩ সালের ১৩ই মার্চ কোম্পানি আইন, ১৯১৩-এর অধীনে একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম
ইসলামী ব্যাংকের ভাষায় লোন পদ্ধতিকে সাধারণত “ইনভেস্টমেন্ট” বলা হয়। যদি আপনি ইসলামী ব্যাংক থেকে ইনভেস্টমেন্ট গ্রহণ করতে চান, তাহলে প্রথমে আপনাকে ইনভেস্টমেন্টের খাত বা প্রকল্প নির্বাচন করতে হবে। এরপর, আপনার নিকটস্থ Islami Bank শাখায় যোগাযোগ করুন।
ইসলামী ব্যাংকের লোনকে “ইনভেস্টমেন্ট” বলা হয় কারণ তাদের লোন দেওয়ার পদ্ধতি অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় আলাদা। ইসলামিক ব্যাংকগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো ব্যবসা বা প্রকল্পের জন্য টাকা প্রদান করা, যা ব্যবসার ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে গণ্য হয়।
ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে হলে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা অর্জন করতে হবে এবং ব্যাংকের নীতিমালা মেনে চলতে হবে। সাধারণত, ইসলামী ব্যাংকগুলি আপনার আয় বা ইনকামের ভিত্তিতে লোন প্রদান করে, যা তারা “ইনভেস্টমেন্ট” হিসেবে বিবেচনা করে।
যোগ্যতা অর্জন: ব্যাংক আপনাকে ইনভেস্টমেন্ট প্রদান করার জন্য নির্দিষ্ট যোগ্যতা এবং শর্ত পূরণের জন্য অপেক্ষা করবে। এতে আপনার আয়ের সঠিক প্রমাণপত্র, ব্যবসার পরিকল্পনা, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অন্তর্ভুক্ত থাকে।
ব্যাংকের নীতিমালা: ইসলামিক ব্যাংকগুলোর নিজস্ব কিছু নীতিমালা থাকে যেগুলো মেনে চলা জরুরি। এতে ইনভেস্টমেন্টের খাত নির্বাচন, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন, এবং ব্যাংকের নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা অন্তর্ভুক্ত।
আয় ভিত্তিক লোন: আপনার ইনকাম বা আয় নির্ধারণ করে ব্যাংক কতটুকু ইনভেস্টমেন্ট অনুমোদন করবে। এর মাধ্যমে ব্যাংক আপনার লোনের সক্ষমতা মূল্যায়ন করে।
ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতি
ইসলামী ব্যাংক থেকে ইনভেস্টমেন্ট তথা লোন গ্রহণের জন্য নিচে দেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করুন।
- প্রথমে আপনার চাহিদা অনুযায়ী লোনের ধরন নির্বাচন করুন।
- তারপরে আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংক শাখায় উপস্থিত হন। নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংক শাখা কোথায় আছে তা জানতে গুগলে গিয়ে “Islami Bank branch near me” লিখে সার্চ করুন। Google আপনার নিকটস্থ সকল ইসলামী ব্যাংকের লোকেশন জানিয়ে দিবে।
- তারপরে ব্যাংক ব্রাঞ্চে উপস্থিত হয়ে ব্যাংক ম্যানেজারের সাথে লোন সম্পর্কে আলোচনা করুন।
- ব্যাংকে উপস্থিত হওয়ার আগে আপনার সেলারি স্টেটমেন্ট অথবা ব্যবসার আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রমাণ করে, এমন ডকুমেন্টস সঙ্গে নিয়ে যাবেন।
- পরবর্তী ধাপ আপনাকে ব্যাংক ম্যানেজার জানিয়ে দিবে।
ইসলামী ব্যাংকের ঋণের তালিকা
বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে এবং বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থার উন্নতি সাধনে ইসলামী ব্যাংক বিভিন্ন খাতে ইনভেস্টমেন্ট (লোন) প্রদান করে। ইসলামী ব্যাংকের ঋণের তালিকা সমূহঃ
- ইসলামী ব্যাংক হোম লোন।
- ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন।
- ইসলামী ব্যাংক বাণিজ্য লোন।
- ইসলামী ব্যাংক ফ্রিল্যান্সিং লোন।
- ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন।
- ইসলামী ব্যাংক শিল্পখাত উন্নয়ন লোন।
- ইসলামী ব্যাংক রিয়েল এস্টেট ব্যবসার লোন।
চলুন ইসলামী ব্যাংকের লোনের তালিকা গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই –
১. ইসলামী ব্যাংক হোম লোন
পুরনো বাড়ির সংস্থার বা নুতন বাড়ি তৈরির জন্য ইসলামী ব্যাংক হোম লোন প্রদান করে। আপনার সম্পত্তির উপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ ৩০ লক্ষ টাকা ইনভেস্টমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন। এবং পুরাতন বাড়ি সংস্কারের জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে ১০ লক্ষ টাকা হোম ইনভেস্টমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।
ইসলামী ব্যাংক থেকে হোম ইনভেসমেন্ট গ্রহণের জন্য অবশ্যই সচ্ছল ২ জন ব্যক্তি গ্যারান্টার থাকতে হবে। এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে। ডকুমেন্টস গুলো হলঃ
- জমির দলিল এবং খতিয়ান নং।
- এনইসি।
- গ্যারান্টার এর কিছু ডকুমেন্টস।
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসপোর্ট।
- খতিয়ান নামধারী রশিদ।
২. ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন
চাকরির উপর নির্ভরশীল না হয়ে ব্যবসা করে নিজেদের স্বাবলম্বী করার জন্য ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন প্রদান করে। ব্যবসার খাতকে প্রসার করার লক্ষ্যে এবং নুতন উদ্যোক্তা তৈরিতে, এই ব্যাংকটি ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন গ্রহণের জন্য যে সকল ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবেঃ
- জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসপোর্ট।
- আয়ের উৎস’র প্রমাণপত্র।
- আবেদনকারীর সদ্য তোলা ছবি।
- ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স ও ব্যবসার হিসাব।
- ব্যবসার পরিকল্পনা ও সম্ভাব্য বাজেট
৩. ইসলামী ব্যাংক বাণিজ্য লোন
একটি দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে ব্যবসা-বাণিজ্য ও চালিকাশক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই বাংলাদেশের ব্যবসা খাতকে আরো উন্নত করতে এবং ব্যবসায়ীদের কাজে সহযোগিতা করতে ইসলামী ব্যাংক বাণিজ্য লোন (ইনভেস্টমেন্ট) প্রদান করে।
খুব সহজ শর্তে, অল্প কিছু ডকুমেন্টস জমা দেওয়ার মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক থেকে বাণিজ্য লোন বা ইনভেসমেন্ট গ্রহণ করতে পারবেন। ইসলামী ব্যাংক বাণিজ্য ইনভেস্টমেন্ট গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র ও ছবি।
- ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স ও আয় ব্যয়ের হিসাবের ডকুমেন্টস।
- ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দলিল।
- গ্যারান্টারের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস।
৪. ইসলামী ব্যাংক ফ্রিল্যান্সিং লোন
বর্তমানে বাংলাদেশের তরুণদের অন্যতম একটি পছন্দের পেশা ফ্রিল্যান্সিং। বাংলাদেশের তরুণরা প্রতি মাসে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অনেক রেমিট্যান্স আনে, যা আমাদের দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। ফ্রিল্যান্সারদের সুবিধার্থে এবং ফ্রিল্যান্সিংয়ের আগ্রহ বৃদ্ধিতে ইসলামী ব্যাংক ফ্রিল্যান্সিং লোন প্রদান করে।
- ইসলামী ব্যাংক থেকে ফ্রিল্যান্সিং লোন নিয়ে, ফ্রিল্যান্সিং ট্রেনিং এর পাশাপাশি যে কোন ধরনের ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট ক্রয় করতে পারবেন। তবে ২ বছরের মধ্যে এই লোন পরিশোধের বিধান রয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং লোন গ্রহনের জন্য যে সকল ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবেঃ
- ফ্রিল্যান্সিং সনদ (যেই প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন, সেখান থেকে প্রদত্ত সার্টিফিকেট)
- জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসপোর্ট এর কপি।
- যেই প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্রিল্যান্সিং এর ট্রেনিং নিয়েছেন, উক্ত প্রতিষ্ঠানের ডকুমেন্টস।
- নিজস্ব জমি জমা সংক্রান্ত কাগজপত্র/ দলিল। যার দাম কমপক্ষে ১ লক্ষ টাকা হতে হবে।
৫. ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন
বাংলাদেশকে পৃথিবীর অন্যতম কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। আমাদের দেশের কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে, আমরা ভালোভাবে বসবাস করতে পারি। এছাড়াও আমাদের কৃষি পণ্যগুলো বিদেশে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হয়।
এই কৃষি সমৃদ্ধ দেশে কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন সিস্টেম চালু করেছে। কৃষি লোন তথা ইনভেস্টমেন্ট এর মাধ্যমে কৃষকরা বিভিন্ন আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং কৃষি জমি উন্নত করার জন্য লোন পাবে। কৃষি লোন গ্রহনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ
- জাতীয় পরিচয় পত্র।
- কৃষি জমির দলিল।
- বর্তমান আয়ের উৎস সংক্রান্ত ডকুমেন্টস।
- কৃষি ট্রেনিং গ্রহণ করা থাকলে, উক্ত ট্রেনিংয়ের ডকুমেন্টস।
৬. ইসলামী ব্যাংক শিল্পখাত উন্নয়ন লোন
নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে এবং বাংলাদেশের শিল্প খাতে উন্নয়নের জন্য ইসলামী ব্যাংক এস-এমই লোন প্রদান করে। একটি দেশের শিল্পের মান অনুযায়ী ওই দেশের উন্নয়ন সাধিত হয়। ইসলামী ব্যাংক থেকে শিল্প খাতে লোন গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ
- ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স।
- জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসপোর্ট।
- ব্যবসার জায়গার দলিল প্রয়োজন হতে পারে।
৭. ইসলামী ব্যাংক রিয়েল এস্টেট ব্যবসার লোন
আধুনিক বাংলাদেশে বর্তমানে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আপনারা চাইলে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা করার জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারেন। জেনে নিন রিয়েল এস্টেট ব্যবসা কি এবং কিভাবে শুরু করবেন।
রিয়েল এস্টেট ব্যবসার খাত প্রসারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক রিয়েল এস্টেট খাতে লোন/ইনভেস্টমেন্ট প্রদান করে। লোন গ্রহনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ
- জমি সংক্রান্ত দলিল ও অন্যান্য ডকুমেন্ট।
- ব্যবসার মালিকগণের জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি ও ছবি।
- ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট।
- কোম্পানির প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ও ট্রেড লাইসেন্স।
ইসলামী ব্যাংক লোন ইন্টারেস্ট রেট
সাধারণত ইসলামী ব্যাংক লোন বা ইনভেস্টমেন্ট ইন্টারেস্ট রেট শতকরা ৭% থেকে ১৬% রিটার্ন রেট প্রযোজ্য হবে। তবে ইসলামী ব্যাংকের বেশিরভাগ লোনের ইন্টারেস্ট রেট মাত্র ৭% শতকরা। লোন হিসেবে ইন্টারেস্ট রেট পরিবর্তিত হয়।
এবং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় ইনভেস্টমেন্ট ইন্টারেস্ট রেট পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখে। তাই লোন নেয়ার পূর্বে অবশ্যই ইসলামী ব্যাংকের শাখায় উপস্থিত হয়ে ইন্টারেস্ট রেট সম্পর্কে সঠিক তথ্য জেনে নিবেন।
ইসলামী ব্যাংক লোন পরিশোধের নিয়ম
ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণের পরে, লোন পরিশোধের নিয়ম হল – আপনারা একসাথে ইসলামী ব্যাংকের লোন পরিশোধ করতে পারেন। এটা নির্ভর করবে আপনি কোন খাতে লোন নিচ্ছেন এবং কত টাকা লোন নিচ্ছেন তার উপরে।
ব্যাংক থেকে লোন গ্রহনের পূর্বে লোনের খাত নির্ধারণ করে লোন পরিশোধের নিয়ম সম্পর্কে ব্যাংক কর্মকর্তা থেকে জেনে নিবেন।
ইসলামী ব্যাংক লোন সুবিধা
- লোনের জন্য আবেদনের অল্প কিছুদিনের মধ্যে লোন গ্রহণ করতে পারবেন।
- এছাড়াও বিভিন্ন খাতে আলাদা ভাবে লোন গ্রহণ করতে পারবেন।
- বড় এমাউন্টের টাকা লোন গ্রহণ করতে পারবেন।
- লোনের টাকা পরিশোধের ক্ষেত্রে রয়েছে দারুণ সুযোগ।
- মাত্র ৭% হারে ইন্টারেস্ট রেট প্রদানের সুযোগ।
- খাত অনুযায়ী ডকুমেন্টস প্রদান করে লোন গ্রহণের সুযোগ।
এছাড়াও ইসলামী ব্যাংক ইনভেসমেন্ট তথা লোন গ্রহণকারীদের আরো অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে।
ইসলামী ব্যাংক লোন পাওয়ার যোগ্যতা
ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার জন্য সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা পূরণ করতে হয়। এখানে সাধারণ কিছু যোগ্যতা উল্লেখ করা হল:
- আবেদনকারীর একটি স্থিতিশীল আয় থাকতে হবে যা লোন পরিশোধের সামর্থ্য নিশ্চিত করে।
- সাধারণত আবেদনকারীর বয়স ২১ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হয়।
- আবেদনকারীকে একটি স্থায়ী চাকরি, ব্যবসা, অথবা আয়ের উৎস থাকতে হবে। সরকারী কর্মচারী, বেসরকারি চাকুরে, বা ব্যবসায়ী হিসেবে সঠিক ডকুমেন্টেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
- ভালো ক্রেডিট স্কোর এবং ঋণ পরিশোধের ইতিহাস থাকা প্রয়োজন। ব্যাংক আপনার ক্রেডিট রিপোর্ট পর্যালোচনা করবে।
- যেই সম্পত্তির জন্য লোন চাইছেন, তার প্রমাণ এবং আইনি কাগজপত্র প্রদান করতে হবে। সম্পত্তি হালনাগাদ ও আইনগতভাবে বৈধ হতে হবে।
- হোম লোনের জন্য সাধারণত একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ডাউন পেমেন্ট হিসেবে প্রদান করতে হয়।
- আবেদনকারীর লোনের আবেদন ও ব্যবহৃত অর্থ ইসলামী শরিয়াহর নিয়মের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে।
ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয়
ইসলামী ব্যাংক হোম লোন পদ্ধতি ও সুদের হার কত সম্পর্কে উপোক্তা আলোচনা থেকে জানলাম চলুন এখন জেনে নেই ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ কত টাকা লোন দেয়?। ইসলামী ব্যাংক হোম লোনের আওতায় সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত লোন প্রদান করা হয়, যা আবাসিক ভবনের জন্য প্রযোজ্য। ব্যবসায়িক ভবনের ক্ষেত্রে, লোনের পরিমাণ ব্যাংকের ইকুইটির ১০% পর্যন্ত হতে পারে, তবে এটি নির্দিষ্ট শর্তাবলী পূরণের ওপর নির্ভরশীল।
লেখকের শেষ মতামত
আশা করি ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আপনাদের যদি ব্যবসার কাজে অথবা নতুন বাড়ি তৈরিতে, ফ্রিল্যান্সিং এর কাজে, কৃষি কাজে লোন প্রয়োজন হয় তাহলে খুব সহজেই ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণ করতে পারেন।
এছাড়াও ইসলামী ব্যাংক অন্যান্য বিভিন্ন খাতে লোন প্রদান করে। লোন গ্রহনের জন্য অবশ্যই আপনার নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করবেন। প্রতারক চক্রের মাধ্যমে লোন গ্রহণ করতে গিয়ে, বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হতে পারেন। তাই এই ধরনের প্রতারক চক্র থেকে দূরে থাকবেন।
এই ছিল আজকের সরকারি চাকরিজীবীদের পার্সোনাল লোন সম্পর্কিত সকল তথ্য। এখানে সংক্ষেপে বিস্তারিত জানাতে চেষ্টা করেছি। এর বাইরেও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা কমেন্ট করে জানাবেন। আমরা আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকি।
তো বন্ধু আশা করছি আপনি আমার এই পোস্টটি পড়ে ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাবেন। আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করে দিতে পারেন। এতে করে তারাও ইসলামী ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারবে। ধন্যবাদ।