মাটি কাকে বলে? মাটি কত প্রকার ও কি কি

মাটি হচ্ছে পৃথিবীর এমন একটি উপাদান যা কিনা সর্বত্রই বিরাজমান রয়েছে। পানির গভীর অতলে খুঁজলেও আপনি মাটি পাবেন। তবে এক কথায় মাটিকে বলা হয়ে থাকে পৃথিবীর উপরিভাগের এমন একটি স্তর যেখানে উদ্ভিদ জন্ম নেয় এবং প্রাণী বসবাস করে।

মাটি কত প্রকার ও কি কি

আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে মাটি কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি সে বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই আপনার যদি মাটি সম্বন্ধে জানার আগ্রহ থাকে তাহলে অবশ্যই এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

মাটি কাকে বলে

মাটি হল পৃথিবীর পৃষ্ঠে থাকা উপরিভাগের এমন একটি স্তর যেখানে উদ্ভিদ জন্ম নেয় এবং প্রাণী বসবাস করে। এবং মাটি হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক স্তর যা শিলা, খনিজ পদার্থ, জৈব পদার্থ, পানি এবং বায়ুর মিশ্রণের মাধ্যমে গঠিত হয়। এই মাটি ব্যবহার করেই পৃথিবীতে মানবজাতি বেঁচে রয়েছে। শুধু মানবজাতি নয় সকল প্রাণীজাতীকুল এবং উদ্ভিদ ৯৫% মাটির উপর নির্ভরশীল। এই মাটি আবার কৃষি, বনায়ন নির্মাণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র বিশেষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

মাটির উপাদান কি কি

যেহেতু মাটি এমন একটি পদার্থ যা বিভিন্ন উপাদানের সঙ্গমিশ্রনে গঠিত হয়েছে তাই অবশ্যই মাটিতে রয়েছে আলাদা আলাদা বিভিন্ন উপাদান। এই প্রতিটি উপাদানের রয়েছে আলাদা আলাদা গঠন এবং আলাদা আলাদা কাজ। নিচে আমরা সকল উপাদান গুলোর নাম এবং কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করলাম।

১. খনিজ পদার্থ

মাটিতে থাকা সকল উপাদান গুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে উপাদানটি সেটি হচ্ছে খনিজ পদার্থ। এবং এই উপাদানটি প্রায় মাটির অধিকাংশ অংশ দখল করে বসে থাকে। এবং এই খনিজ পদার্থ আবার তৈরি হয়ে থাকে বালি, পলি এবং কাদার মাধ্যমে। এবং এই সকল উপাদানের সহায়তায় মাটিতে পানি ধরে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং সহজেই মাটি পানিকে ধরে রাখতে পারে।

২. জৈব পদার্থ

সাধারণত যেকোনো প্রাণী মৃত্যুবরণ করার পরে সেই প্রাণীর দেহ বসে মাটির উপরেই পড়ে থাকে কিংবা মাটির ভেতরে পুঁতে রাখা হয়। শুধু প্রাণী নয় এছাড়াও গাছপালা সহ আরো বেশ কিছু জীব জন্তুর দেহের অংশ মাটির উপরিভাগে কিংবা মাটির ভেতরে থাকে বলে এগুলো পচে যাওয়ার পরে এক ধরনের জৈব পদার্থ তৈরি হয়ে থাকে। আর এই সকল জৈব পদার্থের সহায়তায় মাটি উর্বরতা বৃদ্ধি পায় এবং গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

৩. পানি

মাটির মধ্যে থাকা সকল উপাদান গুলোর মধ্যে পানীয় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যার সহায়তায় উদ্ভিদের শিকড়ে পুষ্টি উপাদান পরিবহন করে থাকে। এছাড়াও মাটিতে পানি থাকাই উদ্ভিদ সহজেই বৃদ্ধি পায় এবং খাদ্য তৈরি করতে পারে।

৪. বায়ু

মাটির খনিজ কণাগুলোর মধ্যে বায়ু থাকে যা মাটিকে আরো বেশি উর্বর করে এবং শক্তিশালী গড়ে তোলে। যার সহায়তায় মাটির উপরে বেড়ে ওঠা উদ্ভিদ গুলোর অক্সিজেন সরবরাহ হয়ে থাকে।

৫. ব্যাক্টেরিয়া

মাটিতে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, জীবাণু এবং ছত্রাক এছাড়াও পোকামাকড় গুলো থাকে। এসকল ব্যাকটেরিয়া মাটির উপর বাসস্থান তৈরি করে এবং অবস্থান করে। এরফলে মাটিতে থাকা বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ কিংবা প্রাণীর মৃতদেহ গুলো ভেঙ্গে নতুন জৈব পদার্থ তৈরি করে। এছাড়াও ব্যাকটেরিয়া মাটির পুষ্টি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে থাকে।

৬. পুষ্টি উপাদান

মাটিতে থাকা অন্যান্য উপাদান গুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ একটি উপাদান হচ্ছে পুষ্টি উপাদান। মাটিতে থাকে এমন ধরনের কিছু পুষ্টি উপাদান যার সহায় উদ্ভিদ সহজেই বৃদ্ধি পায় এবং উদ্ভিদের জন্য এই উপাদান গুলো অত্যন্ত জরুরী। এ সকল পুষ্টি উপাদান গুলো হচ্ছে: নাইট্রোজেন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম। এই সকল পুষ্টি উপাদানের সহায়তায় মাটিতে যেকোনো ধরনের গাছ রোপন করলে তার সহজেই বেড়ে ওঠে এবং পুষ্টি পায়।

আরো পড়ুনঃ-  লেখাপড়ায় মনোযোগ বাড়ানোর গুরুত্বপূর্ণ টিপস

৭. লবণ ও খনিজ পদার্থ

মাটিতে সাধারণত লবণ ও খনিজ পদার্থ থাকে যা মাটির জন্য অত্যন্ত জরুরী। আর এই সকল লবন ও খনিজ পদার্থ গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ক্যালসিয়াম। এছাড়াও আরো বেশ কিছু খনিজ পদার্থ মাটিতে উপস্থিত থাকে। 

মাটি কত প্রকার ও কি কি

মাটিকে সাধারণত বেশ কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছে এর গঠন বৈশিষ্ট্য এবং উপাদানের উপর ভিত্তি করে। মাটিকে বিভিন্নভাবে ভাগ করা হলেও মাটিকে ৭টি ভাগে প্রধানত ভাগ করা হয়েছে, নিচে দেওয়া হলো:

  • বালি মাটি
  • দোআঁশ মাটি 
  • পাহাড়ি মাটি 
  • কাদা মাটি 
  • লাল মাটি 
  • কালো মাটি 
  • পিট মাটি 

নিম্নে সকল মাটির সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য গুলো আলোচনা করা হলো:

১. বালি মাটি

বালুমাটি হচ্ছে এমন একটি মাটি যা সাধারণত বড় আকারের খনিজ কোনার সমন্বয়ে গঠিত হয়ে থাকে। এই মাটিগুলো সাধারণত অধিকাংশই খনিজ পদার্থের মাধ্যমে উৎপন্ন হয়ে থাকে। আর এই মাটিতে বিশেষত শোষণ এবং নিষ্কাশনের ক্ষমতা থাকে। 

যার ফলে এই মাটি সাধারণত শুকনা অঞ্চলে পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের ফল এবং ফসল উৎপাদন করার জন্য বালুমাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে বেশ কিছু ফসল ফলাদি রয়েছে যা কিনা ভালো মাটিতে উৎপাদন করা সম্ভব হয় না।

এই মাটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটির বড় এবং খসখসে কণা হয়ে থাকে এবং কণাগুলো আলগা ভাবে যুক্ত থাকে ফলে বাতাস চলাচল সহজেই করতে পারে। এছাড়া এই মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা অনেক বেশি পরিমাণে থাকে যার ফলে পানি সহজে মাটির ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

পানি ধরে রাখার ক্ষমতা খুবই কম থাকে। যার ফলে আপনি যেকোনো ধরনের ফসল চাষ করে অনেক বেশি উপকারিতা এবং লাভ পেতে পারেন। তবে এই মাটিতে পুষ্টিগুণ অর্থাৎ জৈব পদার্থ এবং পুষ্টি উপাদান কম থাকে সচরাচর। যার ফলে এটি গাছের শিকড়ের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটায় এবং বাঃহিক রং এবং গঠন তুলনামূলকভাবে নরম হয়ে থাকে।

বালি মাটি সাধারণত কৃষি কাজে, নির্মাণ কাজে এবং গাছ লাগানোর কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিশেষত গাজর আলু তরমুজ এবং অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের রুট শাকসবজি চাষ করার জন্য এই মাটির উপযোগী। অর্থাৎ বিভিন্ন শুষ্ক মৌসুমের টিকে থাকার জন্য যে সকল সবজিগুলো রয়েছে সেগুলো চাষাবাদে অত্যন্ত জরুরি রয়েছে বালুমাটি। 

তাছাড়া নির্মাণ কাজে প্রায়শই বালুমাটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে এছাড়াও রাস্তাঘাট তৈরির ক্ষেত্রে কালভার্ট তৈরির ক্ষেত্রে কিংবা যে কোন নির্মাণ স্থাপনা ব্যবহার করার জন্য অবশ্যই বালু মাটির প্রয়োজনীয়তা অত্যাবশ্য। 

২. দোআঁশ মাটি 

দোআঁশ মাটি হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে উর্বর এবং চাষাবাদের জন্য সর্বোচ্চ এবং সর্বোত্তম উপযোগী একটি মাটি। এ মাটি তৈরি হয়ে থাকে বালি পলি এবং কাদামাটির মিশ্রণের সহযোগীতায়। দোআঁশ মাটিতে থাকে বালি পলি এবং কাদামাটির শুভমিশ্রণ যা ৪০ পার্সেন্ট ভ্যালি ৪০% পলি এবং 20% কাদামাটি দ্বারা গঠিত। 

এই মাটিটি অত্যন্ত নরম এবং ঝরঝরে হয়ে থাকে যার ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ধারণ করতে পারে তাছাড়া অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ক্ষমতাও রয়েছে দোআঁশ মাটির মধ্যে। এই মাটিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে জৈব পদার্থ এবং খনিজ পদার্থ যার ফলে গাছের পুষ্টি শোষণে সহায়তা করে। এছাড়া যে কোন প্রকারের গাছ লাগালে সহজেই তা বেড়ে ওঠে এবং ফল দিতে শুরু করে। 

আরো পড়ুনঃ-  গণতন্ত্র কি, গণতন্ত্রের সুফল ও কুফল এবং গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য

অধিকাংশ কৃষক চাষাবাদ করার জন্য এই মাটি ব্যবহার করে সর্বত্র। কারণ সকল প্রকারের শাকসবজি কিংবা যে কোন প্রকারের ফলমূলের গাছ কিংবা যেকোনো প্রকারের গাছ রোপন করার জন্য এটি অত্যন্ত বেশি ভূমিকা পালন করে।

তাছাড়া ছাদ বাগান যদি কেউ করতে চায় নিজের বাসায় তাহলেও খুব সহজেই দোআঁশ মাটি ব্যবহার করে ছাদ বাগান নির্মাণ করতে পারে। দোআঁশ মাটি সাধারণত হালকা বাদামি রঙ্গের হয়ে থাকে। তবে স্পর্শ করলে এই মাটি মসৃণ এবং নরম হয়ে থাকে। 

দোআঁশ মাটির বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। দোআঁশ মাটির মাধ্যমে খুব সহজেই পানি এবং পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে থাকে যা গাছের শিকড়ের দ্রুত বিস্তার নিশ্চিত করে। তাছাড়া দোআঁশ মাটি বিভিন্ন আবহাওয়াতে যেকোনো ধরনের ফসল ফলাতে সক্ষমতা রাখে এবং দীর্ঘ মেয়াদ ধরে এই মাটিতে চাষাবাদ করা সম্ভব। 

দোআঁশ মাটির অসুবিধা বলতে তেমন কোন অসুবিধা আপনি লক্ষ্য করতে পারবেন না। তবে যদি আপনি সঠিকভাবে মাটির পরিচর্যা না করতে পারেন এবং ময়লার স্তুপে পরিণত করে ফেলেন সেক্ষেত্রে আপনার মাটির ক্ষয় ঘটতে পারে। তাই অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে মাটিতে যেন আদরকারী কোন প্লাস্টিক কিংবা পলিথিন অতিরিক্ত না পড়ে।

তাই এই সকল কারণগুলো বিবেচনা করার মাধ্যমে দোআঁশ মাটি আপনি ব্যবহার করে যে কোন ধরনের ফসল উৎপাদন করতে পারেন। এছাড়া আপনি যদি ছাদ বাগান করতে চান কিংবা একটি বাগান তৈরি করতে চান সেক্ষেত্রেও দোআঁশ মাটি ব্যবহার করতে পারেন। 

৩. পাহাড়ি মাটি

পাহাড়ি মাটি সাধারণত পাহাড় এবং পার্বত্য অঞ্চল গুলোতে পাওয়া যায় এবং এটি একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মাটি যার সহায়তায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা যায়। সাধারণত এই সকল মাটি ব্যবহার করে আপনি সকল ধরনের চাষাবাদ করতে পারবেন না বটে তবে বেশ কিছু বনজ গাছ আপনি সহজেই এই মাটিতে চাষ করতে পারেন। 

যার ফলে পাহাড়ি অঞ্চল গুলোতে সহজেই চায়ের গাছ দেখা যায়। আপনিও চাইলে পাহাড়ি মাটি ব্যবহার করে চায়ের গাছ চাষ করতে পারবেন। এছাড়া পাহাড়ি মাটি সাধারণত পাথরে এবং দানাদার হয়ে থাকে যার ফলে এই মাটি থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে এবং এই সকল উপাদান ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করতে পারি। যার মধ্যে অন্যতম ফসল হচ্ছে চা, কফি কাজুবাদাম এবং মসলা জাতীয় আরো বেশ কিছু ফসল। 

তবে এই মাটির উর্বরতা অত্যন্ত কম থাকে স্বাভাবিকের তুলনায় যার ফলে এই মাটিতে অন্যান্য ফসল গুলো চাষ করা যায় না। তবে পাহাড়ি মাটিতে ঢালু জমি থাকায় সহজেই বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত হয়ে যায়।

৪. কাদা মাটি 

কাদামাটি হচ্ছে এমন একটি বিশেষ প্রকারের মাটি যা সাধারণত খুবই ছোট এবং ঘন কণার সমন্বয়ে গঠিত হয়ে থাকে। এবং এই মাটি সাধারণত কৃষি কাজে অত্যন্ত বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। সাধারণত কাদামাটির কণাগুলো খুবই ছোট এবং ঘন যার ফলে কণাগুলো জমাট বাঁধার প্রবণতা রাখে। 

এছাড়া কাদামাটিতে দীর্ঘ সময় ধরে পানি ধরে রাখার সক্ষমতা বজায় রাখে এবং নিষ্কাশন ব্যবস্থা অত্যন্ত ধীরগতির যার ফলে ধান জাতীয় সকল ধরনের ফসল সহজেই চাষাবাদ করা সম্ভব।

এছাড়া ভাটাতে ইট তৈরি করার জন্য কাদামাটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এবং নদীর বাঁধ নির্মাণ করার জন্যও কাদামাটি ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ যে সকল কাজগুলোতে মোটামুটি কিংবা এমন কোন ধরনের মাটির প্রয়োজন যেগুলো সহায়তায় খুব সহজেই অনেক স্থাপনা নির্মাণ করার প্রয়োজন সেগুলোতে কাদামাটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

আরো পড়ুনঃ-  নার্সিং পড়ার সুবিধা অসুবিধা - নার্সিং পড়ার যোগ্যতা

৫. লাল মাটি 

লাল মাটি হচ্ছে এমন একটি বিশেষ মাটির যে মাটিটির রঙ্গ হয়ে থাকে লাল এবং এই মাটিটি তৈরি হয়ে থাকে আইরন অক্সাইড এর মাধ্যমে। আর এই মাটির মধ্যে আয়রন অক্সাইড থাকার কারণে সাধারণত এর মাটির রং লাল হয়ে থাকে। সাধারণত ভারতে এই মাটির পরিমাণ অত্যন্ত বেশি দেখা যায়। এবং এই মাটি ঠান্ডা এবং শুষ্ক অঞ্চলে পাওয়া যায়। 

লালমাটি সাধারণত অধিকাংশ সময়ে লাল কালার হলেও বিভিন্ন সময় বাদামি কিংবা হলুদ রঙ্গের হয়ে থাকে। এই মাটি দানাদার কিংবা নরম গঠন করে থাকে। এই মাটিতে জৈব পদার্থ কম থাকার কারণে উর্বরতা তুলনামূলক অন্য মাটির তুলনায় অনেক কম হয়ে থাকে এবং এই মাটিতে ফসফরাস নাইট্রোজেন এবং চুনের অভাব রয়েছে। 

লাল মাটিতে পানি ধারণক্ষমতা মাঝারি হয়ে থাকে যা সহজেই শুকে যায় এবং বৃষ্টির কারণে সহজে ক্ষতি হয়ে থাকে লাল মাটির। লাল মাটিতে তুলা, চা, কফি চিনা বাদাম, তামাক এবং বিভিন্ন ধরনের ডাল জাতীয় ফসল উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন প্রকারের সৌখিন জিনিসপত্র যেমন মাটির পাত্র কিংবা বিভিন্ন ধরনের মাটির তৈজসপত্র তৈরীর জন্য লালমাটি ব্যবহার করা হয়।

৬. কালো মাটি 

কালো মাটিকে তুলার মাটি বলেও ডাকা হয়ে থাকে। এই কালো মাটি এমন একটি বিশেষ ধরনের মাটি যা প্রধানত উর্বর এবং কৃষি কাজের জন্য অত্যন্ত উপযোগী হয়ে থাকে। এই মাটি অধিকাংশ সময় ভারত মহারাষ্ট্রে দেখা যায় অত্যন্ত বেশি তবে বাংলাদেশের কিছু এলাকায় এই মাটি রয়েছে।

কালো মাটিতে প্রাকৃতিকভাবে অনেক বেশি সার থাকে যার ফলে এই মাটিতে বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে কোন প্রকার সার অতিরিক্ত ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা নেই। কালো মাটি ব্যবহার করে খুব সহজে তুলা, আখ, গম, ডাল এবং বিভিন্ন মসলা জাতীয় এছাড়া বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করা যায়।

মাটির গুরুত্ব 

মাটি হচ্ছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য একটি উপাদান। এবং মাটির সহায়তাই পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ কার্যক্রম সম্পাদন হয়। যেমন উদ্ভিদের বৃদ্ধি, মানবজাতির খাদ্য। ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম গুলোর জন্য মাটি জরুরি। মাটি উদ্ভিদ কে খাদ্য সরবরাহ এবং পুষ্টি সরবরাহ করে থাকে যার সহায়তায় উদ্ভিদ সহজেই বড় হয়ে যায়। এবং মাটি ব্যতীত উদ্ভিদ কখনোই খাদ্য উৎপাদন করতে পারে না। 

মাটির বিভিন্ন ধরনের জীববৈচিত্রের উৎস। মাটি ব্যতীত কোন ধরনের জীবজন্তু টিকে থাকতে পারত না পৃথিবীতে। তাই জীবজন্তুর টিকে থাকার পিছনে অর্থাৎ প্রাণীকুলের অস্তিত্বের পিছনে মাটির গুরুত্ব অপরিসীম। তাছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্যও মাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। মাটি বায়ু এবং পানি পরিশ্রমণ প্রক্রিয়া সহায়ক ভূমিকা পালন করে যার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে এবং পৃথিবীকে অতিরিক্ত তার থেকে রক্ষা করতে মাটি সহায়তা করে। এই সকল কারণে মাটির গুরুত্ব অপরিসীম।

মাটি সম্পর্কে আমাদের শেষ মতামত

আশা করি আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি খুবই সহজেই আপনি মাটি কাকে বলে, মাটি কত প্রকার ও কি কি? সে সকল বিষয়গুলো সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। আর একজন মানুষ হিসেবে আপনাকে মাটির গুরুত্ব সম্পর্কে কিংবা মাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানা দরকার ছিল, যা আপনি এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। এ ধরনের নিত্যনতুন বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জানতে চাইলে অবশ্যই আমাদের সাইটটি ভিজিট করার আমন্ত্রণ রইল।

Leave a Comment