দ্রুত হাইপ্রেসার কমানোর উপায় জানুন

হাইপ্রেসার আমাদের পরিচিত একটি সমস্যার নাম। এ সমস্যাকে নিরব ঘাতক বলা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের অসংখ্যা মানুষ হাইপ্রেসার সমস্যায় ভুগছে। তাই এ সমস্যা থেকে যাতে কোনো মারত্মক ক্ষতি না হয় সেজন্য আমাদের সবার জেনে রাখা উচিত দ্রুত হাইপ্রেসার কমানোর উপায় সম্পর্কে।

দ্রুত হাইপ্রেসার কমানোর উপায়

আমরা আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করেছি দ্রুত হাইপ্রেসার কমানোর উপায় সম্পর্কে। তাই দ্রুত হাইপ্রেসার কমানোর উপায় জানতে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ন পড়–ন। তো চলুন হাইপ্রেসার কমানোর উপায় জানুন।

হঠাৎ প্রেসার বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ

প্রেসার বলতে আমরা রক্তচাপকে বুঝি। কোনো ব্যাক্তির প্রেসার বা রক্তচাপ যদি স্বাভাবিকের থেকে উর্ধ্বে থাকে তাহলে সেটাকে বলা হয় হাইপ্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ। আবার কমে গেলে তা লো প্রেসার বা নি¤œ রক্তচাপ। চিকিৎসকের মতে, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির রক্তচাপ যদি ১২০/৮০ এর মধ্যে থাকে তাহলে সেটিকে স্বাভাবিক রক্তচাপ ধরা হবে। তবে ১৩০ পর্যন্ত স্বাভাবিক ধরা যেতে পারে। কিন্তু ১৩০ এর উপর হয় তাহলে সেটিকে হাইপ্রেসার হিসেবে ধরা হয়। আর নিচের রক্তচাপ ৯০ এর নিচে থাকতে হবে।

হাইপ্রেসারের সমস্যাটি একজন ব্যক্তির ক্ষেত্রে সবসময় দেখা যায় না। এটি উঠা নামা হতে থাকে। তবে অনেকেই বুঝে উঠতে পাড়ে না প্রেসার কখন বেড়ে যায়। ফলে এ থেকে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়। তবে শারিরিক কিছু লক্ষণ রয়েছে যেগুলো দেখে ধারনা করা হয় প্রেসার বেড়ে গেছে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক হঠাৎ প্রেসার বেড়ে যাওয়ার লক্ষণগুলো কি কি।

প্রেসারের লক্ষণগুলো হলো:

  • প্রেসারের লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো মাথা ব্যাথা বা মাথা ঘোরা। সাধারণ কোনো কারনেও মাথা ব্যাথা হতে পারে। তবে মাথা ব্যাথা যদি ক্রমাগত হতেই থাকে তাহলে একবার প্রেসার পরীক্ষা করে নেবেন।
  • অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠা হতে পারে প্রেসার বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ। সিড়ি বেয়ে উঠছেন! অল্প হাঁটার পর হাপিয়ে গেলেন বা শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে? তাহলে একবার পরীক্ষা করে নিন আপনার প্রেসার ঠিক আছে কি না।
  • ক্লান্তি বা দুর্বলতা হতে পারে প্রেসারের লক্ষণ। ক্লান্তি বা দুর্বলতা এ উপসর্গের বিভিন্ন কারন থাকতে পারে। তবে প্রেসারের সমস্যার কারনেও হয়ে থাকে।
    ক্স বুকে ব্যাথা বা বুক ধরফর করা প্রেসার বেড়ে যাওয়ার লক্ষন। অনেকেই বুকে ব্যাথা হলে গুরুত্বর ভাবে দেখেন না, তবে নিয়মিত বুকে হালকা ব্যাথা হলেও এটি প্রেসার বেড়ে যাওয়ার কারনে হয়ে থাকে।
  • আপনার ঘাড় ব্যাথা হতে পারে প্রেসার বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ। আমরা অনেকেই ভেবে থাকি ঘাড়ে ব্যাথা সাধারন উপসর্গ, হয়তো অনেক্ষন বসে কাজ করার ফলে এমন হচ্ছে। তবে এ উপসর্গ এড়িয়ে চলবেন না একবার প্রেসার পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো।
  • বমি বমি ভাব প্রেসার বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ। এটিকে অনেকেই গ্র্যাস্ট্রিকের সমস্যা বলে ভুল করে থাকেন। ক্রমাগত যদি আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতেই থাকে তাহলে একবার প্রেসার পরীক্ষা করে নিবেন।

প্রেসার বেড়ে যাওয়ার এগুলো সম্ভাব্য লক্ষণ। এসব লক্ষণ আপনার শরীরে দেখা দিয়েছে তার মানে নিশ্চিত না যে আপনার প্রেসার বেড়ে গেছে। তবে শরীরের কোনো উপসর্গ এড়িয়ে চলা উচিত নয়। বিশেষ করে তা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ক্রমাগত বাড়তে থাকে। তাই শরীরে এসব লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই প্রেসার পরীক্ষা করে নিবেন।

আরো পড়ুনঃ-  দাঁতের রুট ক্যানেল কেন করা হয় - দাঁতের রুট ক্যানেল খরচ

দ্রুত হাইপ্রেসার কমানোর উপায়

বর্তমানে অধিক হারে বাড়ছে প্রেসারের রোগী। রক্ত প্রবাহের চাপ হৃদপিন্ডের ধমনীতে অনেক বেশি হলে সেটিকে হাইপ্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়। সমীক্ষায় দেখা গেছে কমপক্ষে প্রতি পাঁচজনে একজন হাইপ্রেসারের সমস্যায় ভুগছে। তবে আক্রান্ত ব্যাক্তির মধ্যে অধিকাংশ রোগির জানা নেয় যে তারা এ সমস্যায় আক্রান্ত। এ রোগ থেকে প্রত্যেক মানুষের সতর্ক অবলম্বন করা জরুরি। কারণ এ রোগ থেকে শারিরিক বিভিন্ন সমস্যা যেমন-হার্ট অ্যাটাক, কিডনীর সমস্যা, হৃদরোগটিব ও স্ট্রোকের মতো মারাতœক সমস্যা হয়ে থাকে। প্রেসার যেকোনো সময় হঠাৎ করে বেড়ে যায়। এ অবস্থায় প্রেসার বেড়ে গেলে তা দ্রুত কমানোর চেষ্টা করতে হবে। তো চলুন জেনে নিন দ্রুত হাইপ্রেসার কমানোর উপায় সম্পর্কে।

  • হাইপ্রেসারের সমস্যা যদি আপনার আগে থেকেই হয়ে থাকে তাহলে বাড়িতে সবসময় আপনাকে প্রেসারের ঔষধ রাখতে হবে। অতপর হাইপ্রেসার বেড়ে গেলে তা দ্রুত কমাতে আপনার বাড়িতে থাক ঔষধ প্রথমে সেবন করবেন।
  • হাইপ্রেসার বেড়ে গেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রামের প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে যদি আপনি ধারনা করেন যে আপনার প্রেসার বেড়ে গেছে তাহলে আপনি শারিরিক চলাচল কমিয়ে দিন। কারণ শারিরিক চলাচলের ফলে হাইপ্রেসার আরও বেড়ে যায় এবং তা থেকে মারাতœক কোনো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
  • হাইপ্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে গেলে তাৎক্ষনাৎ তা কমাতে তেঁতুলের রস খেতে পারেন। তেঁতুলের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে আনতে পারে।
  • দ্রুত হাই প্রেসার নিয়ন্ত্রনে আনতে খেতে পারেন লেবুর রস। সেক্ষেত্রে হাফ গ্লাস পানিতে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে ২ ঘন্টা পর পর খাবেন।
  • হাইপ্রেসার বেড়ে গেলে সাময়িক উপশমের জন্য মাথায় পানি বা বরফ দিবেন।

অনেকের এসব করেও রক্তচাপ কন্ট্রোলে আসে না। সেক্ষেত্রে বেশি দেরি করবেন না যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। সবার ক্ষেত্রে প্রেসারের ঔষধ একই হয় না। তাই সুস্থ ব্যক্তির প্রেসার বেড়ে গেলে অর্থ্যাৎ যাদের এর আগে প্রেসার বাড়ে নি তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষধ খাবেন। তবে উপরের বলা নিয়মগুলো ফলো করবেন এতে রক্তচাপ কারও কারও ক্ষেত্রে কমে যাবে আর যদি কারও ক্ষেত্রে না কমে তাহলে সমস্যা বেশি হবার ভয় থাকবে না।

হাই প্রেসার কমানোর খাবার

হাইপ্রেসারকে বলা হয়ে থাকে নীরব ঘাতক। বাংলাদেশের প্রায় অনেক মানুষ হাই প্রেসার সমস্যায় ভুগছেন। হাই প্রেসার যাদের রয়েছে তাদেরকে সতর্ক হয়ে চলাফেরা করা জরুরি। সঠিক খাবার খাদ্য তালিকায় না থাকার কারনে অনেক সময় প্রেসার বেড়ে যায়। এমন অনেক খাবার রয়েছে যেগুলো হাইপ্রেসারের জন্য ক্ষতিকর আবার কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো হাইপ্রেসার সমস্যায় উপকারী। তাই হাইপ্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখতে একজন ব্যক্তিকে খাদ্য তালিকায় সঠিক খাবারগুলো রাখতে হবে। এ খাবারগুলো অতিরিক্ত হাইপ্রেসারকে কমাতে সাহায্য করে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক হাইপ্রেসার কমানোর খাবারগুলো কি কি-
হাইপ্রেসার সমস্যায় যা খাবেন:

  • হাইপ্রেসার রোগিদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি রাখতে হবে। যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, পালংশাক, শসা, মটরশুঁটি, লাউ, গাজর, কলমি শাক, মুলাশাক, পাটশাক, মুলা, ঢ্যাড়স, কুমড়ো, টমেটো ইত্যাদি।
  • পটাশিয়ামযুক্ত খাবারগুলো হাইপ্রেসার রোগিদের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন। তাই প্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখতে কলা, টমেটো, ডাবের পানি প্রভৃতি পটাশিয়ামযুক্ত খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় রাখবেন
  • হাইপ্রেসার রোগির খাদ্য তালিকায় রাখবেন চিয়া, কুমড়ো ও তিসির বীজ। এ শস্যবীজগুলোর মধ্যে পটাশিয়াম, মাগনেশিয়াম ও ফাইবার থাকে যা হাইপ্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে।
  • প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় তাজা ফল রাখবেন। তাজা ফলের মধ্যে খাবেন জাম্বুরা, লেবু, আমলকী, আপেল, পেয়ারা, মাল্টা, কমলা, কলা, ডালিম, নাশপাতি, পেঁপে ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ-  চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার উপায়

সুতরাং যারা হাইপ্রেসার বা উচ্চরক্তচাপ সমস্যায় ভুগছেন তারা চিকিৎসকের দেওয়া ঔষধ খাওয়ার পাশাপাশি খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনুন। শুধু ঔষধ খেলেই হবে না কারণ অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস সমস্যাকে জটিল করে তোলে। তাই যারা গভীরভাবে হাই প্রেসার সমস্যায় ভুগছেন তারা অবশ্যই উপরের বলা খাবারগুলো খাবেন আর ক্ষতিকর খাবার এড়িয়ে চলবেন।

হাই প্রেসার হলে কি খাওয়া উচিত না

স্বাস্থকর খাদ্যাভ্যাস একজন হাইপ্রেসার রোগীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন। কারণ ভুল খাবারের ফলে হাইপ্রেসার সমস্যা থেকে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কিডনী রোগের মতো মারাতœক রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গবেষনা থেকে প্রমানিত যাদের হাই প্রেসারের সমস্যা রয়েছে তাদের সমস্যা অতিরিক্ত পর্যায়ে যায় না যদি তাদের খাদ্যাভ্যাস সঠিক থাকে। তাই যেসব খাবার হাইপ্রেসারের সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে সেসব খাবার খাদ্য তালিকা থেকে পরিহার করতে হবে। তো চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক হাইপ্রেসার হলে কি খাওয়া উচিত না।

  • হাইপ্রেসারের সমস্যায় প্রথমে যে খাবার খাদ্য তালিকা থেকে পরিহার করতে হবে তা হলো লবণ। শরীরে অতিরিক্ত সোডিয়াম জমার কারনে হাইপ্রেসার হয়ে থাকে। আর লবণ এ অনেক সোডিয়াম থাকে। তাই হাই প্রেসার রোগির খাবার অল্প পরিমান লবন দিয়ে রান্না করতে হবে।
  • হাই প্রেসার সমস্যায় কফি এড়িয়ে চলুন। কারন কফি খাওয়ার ফলে রক্তনালী সরু হয়ে যায়, যার কারনে হঠাৎ করে হাইপ্রেসার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই যারা হাইপ্রেসার সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য কফি এড়িয়ে চলা ভালো। তবে যারা ছাড়তে পারছেন না তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মাঝে মধ্যে অল্প করে খেতে পারেন।
  • অ্যালকোহল ও কোমল পানীয় এ জাতীয় খাবারগুলো খুব দ্রুত হাই প্রেসারকে বাড়িয়ে দেয়। তাই এসব খাবার পরিহার করতে হবে এবং এর পরীবর্তে তাজা ফলের রস খাওয়ার অভ্যাস করুন।
  • হাই প্রেসার রোগিদের চর্বি ও ফ্যাট জাতীয় খাবারগুলো খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। উদাহরণস্বরুপ-গরু ও খাসির মাংস, পেস্ট্রি, মাখন, কেক ইত্যাদি।
  • এ খাবারগুলোর পাশাপাশি যে খাবারগুলোতে অতিরিক্ত কোলেস্টরল রয়েছে সে খাবারগুলো পরিহার করতে হবে। এছারাও চিনিযুক্ত খাবার, আচার, মুরগির চামড়া, ডিমের কুসুম, ফাস্ট ফুড, বেকারি খাবারগুলো হাই প্রেসার সমস্যা নিয়ন্ত্রনে রাখতে এড়িয়ে চলতে হবে।

চা খেলে কি প্রেসার বাড়ে

চা প্রেমিদের দিন যেন শুরু হয় না চা ছাড়া। তবে বিভিন্ন অসুস্থতার কারনে পচ্ছন্দের খাবার বা পানীয়গুলো আমাদের পরিহার করতে হয়। হাই ব্লাড প্রেসার কোনো ছোট সমস্যা নয়। এ রোগকে নিয়ন্ত্রনে না রাখলে এ থেকে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই এ রোগ নিয়ন্ত্রনে রাখতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনকে গুরুত্বসহকারে দেখা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে চিকিৎসার পাশাপাশি খাওয়া দাওয়ার বিষয়েও বিশেষভাবে সতর্ক অবলম্বব করতে হবে।

তো চা প্রেমীরা নিশ্চয় ভাবছেন? চা খেলে প্রেসার বাড়ার আশঙ্কা আছে কি না। তো চলুন নি¤েœর আলোচনা থেকে বিস্তারিতভাবে আমরা জেনে নিব চা খেলে প্রেসার বাড়ে কি না। তারপর ভেবে দেখবো চা আমরা হাই প্রেসার রোগিদের খাদ্য তালিকায় রাখতে পারবো কি পারবো না।

প্রথমেই বলি, চা খেলে প্রেসার বাড়ে না। তবে তা নির্ভর করবে আপনার চা কি কি উপকরণ দিয়ে বানানো এবং দৈনিক আপনি কতটুকু চা খাবেন তার উপর। ভেষজ চা আপনি যদি হাই প্রেসার রোগিদের জন্য দিয়ে থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে প্রেসার বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেয়। বরং ভেষজ চা হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে থাকে। এজন্য তুলসি চা, মৌরি চা, আদা চা, দারুচিনি চা, লেবু ও মধু চা প্রেসারের রোগিদের জন্য দিবেন। চিকিৎসকের মতে এ ধরনে ভেষজ চা পান করার ফলে প্রেসার বাড়ার কোনো আশঙ্কা নেয়।

আরো পড়ুনঃ-  বুকের মাঝখানে ব্যথা হলে করণীয় - বুকে ব্যথার ঔষধ

এছারাও খেতে পারেন গ্রিন টি। গ্রিন টি হাই প্রেসার রোগিদের জন্য উপকারী। তবে প্রেসারের রোগিদের চিনি দিয়ে চা খাওয়া স্বাস্থের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। চিনি দিয়ে চা খেলে প্রেসার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে মনে রাখবেন সকল ব্যক্তির প্রেসারের ধরন একই রকম নয়। কারও ক্ষেত্রে দৈনিক অল্প পরিমাণে চিনি চা অথবা দুধ চা খাওয়া যায়। তাই সঠিক তথ্য পেতে স্বাস্থ বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন।

দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায়

আমাদের সবার পরিচিত একটি শারিরিক সমস্যার নাম হাই প্রেসার। যারা হাই প্রেসার বা উচ্চ রনক্তচাপ সমস্যায় ভুগছে তাদের হাই প্রেসার যদি হঠাৎ করে বেড়ে যায় তাহলে শরীরে বিপজ্জনক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তাই আমাদের প্রত্যেকের জেনে রাখা উচিত দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয় উপায় সম্পর্কে।
দ্রুত হাইপ্রেসার বেড়ে গেলে চিন্তিত হবেন না। নিজেকে কন্ট্রোলে রেখে কিছুক্ষন বিশ্রাম নিন। বিশ্রাম নেওয়ার ফলে অনেকের প্রেসার কমে যায়। এতেও যদি প্রেসার না কমে তাহলে রক্তের চাপ কমাতে তেঁতুলের রস অথবা লেবুর পানি খেতে পারেন। অনেক সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি শরীরে না থাকলে হাই প্রেসার হয়ে থাকে। তাই এ সময় পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করুন। এরপর হাই প্রেসার সবসময় নিয়ন্ত্রনে রাখতে ডায়েটে পরিবর্তন আনুন।

তবে মনে রাখবেন যদি আপনার প্রেসার বাড়ার সাথে সাথে অন্য কোনো লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে ঘরোয়া উপায়গুলো দিয়ে প্রেসার কমানোর চেষ্টা করবেন না, যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। লক্ষনগুলো হলো-

  • মুখ বেঁকে যাওয়া
  • মুখের কথা আটকে যাওয়া
  • পেটে ব্যাথা
  • হাত পা অবশ হয়ে যাওয়া না নাড়াতে না পারা।
  • প্রচুর পরিমাণে অস্থির লাগা
  • শ্বাসকষ্ট হওয়া
  • প্রসাবের পরিমাণ কমে যাওয়া

কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত

শরীর সবসময় সুস্থ রাখতে প্রেসার বা রক্তচাপ ঠিক থাকা জরুরি। তাই আমাদের বছরে একবার হলেও রক্তচাপ পরীক্ষা করে নেওয়া প্রয়োজন। তবে এ বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দেয় না অনেকই। আমাদের শরীর বয়সের সাথে পরিবর্তন হয় ফলে সবার রক্তচাপের ধরন একই হয় না। আবার লিঙ্গ ভেদে রক্তচাপ আলাদা হয়ে থাকে। আমাদের অনেকের জানা নেয় কোন বয়সে স্বাভাবিক প্রেসার বা রক্তচাপ কত থাকা উচিত। চলুন জেনে নিই কোন বয়সে প্রেসার কত থাকা উচিত।

  • ১৮ থেকে ৩৯ বছর বয়সী পুরুষদের স্বাভাবিক প্রেসার 119/70 mmHg এবং এ বয়সী নারীদের প্রেসার 110/68 mmHg
  • ৪০ থেকে ৫৯ বছর বয়সী পুরুষদের স্বাভাবিক প্রেসার থাকে 122/74 mmHg   এবং এ বয়সী নারীদের 124/77 mmHg প্রেসার থাকা স্বাভাবিক।
  • ৬০ বছরের উর্ধ্বে পুরুষদের স্বাভাবিক প্রেসার 139/68 mmHg এবং এ বয়সী নারীদের স্বাভাবিক প্রেসার 133/69 mmHg থাকা উচিত।

বয়স অনুযায়ী কারও প্রেসার বা রক্তচাপ উপরের বলা নিয়মে থাকলে ভেবে নিবেন রক্তচাপের পরিসীমা স্বাভাবিক অর্থ্যাৎ স্বাস্থকর।

পরিশেষে বলতে চাই, সুস্থ জীবন পেতে হলে আমাদের সবার রক্তচাপ ঠিক থাকা জরুরি। তাই যাদের প্রেসার বা রক্তচাপ এখনও বাড়ে নি স্বাভাবিক রয়েছে তারা জীবনধারায় পরিবর্তন আনুন। জীবনধারায় স্বাস্থকর পরিবর্তন হাই প্রেসার প্রতিরোধের উত্তম মাধ্যম। আর যারা হাইপ্রেসার সমস্যায় ভুগছেন তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চলার চেষ্টা করুন, পাশাপাশি তারাও স্বাস্থকর পরিবর্তন আনুন। সঠিক নিয়মে চললে অবশ্যই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব।

Leave a Comment