হেবা দলিল কি – হেবা বিল এওয়াজ দলিল বাতিল করার নিয়ম

সম্মানিত পাঠক, আপনি কি হেবা বিল এওয়াজ দলিল বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্য জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই নিয়ে সঠিক সন্ধান পেতে আপনি একদম ঠিক স্থানেই এসেছেন। আমরা আজকের এই ব্লগ পোষ্টে আপনাদের সুবিধার কথা ভেবেই হেবা বিল এওয়াজ দলিল বাতিল করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। 

হেবা বিল এওয়াজ দলিল বাতিল করার নিয়ম

তো আপনি যদি আজকের সম্পন্ন ব্লগ পোষ্ট জুড়ে থাকেন, তাহলে হেবা বিল এওয়াজ দলিল বাতিল করার নিয়ম জেনে নেওয়ার পাশাপাশি হেবা দলিল কি, হেবা দলিলের কয়টি শর্ত রয়েছে এবং ডিক্লারেশন অফ হেবা কে কাকে করতে পারবে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে প্রথমে হেবা বিল এওয়াজ দলিল সম্পর্কে কিছু বিশেষ তথ্য সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।

উপস্থাপনা

বেশ কিছুদিন ধরেই আমি খেয়াল করছি যে গুগলে কিভাবে হেবা বিলে এওয়াজ দলিল বাতিল করা হয় এ বিষয়ে। তো যারা এ বিষয়ে সঠিক তথ্যটি জানেন না তাদের জন্য আরটিকালটি লিখা হয়েছে। আপনি যদি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে বুঝতে পারবেন।

আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে আজকের আলোচনাটি কি নিয়ে হবে আমার এই আর্টিকেলটির হেডিং দেখে। আজকের আলোচনার মূল বিষয় হচ্ছে হেবা দলিল কি আসলে বাতিল করা যায় এবং যদিও বা বাতিল করা যায় তাহলে কি উপায় এটি বাতিল করতে হবে। এই বিষয়ে আলোচনা করব বিষয়টি সম্পূর্ণ জানার জন্য আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

হেবা দলিল কী

হেবার বাংলা অর্থ হচ্ছে মূলত দান করা এবং ইংরেজিতে গিফট এবং এটি যদি আরবিতে আমরা বলতে যায় তাহলে সেটি হবে হেবা। কিন্তু এখানে দান এবং হেবার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এটি মূলত নিজের বা একান্তই নিকটস্থ আত্মীয় সজনদের মাঝে প্রদান করা যায়। 

আরো পড়ুনঃ-  অনলাইনে জমির রেকর্ড বের করার নিয়ম

এবং এটি রিস্টারন করার জন্য আপনাকে শুধুমাত্র একশো টাকা খরচ করতে হবে। এবং দান হচ্ছে কোন একটি দূরবর্তী মানুষকে প্রদান। এখন আপনি যদি দূরবর্তী আত্মীয়দের কে দান করতে চান তাহলে জমিটির দাম অনুযায়ী ৮% রেজিস্ট্রেশন ফ্রি দিতে হয়। 

এখন মূল কথা হচ্ছে হেবাকি আপনি যদি সুস্থ মস্তিষ্কে আপনার কোন নিকটস্থ আত্মীয়-স্বজনকে কোন দানের দাম না নিয়ে সদিচ্ছায় এটি প্রদান করছেন এটিকে মূলত হেবা দান গিফট এগুলো বলা হয়। সহজ ভাষায় বলতে গেলে কেউ যদি তার আত্মীয়দেরকে স্বেচ্ছায় কোন প্রকার টাকা পয়সা না নিয়েই জমি দিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়াকে হেবা বলে।

হেবা দলিলের কয়টি শর্ত রয়েছে

অনেকেই জানে না যে এটির কি আবার কোন শর্ত আছে। আর যদি আবার শর্ত থাকে তাহলে কি কি শর্ত এবং কয়টি শর্ত আছে। তো আপনাদেরকে এখন বলি হেবা দলিলের শর্ত কয়টি। হেবা দলিলের সাধারনত মোট ৩টি শর্ত রয়েছে। ডিক্লারেশন অফ হেবা পালন করতে হলে এই ৩ টি শর্তই পালন করাটা জরুরি। 

  • ১। আপনি যদি কোন ব্যক্তিকে হেবা দলিল প্রদান করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে এটি ঘোষণা দিতে হবে। অনেক মানুষকে এটি জানানো অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ কেননা পরবর্তীতে এ সম্পর্কে সমস্যা হতে পারে। 
  • ২। এখন মূল কথা হচ্ছে আপনি যাকে ডিক্লারেশন অফ হেবা দিচ্ছেন তাকে এই হেবাটি গ্রহণ করতে হবে। এখন আপনি যদি তাকে হেবা প্রদান করেন এবং ওই ব্যক্তিটি যদি না গ্রহণ করে তাহলে আপনার এটি কোন কাজে আসবে না।
  • ৩। আপনি যে জমিটি ডিলারেশনের সেবা করছেন এবং যাকে এটি করছেন। এটি আসলে আপনার জমি কিনা সেটা তো আর ওই ব্যক্তি নাও জানতে পারে তাই না তো এই জন্য আপনাকে ওই জমির দখল তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। কেননা পরবর্তীতে যেন এ বিষয়ে কোন সমস্যা না হয়।
আরো পড়ুনঃ-  মুসলিম আইনে সম্পত্তির বন্টন - উত্তরাধিকার সম্পত্তি বন্টন

এখন আপনাকে অবশ্যই এই তিনটি কথা মনে রাখতে হবে। কেননা এই তিনটে কথা যদি আপনি মনে না রাখেন তাহলে আপনার ডিক্লারেশন অফ হেবা করতে আপনি পারবেন না।

হেবা বিল এওয়াজ দলিল বাতিল করার নিয়ম

বাংলাদেশের সরকারের নিয়ম অনুযায়ী যদি আপনার সকল ধরনের কাগজপত্র থাকে এবং যতগুলো কাজ সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে আপনি যদি সম্পূর্ণ কাজগুলো করতে পারেন এবং নিয়ম মত কাজ করেন। এবং এগুলো কাজ করা শেষ হলে দলিলটি আপনি যদি বাতিল করার জন্য মত প্রকাশ করেন তাহলে এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই একটি বিষয়ে মনে রাখতে হবে।

কথাটা শুনতে খারাপ হলেও আপনার জমি যদি হেবা আওয়াজ হয়ে যায় তাহলে সকল কাগজ হওয়ার পর এটি আর বাতিল করা সম্ভব হবে না কোন উপাইয়ে। কেননা এটি সরকারি খাতায় উঠে গেছে তাই এটি কখনোই আর সম্ভব না। আপনি যদি চান যে দলিলটি দিয়ে দেওয়ার পর বাতিল করতে তাহলে এটি সম্ভব হবে না।

সেটা হেবা দলিল ই হোক কিংবা গিফট দলিল হোক অথবা দান দলিলে হোক না কেন। সেটা যদি সঠিক ফর্মেটে এবং সঠিক নিয়মে কাজ করা হয়ে থাকে। এবং মূল কথা হচ্ছে দলিলটি যদি বৈধভাবে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে। তাহলে আপনি চাইলেও এটি পরিবর্তন আর করতে পারবেন না।

এটা শুধুমাত্র এই দলিলের ক্ষেত্রেই নয় আপনি যেকোনো দলিলের ক্ষেত্রেই এই কাজটি হবে। দলিল একবার রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে দ্বিতীয়বার আর ঠিক করা যায় না এই কথাটি আপনার মাথায় রাখতে হবে। এখন মূল কথা হচ্ছে এটি কি আসলে বাতিল করা যাবে না হ্যাঁ যাবে কিন্তু এর জন্য আপনাকে কোর্টে মামলা করতে হবে।

আমি এটি আর দিতে চাই না সেই মামলায় উল্লেখ থাকতে হবে। এভাবে আপনাকে মামলা করে সেই মামলা কন্টিনিউ করতে হবে তারপরে আদালত সেই হিসেবে রায় দিয়ে দিলে আপনি আপনার জমিটি আপনি ফেরত পেয়ে যাবেন। আপনাকে কোট থেকে ডিগ্রী নিয়ে এসে এই ডিক্লারেশন অফ হেবা বাতিল করতে হবে।

আরো পড়ুনঃ-  ভূমি জরিপ কি? ভূমি জরিপের উদ্দেশ্য এবং প্রয়োজনীয়তা

এই একমাত্র উপায় ছাড়া রেজিস্ট্রেশন আইন অনুযায়ী কোন দলিল বাতিল করতে পারবেন না আপনি। আশা করি আপনার কাঙ্খিত প্রশ্নের উত্তরটি আপনি জানতে পেরেছেন।

ডিক্লারেশন অফ হেবা কে কাকে করতে পারবে

বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের আইন মোতাবেক ৩ ধরণের ব্যক্তিকে ডিক্লারেশন অফ হেবা করা যায়।

আপনি ঊর্ধপুরুষকে এটি প্রদান করতে পারবেন যেমনআপনার বাবা এবং মাকে ডিক্লারেশন অফ হেবা করতে পারবেন। ঠিক একই ভাবে আপনার ছেলে ও মেয়েকেও করতে পারবেন। 

এখন গেল আপনার ঊর্ধপু রুষ এবং নিম্ন পুরুষদের আপনি ডিক্লারেশন অফ হেবা করতে পারবেন। এবং আরেক ডিগ্রির মানুষ হচ্ছে আপনার বাবার বাবাকে আপনি ডিক্লারেশন অফ হেবা করতে পারবেন। এবং আপনার সন্তানদের দিতে পারবেন।

তাছাড়া স্বামী স্ত্রীকে ডিক্লারেশন করতে পারবেন এবং স্ত্রী স্বামীকে করতে পারবেন। এবং আপনার ভাইবোনদের এটি করতে পারবেন। একইভাবে ১০ থেকে ১৫ শ্রেণীর মানুষকে আপনি এই ডিক্লারেশন অফ হেবা করতে পারবেন।

হেবা বিল এওয়াজ দলিল সম্পর্কে লেখকের মতামত

আমরা ইতিমধ্যে হেবা বিল এওয়াজ দলিল বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি আমার হেবা বিল এওয়াজ দলিল বাতিল করার নিয়ম নিয়ে লেখা এই পোষ্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। এই ব্লগ পোষ্টটি নিয়ে আপনাদের মাঝে কোন মতামত কিংবা মনে কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

আপনি চাইলে শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে তাদেরও জানানোর সুযোগ করে দিতে পারেন। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে হেবা বিল এওয়াজ দলিল বাতিল করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত অনেক তথ্য আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।

Leave a Comment