তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

সম্মানিত দ্বীনি ভাই ও বোনেরা আপনারা কি তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্য জানতে চাচ্ছেন? তাহলে তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত সম্পর্কে একেবারে বিস্তারিভাবে তথ্য জানতে আপনারা একদম সঠিক স্থানেই প্রবেশ করেছেন। কেননা আপনাদের কাঙ্খিত তথ্য দেওয়ার জন্যই আজকের এই আর্টিকেলে তাহাজ্জুদ নামাজের ফযিলত ও গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

তো আপনি যদি আজকের সম্পন্ন আর্টিকেলজুড়ে থাকেন, তাহলে তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত জেনে নেওয়ার পাশাপাশি তাহাজ্জুদ নামাজ কি, তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে কি হয় এবং তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে তাহাজ্জুদ নামাজ সম্পর্কে কিছু বিশেষ তথ্য সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।

উপস্থাপনা – তাহাজ্জুদ নামাজ

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হবার আগেই আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া আবশ্যক ছিল। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো তাঁর জীবন দশায় তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া থেকে বিরত থাকেনি। তাহলে চলুন তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ও ফজিলত জানি।

তাহাজ্জুদ নামাজ কি

তাহাজ্জুদ মূলত আরবি শব্দ থেকে এসেছে যার আভিধানিক অর্থ হল রাত জেগে থাকা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় এই তাহাজ্জুদ শব্দটি নিদ্রা এবুং জাগ্রত হওয়া মানে মোট কথা হচ্ছে এই দুটি শব্দ পরস্পর বিরোধী দটি অর্থে ব্যবহার হয়ে থাকে। মহান রাব্বুল আলামীন এর নৈকট্য লাভ করার জন্য গভীর রাতের নফল ইবাদতের নামাজের নাম হচ্ছে তাহাজ্জুদ।

তাহাজ্জুদ শব্দটি মূলত আরবি ‘হাজ্জাদা’ শব্দ থেকে এসেছে। কোন ব্যক্তি যদি গভীর রাতে নামাজ আদায় করে থাকে তাহলে ‘তাহাজ্জাদা ফিল লাইল’ বা একথায় সেই ব্যক্তি সে রাতে তাহাজ্জুদ আদায় করেছে। 

আরো পড়ুনঃ-  রিজিক নিয়ে আল্লাহার বানী - রিজিক বৃদ্ধির দোয়া

তাহাজ্জুদ এর সালাত আদায় করার জন্য গভীর রাতে ঘুম থেকে গেজে উঠা। মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র আল কোরআনে সুরা বনি ইসরাইল, ৭৯ আয়াতে বলেছেন, ‘রাতের কিছু অংশে তোমার জন্য নফল হিসেবে তাহাজ্জুদ আদায় করো।’

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে কি হয়

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে মনের সকল ইচ্ছা পূরণ হয়ে যায়। মন থেকে যা চাইবেন তাই আল্লাহতালা পূরণ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেছেন, যারাই ইবাদত আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করতে চেয়েছেন! তারা সবাই রাত জেগে তাহাজ্জুদ নামাজ করেছিলেন। তাই তাহাজ্জত নামাজ পড়া আমাদের জন্য এত বেশী গুরুত্বপূর্ণ। এবং আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভ করতে গেলে তাহাজ্জুদ নামাজের বিকল্প কিছু নেই। তাহলে আমরা আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে  সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা গুলি জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত কি তা জেনে নেওয়া যাক।

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

তাহাজ্জত নামাজ হলো সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ। ইসলামের সূচনার সুরের যুগে এটি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও উম্মত সবার প্রতি ফরজ ছিল। মহানবী সাঃ এর মেরাজের পর তা নফল হয়ে যায়। 

মহান আল্লাহ তা’আলা নিজেই তাহাজ্জুদ ভিরু বান্দাদের অগ্রগতির স্বীকৃতি দিয়েছেন যথা মহান আল্লাহ তা’লা পবিত্র আল কোরআনে এরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি গভীর রাতে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সিজদার মাধ্যমে এবং মহান আল্লাহ তা’আলার রহমত প্রত্যাশা করে তাহলে মৃত্যুর পরে অবশ্যই আমরা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেয়ে যাব ইনশাল্লাহ।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তা’আলা সূরা ফুরকানে প্রিয় বান্দার জন্য ১৩ টি বিশেষ গুণাবলী এবং আমল বর্ণনা করেছেন। আর সেই ১৩টি বিশেষ গুণাবলীর মধ্যে একটি হলো তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা। আপনি যদি নিয়মিত তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করেন তাহলে তার আমলনামা ভারী হবে এবং কেয়ামতের ভয়াবহ বিপর্যয় এর কঠিন হিসাব নিকাশের দিনে রেহায় পেয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।

আরো পড়ুনঃ-  ইসলামে ধনী হওয়ার উপায় - দ্রুত ধনী হওয়ার আমল

মহান আল্লাহ তায়ালা তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত অনেক বেশি দিয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা তাহাজ্জুদ পড়া বান্দাদের জন্য জান্নাতে অসাধারণ বাসভূমি সজ্জিত করে রেখেছে। কোন এক হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন জান্নাতে এমন কিছু কক্ষ থাকবে যার ভেতরের অংশ বাহির থেকে এবং বাহিরের অংশ ভেতর থেকে দৃষ্টি গোচর হবে। মহান আল্লাহতালা ইজ্জত রোজ হাশরে সমগ্র সৃষ্টি কুলের উপস্থিতিতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারী প্রিয় বান্দাদের মহান সম্মানের অধিষ্ঠিত করবেন। 

যখন মহান আল্লাহ তা’আলার পূর্ববর্তী মানবম-লীতে একসাথে করিবেন তখন তার পক্ষ হতে আহ্ববান করবেন হে হাশরের মাঠে জানতে পারবে যে মহান আল্লাহ তা’আলার নিকট সবচেয়ে বেশি সম্মান এবং মর্যাদা পাওয়ার অধিকারী কে? অধিকারী লোকজনকে দাঁড়াতে আহ্বান জানানো হবে। এবং এই আওয়াজ শুনে এ সকল লোক দাঁড়িয়ে পড়বে যাদের সংখ্যা হবে খুবই নগণ্য। 

প্রতিটি মুমিন ব্যক্তি চাই যেন আল্লাহ তার মনের সকল চাওয়া পাওয়া মিটিয়ে দেয় এবং তার ইবাদত বন্দেগী কবুল করেন ও ভুলগুলো ক্ষমা করে দেয়। কিন্তু এই সকল নেয়ামত আপনি তখনই পাবেন যখন আপনি তাহাজ্জত নামাজ পড়তে অভ্যস্ত ছিলেন। তাহলে আমরা আশা করছি আপনারা এই অংশ থেকে তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা গুলি জানতে পেরেছেন। এবার চলুন, তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব জেনে নেওয়া যাক।

তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব

আমাদের প্রতিটা মুসলমান জাতিরজীবনে তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়মিত আদায় করার ফলে মহান আল্লাহ তা’আলার নৈকট্য লাভ করতে পারব। তাছাড়া আমরা সারা জীবনে পূর্ববর্তী সময়ে যতগুলো পাপ কাজ করেছি সেগুলো পাপ কাজ থেকে মুক্ত এবং মাফ পাওয়ার জন্য তাহাজ্জুদ নামাজ উত্তম। আমাদের মধ্যে অনেকেই তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে সেভাবে জানে না।

তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা প্রতিটা মুমিন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে গুরুত্ব অপরিসীম। মনের যতগুলো ইচ্ছা রয়েছে সেগুল পূরণ করতে, প্রতিটা বিপদ আপদ থেকে রেহায় পাওয়ার জন্য, পাপমুক্ত কিংবা পাপ কাজ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এবং টাকা পয়সার অভাব দূর করতেন তাহাজ্জুদ নামাজ বিশেষভাবে উপকার করতে পারবে। তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা’আলা এবং আল্লাহ তায়ালার প্রেরিত সকল নবী রাসূলগণ এর বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ করে দিয়েছেন।

আরো পড়ুনঃ-  একজন ইমামের বৈশিষ্ট - ইমামের শর্ত কয়টি

আমরা যদি নিয়মিত সময় অনুযায়ী তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে পারি তাহলে আমাদের মনের সকল ইচ্ছা সহজে পূরণ করতে পারব ইনশাল্লাহ। তাই পরিশেষে বলা যায় যে তাহাজ্জুদ নামাজ এর গুরুত্ব প্রতিটা মুমিনের জীবনে বিশেষ পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। আশা করি তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

তাহাজ্জুদ নামাজ সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা এবং সকল রাসূলগণ বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ করেছেন। তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে যেগুলো গুরুত্ব আমাদের জীবনে বসে নিয়ে আসবে সেই সম্পর্কেও উল্লেখ করেছেন। তাই আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে তাহাজ্জুদ নামাজের তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে জানানোর জন্য বিশেষভাবে প্রচেষ্টা করা হলো। 

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত সম্পর্কে লেখকের মতামত

আমরা ইতিমধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলতয এবং বা তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত নিয়ে লেখা এই পোষ্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। এই তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ে আপনার মনে কোন মতামত কিংবা মনে কোন প্রশ্ন থেকে থাকলে যেকোন সময় কমেন্ট করে জানাবেন।

আর আপনি যদি মনে করেন যে তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব আমার যেই বন্ধু এই বিষয়ে জানেন না তাকে শেয়ার করে জানার সুযোগ করে দিবেন। এজন্য আমাদের পোষ্টের শেষে শেয়ার অপশনে গিয়ে এই পোষ্টটি শেয়ার করতে পারেন। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত অনেক তথ্য আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।

Leave a Comment