সম্মানিত পাঠক, আপনি কি জমি খারিজ না করলে কি হয় – জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্য জানতে চাচ্ছেন? তাহলে এই নিয়ে সঠিক সন্ধান পেতে আপনি একদম ঠিক জায়গাতেই এসেছেন। আমরা আজকের এই ব্লগ পোষ্টে আপনাদের সুবিধার কথা ভেবেই জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
তো আপনি যদি আজকের সম্পন্ন ব্লগ পোষ্ট জুড়ে থাকেন, তাহলে জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে তা জেনে নেওয়ার পাশাপাশি জমি খারিজ না করলে কি হয়, ই খারিজ করতে কি কি লাগে, জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে তা জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে প্রথমে জমি খারিজ সম্পর্কে কিছু বিশেষ তথ্য সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।
উপস্থাপনা – জমি খারিজ
যাদের যাদের জমি রয়েছে এবং যারা নতুন জমি কিনতে চাচ্ছেন তাদের কিন্তু অবশ্যই নিজের জমি খারিজ করে নিতে হবে। এবং এটি হচ্ছে আমাদের সরকারের আদেশ। অথবা আমাদের জমি গুলোকে যাতে পরবর্তীতে অন্য কোন ব্যক্তি অংশীদার হিসেবে নিজেকে দাবি করতে না পারে।
মূলত এই জন্যেই জমি খারিজ করা হয়। কিন্তু অনেক মানুষ হয়েছে যারা কিন্তু জানে না যে এই জমি খারিজ করলে কি হয়। এবং এ কথা তাদের যদি বলা হয় তাইলে তারা বলে যে অযথা টাকা নষ্ট করার কি দরকার তাই না। তো মূলত যারা এই সকল কথা বলে থাকে কিন্তু তারা সঠিক তথ্য জানেন না।
তারা যেন খুব সহজেই সঠিক তথ্যটি জানতে পারে এবং কাজে লাগাতে পারে। তাহলে আসুন অযথা সময় নষ্ট না করে মূল আলোচনায় চলে যায়।
ই নামজারি কি
পূর্বে জমির খারিজ বা নামজারি করা হতো একমাত্র সরাসরি আবেদন ফরম পূরণ করে। এখন ভুমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনলাইনে জমি খারিজ করার ব্যবস্থা করেছে, যাতে ঘরে বসেই নাগরিকগন তাদের জমির খারিজ বা নামজারির আবেদন করতে পারেন। অনলাইনে জমির খারিজের আবেদনের মাধ্যমে যে নামজারি করা হয় তাকেই ই নামজারি বলা হয়।
জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে
আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা জমি খারিজ করতে গিয়ে বিভিন্ন ঝামেলায় পড়তে হয়। তার মধ্যে অন্যতম ঝামেলা হল জমি খারিজ করে কত খরচ হয় সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য জানে না। তো আপনি যদি জমি খারিজ করতে খরচ হয় তা না জানেন, তাহলে এই অংশ থেকে সঠিক তথ্য জানুন।
- আবেদনে কোর্ট ফী বাবদ ২০ টাকা ,
- নোটিশ জারি ফী বাবদ ৫০ টাকা,
- আবেদন অনুমোদন হয়ে গেলে খতিয়ান ফি বাবদ ১০০ টাকা,
- রেকর্ড সংশোধন ফি বাবদ ১ হাজার টাকা,
- নামজারী করতে সর্বমোট ১১৭০ টাকার মতো খরচ করতে হবে। তবে অনেক সময় কম-বেশি হতে পারে।
বাংলাদেশে মিউটেশন খরচ কত
- ২০ টাকা কোর্ট ফি
- ৫০ টাকা নোটিশ ইস্যু ফি
- ১,০০০ টাকা রেকর্ড সংশোধন ফি
- এবং ১০০ টাকা মিউটেশন লেজার সংগ্রহ ফি বিবেচনায় নিলে, রেজিস্ট্রেশনের মোট খরচ ১,১৭০ টাকার সমান।
জমি খারিজ না করলে কি হয়
কোন দাতার নিকট হতে জমি বা সম্পত্তি বৈধভাবে কেনার ক্রয় করার পর আইনগত ও লিখিতভাবে উক্ত জমির উপর অধিকার পাওয়ার জন্য যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তাকেই জমির খারিজ বা নামজারি বলে। কোন জমির বা সম্পত্তির নাম খারিজ বা নামজারি না করলে বিক্রেতা যেকোনো সময় আইনগতভাবে ঐ জমির উপর পুনরায় তার অধিকার দাবি করতে পারে। এর ফলে ক্রেতা টাকা এবং সম্পত্তি দুটি থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ ঐ সম্পত্তি যে পরবর্তী ক্রেতার তার কোন বৈধ ডকুমেন্টস নেই। সুতরাং জমির নামজারি করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়।
ই খারিজ করতে কি কি লাগে
বর্তমানে ভূমি সংক্রান্ত সকল কাজ অনলাইনের মাধ্যমেই ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক করতে পারবেন, ই খারিজ করতে কি কি লাগে তা আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না। তাই আমরা পোষ্টের এই অংশে ই খারিজ করতে যা যা লাগবে তা উল্লেখ করেছি।
- আবেদনকারী সদ্য তোলা ছবি
- অনলাইনে আবেদনকারীর স্বাক্ষর
- জমি ক্রয় করার দলিল
- ওয়ারিশ এর সনদপত্র
- ক্রয়-কিত জমির সর্বশেষ খতিয়ান
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্র
জমি খারিজ করতে কতদিন সময় লাগে
আমাদের অনেকের মনে একটি প্রশ্ন জাগে যে জমি খারিজ করার আবেদন করার কতদিন অপেক্ষা করতে হয়। এটির কাজ শুরু হতে মূলত কত দিন সময় লাগে আর কিভাবে কাজ করলে খুব তাড়াতাড়ি আবেদন করা যাবে তাই না। আপনি যদি অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাকে একটি কথা মাথায় রাখতে হবে।
যে যেইদিন আপনি অনলাইনে আবেদন করবেন তার তিনদিন পর যেই অফিসে আবেদন করেছেন সেখানে আপনার সরাসরি হাজির হতে হবে। আপনি যদি না যান তাহলে আপনার কাজ কিন্তু তারা করবে না আর যখন আপনি যাবেন তখন আপনার বিভিন্ন ধরনের তথ্য ভালো করে সত্যতা যাচাই করবে।
এবং বিভিন্ন ফর্মালিটিক্স আপনার দ্বারা তথ্যগুলো জেনে নিবে এবং খুব সহজে কাজ করবে।আর এখন মূল কথা হচ্ছে আবেদন করলে কতদিন সময় লাগবে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ ২৮ দিন সময় লাগবে একটি আবেদন করার পর কাজ হতে। প্রিয় বন্ধুরা আপনারা নিশ্চয়ই আপনার কাঙ্খিত তথ্যটি জানতে পেরেছেন আশা করি।
নামজারি বাতিলের জন্য করণীয়
নামজারী যদি কোন কারনে বাতিল করতে হয় তাহলে উক্ত নামজারী আদেশের ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সঠিক কারণ বর্ণনাক্রমে উপজেলা ভূমি অফিসে বা এসিল্যান্ড অফিসে মিস কেস দায়ের করতে হবে।
যদি ৩০ দিন অতিবাহিত হয়ে যায় তাহলে বিলম্বের উপুযুক্ত কারণ দেখিয়ে আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ত আইনের ১৫০ ধারা মতে আবেদন নিষ্পত্তি করবেন।
জমির মালিকানা নিশ্চিতকরণে খতিয়ানের ভূমিকা
আপনারা হয়ত অনেকেই ভাবেন যে সাবকবলা দলিলের মাধ্যমে কোন জমি কিনেলেই বোধায় কাজ একেবারে শেষ হয়ে যায়। পরে আর নাম জারি করার কোন প্রয়োজন নেই। কিন্তু এই ধারণাটি একেবারেই ভুল। এটা সম্পূর্ণ ভুল একটি ধারণা। আপনি যখনই কোন বৈধ উপায়ে সম্পত্তির মালিক হবেন তখন অবশ্যই আপনাকে পূর্বের খতিয়ানটি সংশোধন করে আপনার নামে নামজারি বা খারিজ করে হালনাগাদ করে নিবেন।
কারণ বর্তমানে এখন আপনি যেই জমিটির মালিক বা ইতিমধ্যে আপনি যেই জমিটি ক্রয় করেছেন সেটি সরকারকে লিখিত ও আইনগতভাবে এ টু জেড বুঝাতে হবে যে উক্ত জমিটি সরকারিভাবে আপনার নামে রয়েছে। আর সরকারিভাবে আপনার কোন জমি নিজের নামে রয়েছে মানেই হচ্ছে আপনার নামে ঐ সম্পত্তির খতিয়ান থাকা। উক্ত সম্পত্তিটি আসলে যে আপনার সরকার খতিয়ানের মাধ্যমে সেটা বুঝবে।
জমি খারিজ সম্পর্কে লেখকের মতামত
আমরা ইতিমধ্যে জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে ও জমি খারিজ না করলে কি হয় সম্পর্কে আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি আমার জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে নিয়ে লেখা এই পোষ্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে।
এই ব্লগ পোষ্টটি নিয়ে আপনাদের মাঝে কোন মতামত কিংবা মনে কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনি চাইলে শেয়ার করে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে তাদেরও জানানোর সুযোগ করে দিতে পারেন। আজকে আমরা আপনাদের মাঝে জমি খারিজ করতে কত টাকা লাগে তা বিস্তারিত অনেক তথ্য আলোচনা করলাম। আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। ধন্যবাদ।