আপনি কি খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত যাবতীয় তথ্য জানতে চাচ্ছেন? তাহলে খতিয়ান নিয়ে সঠিক তথ্য পেতে আপনি একদম ঠিক স্থানেই এসেছেন। আমরা আজকের এই ব্লগ পোষ্টে আপনাদের সুবিধার কথা ভেবেই অনলাইনে খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
তো আপনি যদি আজকের সম্পন্ন ব্লগ পোষ্ট জুড়ে থাকেন, তাহলে অনলাইনে খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম জেনে নেওয়ার পাশাপাশি খতিয়ান কি, খতিয়ান কত প্রকার ও কি কি এবং জমির খতিয়ান ডাউনলোড কিভাবে করবেন তা জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে প্রথমে খতিয়ান কি সেই সম্পর্কে কিছু বিশেষ তথ্য সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।
খতিয়ান কি
জমি বা ভূমির ক্ষেত্রে খতিয়ান অর্থ হচ্ছে ‘হিসাব’। সাধারণত একটি জমির মালিকানা রাজস্ব আদায়ের জন্য এবং স্বত্ব রক্ষা করার জন্য জরিপ বিভাগ কর্তৃক প্রতিটি মৌজার জমির এক বা একাধিক মালিকের সমস্ত বিবরণসহ যে ভূমি স্বত্ব প্রস্তুত করা হয় তাকেই খতিয়ান বলে।
খতিয়ান কত প্রকার ও কি কি
বাংলাদেশে মূলত ৪ প্রকারের খতিয়ান রয়েছে। যথা-
- ১. সি. এস খতিয়ান
- ২. এস. এ খতিয়ান
- ৩. আর. এস খতিয়ান
- ৪. বি. এস খতিয়ান / সিটি জরিপ
খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম
বর্তমান সময়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের কারণে আপনাকে আর খতিয়ান উত্তোলন করার জন্য ভূমি অফিসে গিয়ে ঘুরতে হবে না। এখন কিন্তু ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে আপনার খতিয়ানের কপি পেয়ে যাবেন। আপনারা ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে আপনার জমির খতিয়ান বের করবেন।
আজকের এই আর্টিকেলটিতে এই সকল বিষয়ে আলোচনা করব। একটা দুঃখের বিষয় হচ্ছে আপনি কিন্তু এখন মোবাইল ব্যবহার করে এটি উত্তোলন করতে পারবেন না এর জন্য আপনাকে ডেস্কটপ কিংবা ল্যাপটপে সাহায্য নিতে হবে। এরপর আপনাকে ক্রোম ব্রাউজারে ঢুকতে হবে।
খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম এবং এই ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করতে হবে। ওইখানে প্রবেশ করার পর আপনার সামনে একটি ইন্টারফেস চলে আসবে সেখানে লেখা থাকবে ছারভে খতিয়ান এবং নামজারি খতিয়ান। এর মধ্যে আপনাকে একটি পছন্দ করতে হবে তার মধ্যে আপনার সার্ভে খতিয়ান ওইখানে একটি ক্লিক করে দিবেন।
এরপর আপনাকে কিছু জরুরী তথ্য দিতে হবে এগুলো দিয়ে দিবেন। আপনাদেরকে এখন প্র্যাকটিক্যালি দেখায় কিভাবে এটি পূরণ করতে হয়। তাহলে আপনারা বেশি ভালো করে বুঝতে পারবেন।
প্রথমে দিয়ে দিবেন আপনার যেখানকার মানে যেই বিভাগের খতিয়ান উত্তোলন করবেন সেখানে সঠিক তথ্যটি দিবেন। তারপর দেখবেন লেখা আছে জেলা এরপর আপনার নিজ নিজ জেলা সিলেক্ট করতে হবে। তারপরে যেটি করা লাগবে তা হল আপনার জমিটি যেই উপজেলায় আছে সেখানে সেটি সিলেক্ট করতে হবে।
এরপর অবশ্যই আপনাকে আপনি যে ধরনের খতিয়ান দেখতে চাচ্ছেন সে ধরনের খতিয়ানে ক্লিক করে দিবেন এবং সেটি পছন্দ করবেন। এরপর আপনার জমিটি কোন মৌজা এর অন্তর্ভুক্ত সেটি ভালোভাবে ভেবেচিন্তে সঠিক তথ্যটি দিয়ে পূরণ করবেন।
এখন তার সাইটে লেখা থাকবে দেখবেন যে খতিয়ান এর তালিকা সেই খতিয়ানের তালিকা.থেকে আপনাকে অবশ্যই আপনার কাঙ্খিত যে খতিয়ান আছে সেটি সিলেক্ট করতে হবে। এবার আপনি খতিয়ান দেখার জন্য কিন্তু ডবল ক্লিক করতে হবে। এবার কিন্তু আপনার সামনে খতিয়ানের দাগ নাম্বার চলে আসবে সেখান থেকে আপনি সেই জমিটি কোন দাগে রয়েছে সেটা সঠিক তথ্যটি জানতে পারবেন।
জমির খতিয়ান ডাউনলোড
আপনি যদি জমির খতিয়ান ডাউনলোড করতে চান বা বের করতে চান তাহলে উপরোক্ত ধাপ অনুসরন করার পরে সেই পেইজে একটু সাইডে দেখবেন লেখা আছে দেখার জন্য “আবেদন করুন” সেখানে ক্লিক করবেন। তাহলে আরেকটু কিছু কাজ করার পর আপনার কাঙ্খিত খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ দেখতে পারবেন।
এরপর আপনার কাছ থেকে আপনার মোবাইল নাম্বারটি চাইবে। সেখানে আপনার যে নাম্বারটি সব সময় চালু থাকে সেই নাম্বারটি দিয়ে দিবেন। তারপর আপনার পরিচয় পত্রে যেই নামটি রয়েছে সেটি দেখে শুনে বার বার যাচাই করে সঠিক তথ্য দিয়ে দিবেন যাতে যেন ভুল না হয়।
তারপর আপনার এনআইডি কার্ডে যে 17 সংখ্যার নাম্বার রয়েছে সে নাম্বারটি দিয়ে দিবেন। এবং আপনার জন্ম তারিখটি দিবেন যেটা আপনার ভোটার আইডি কার্ডে রয়েছে ওই্টা। তারপর একটু খেয়াল করে দেখবেন নিচে যোগ বা বিয়োগ করতে বলা হবে সেখানে ফলাফলটি দিয়ে দিতে হবে।
তার ডান সাইডে দেখবেন যে একটি যাচাই করুন বলে সবুজ বাটন রয়েছে সে বাটনটিতে ক্লিক করবেন। এরপর নিচে আপনি দেখতে পাবেন লিখা আছে যে ইমেইল এড্রেস যেখান থেকে আপনার এই খতিয়ানটি দেখতে চান সেই ইমেইল এড্রেসটি এখানে দিয়ে দিবেন। এবার আপনার ঠিকানাটি দিয়ে দিবেন।
এরপর আপনি যে ধরনের খতিয়ান দেখতে চান সেখানে ক্লিক করবেন যেমন ধরুন অনলাইন আবেদন করার ফ্রম এবং সার্টিফিকেট হিসেবে যদি দেখতে চান। সেজন্য আপনার যেটা পছন্দ সেখানে ক্লিক করে দিবেন। এরপর ডান সাইডে একটু খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে সেখানে চার্জ ফ্রি হিসেবে টাকা প্রদান করতে হবে।
এখন আপনাকে টাকা দিতে হবে কারণ সরকার তো আর আপনাকে কোন কিছু একবারে ফ্রিতে দিবে না এর জন্য কিছু মেনটেনেন্স খরচ আছে সে খরচটি আপনাকে দিতে হবে। এখন আপনি যেই মাধ্যমে আপনার টাকাটি পরিশোধ করবেন।
সেগুলোর মধ্যে একটি পছন্দ করতে হবে তার মধ্যে নিচে আছে দেখবেন যে বিকাশ নগদ উপায় আরো অনেক কিছু সেখানে একটি আপনি পছন্দ করবেন। এরপর একটু নিচে দেখবেন লেখা আছে ফলাফল যোগ করুন সেখানে আপনি যোগ অথবা বিয়োগ করে সঠিক তথ্যটি দিয়ে দিবেন। আপনার যদি এতটুকু পর্যন্ত সকল কাজ হয়ে যায়।
তারপর নিচে একটি সবুজ বাটন রয়েছে সেখানে লেখা আছে পরবর্তী ধাপ সেখানে ক্লিক করে দিবেন। এরপর আপনার সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ আসবে সেগুলো আপনি এক এক করে সেটি ভালোভাবে দেখে শুনে পূরণ করে দিবেন এবং পরিশেষে উক্ত পেইজে একটি ফাইল আপনার সামনে দেখতে পাবেন সেখানে আপনাকে আপনার নিজের জমির সমস্ত তথ্য দেখতে পারবেন।
আর তখন এটি ডাউনলোড করার জন্য আপনাকে উপরে একটু খেয়াল করতে হবে, খেয়াল করলে দেখবেন ডাউনলোড নামক একটি অপশন রয়েছে সেখানে ক্লিক করলেই ফাইল আকারে ডাউনলোড হয়ে যাবে এবং সেটি প্রিন্ট করে নিজে বের করে নিতে পারেন। আপনার বাড়িতে যদি প্রিন্টার থাকে তাহলে আপনি সেখান থেকে প্রিন্ট করতে পারবেন।
কিংবা আপনি যদি কোন কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে এই ফাইলটি দেন তাহলে তারা প্রিন্ট করে দিবে। আপনি চাইলে কিন্তু এভাবে আপনার জমির খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ এগুলো বের করতে পারবেন।
জমির খতিয়ান সম্পর্কে লেখকের মতামত
আমরা ইতিমধ্যে অনলাইনে খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম সম্পর্কে আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করছি আমার খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ বের করার নিয়ম নিয়ে লেখা এই পোষ্টটি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। এই ব্লগ পোষ্টটি নিয়ে আপনাদের মাঝে কোন মতামত কিংবা মনে কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
আর আপনি যদি মনে করেন যে এই বিষয়টি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে তাদেরও জানানোর সুযোগ করে দিবেন তাহলে শেয়ার অপশনে গিয়ে এই পোষ্টটি শেয়ার করতে পারেন। আজকে আমরা আপনাদের সাথে খতিয়ান থেকে জমির পরিমাণ কিভাবে বের করবেন তা নিয়ে পরিস্কার ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনারা আজকের এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে উক্ত বিষয়ে ক্লিয়ার ধারণা পেয়ে গেছেন। এতক্ষণ সময় নিয়ে আমাদের সাথে থাকার জন ধন্যবাদ।