ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা – ই ক্যাপ খেলে কি হয়

আজকের আর্টিকেলে আমরা ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ই ক্যাপ খেলে কি হয় সে সম্পর্কে জানবো। আপনিও যদি ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে পুরো আর্টিকেলটি আপনাকে পড়তে হবে।

ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা

ই ক্যাপ আমরা অনেকেই ব্যবহার করি, আবার অনেকেই এর নাম শুনেছি। তবে সঠিকভাবে আমরা জানি কি ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে? যদি আপনি এ বিষয়ে সঠিক তথ্য না থাকেন তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জেনে যাবেন। তো চলুন বিস্তারিত শুরু যাক।

ই ক্যাপ এর উপকারিতা ও অপকারিতা

সাধারনত আমরা জানি শরীরে ভিটামিন ই’ এর ঘাটতি পূরনের জন্য ভিটামিন ই’ সমৃদ্ধ যে ক্যাপসুল খাওয়া হয় তাই ই ক্যাপ। তবে ই ক্যাপ কি শুধু শরীরে ভিটামিন এর চাহিদা পূরন করে? না এছারাও আরও বেশ কিছু উপকারিতা ই ক্যাপ এর মধ্যে রয়েছে। তো চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক-

  • ই ক্যাপ ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ই ক্যাপের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ই, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফলে ত্বককে বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পায়।
  • ই ক্যাপ বয়সের ছাপ দূর করতে ভূমিকা রাখে। ই ক্যাপের মধ্যকার ভিটামিন ই’ বার্ধকের ছাপ কমিয়ে ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখে।
  • ত্বককে ময়েশ্চারাইজার রাখতে সাহায্য করে ই ক্যাপ। শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, এ সময় ত্বকের জন্য ভালো একটি উপাদান হলো ই ক্যাপ। ই ক্যাপসুলের মধ্যকার তেল সারারাত মুখের ত্বকে লাগালে ত্বক হবে ময়েশ্চারাইজার।
  • নখের ক্ষতি এড়াতে ব্যবহার করুন ই ক্যাপ। ভিটামিন ই ক্যাপের মধ্যে থাকা তরল পদার্থ বের করে নখের চারপাশে ভালোভাবে লাগালে নখ ভাঙাসহ, নখের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করা যায়।
  • ভিটামিন ই’ ক্যাপ চুল পড়া কমাতে ও নতুন চুল গজাতে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে। সেক্ষেত্রে চুলের জন্য আপনি যে তেল ব্যবহার করছেন, সে তেলের সাথে ই ক্যাপ মিশিয়ে ব্যবহার করবেন চুল পড়া কমবে এবং নতুন চুল গজাবে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ই’ ক্যাপ সেবনের ফলে। ভিটামিন ই এর অভাবে শরীরে যেসব রোগ হয় তা সবই প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ই ক্যাপ।
  • শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করতে ভূমিকা রাখে ই ক্যাপ। যার ফলে স্বাস্থ সুরক্ষিত থাকে
  • চোখকে বিভিন্ন ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে ই ক্যাপ। ই ক্যাপ চোখের রেটিনা সুরক্ষিত রাখে যার ফলে চোখের বিভিন্ন রোগ যেমন-ছানি পড়া, ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রভৃতি রোগের ঝুঁকি কমে।
  • হাড়ের সমস্যাকে প্রতিরোধ করে ই ক্যাপ।
    ই ক্যাপের উপকারিতা থাকলেও অতিরিক্ত ব্যবহারে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার না করলে, এর কিছু অপকারিতা লক্ষ করা যায়। জেনে নিন ই ক্যাপের অপকারিতাগুলো কি কি-
  • কারও কারও ক্ষেত্রে ই ক্যাপ ব্যবহারের ফলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন-পেট ফাঁপা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া প্রভৃতি দেখা দিতে পারে।
  • ই ক্যাপ অতিরিক্ত ব্যবহারে লিভারের ক্ষতি হতে পারে।
  • কারও ক্ষেত্রে ই ক্যাপ ব্যবহারে এলার্জিজনিত সমস্যা হতে দেখা যায়।
  • যাদের হাইকোলেস্টরল আছে তাদের জন্য ই ক্যাপ খাওয়া ক্ষতিকর।
আরো পড়ুনঃ-  দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় - গ্যাসট্রিক দূর করার উপায়

তাই ই ক্যাপ উপকারী হলেও আমাদের উচিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তা ব্যবহার করা। বয়স , শারিরিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসকেরা ভিটামিন ই’ অর্থ্যাৎ ই ক্যাপ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ই ক্যাপ খেলে কি হয়

আমাদের শরীর শুধুমাত্র খাবার থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই’ পায় না। তখন চিকিৎসকেরা ভিটামিন ই’ বা ই ক্যাপ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে শরীর বিভিন্ন উপকার পায়। প্রতিদিন ই ক্যাপ আপনার স্বাস্থের অনেক উন্নতি এনে দিতে পারে। জানেন কি ই ক্যাপ খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়? বিস্তারিতভাবে জেনে নিন ই ক্যাপ খেলে কি হয়।

  • নিয়মিত ই ক্যাপ যদি আপনি খান, তাহলে আপনার ত্বকের সানবার্ন কম হয়।
  • ই ক্যাপ খেলে হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা রোধ হয় এবং হাড়ের স্বাস্থ ভালো থাকে।
  • বন্ধত্বের সমস্যা রোধ হয় ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে।
  • কিডনির সমস্যা প্রতিরোধ করতে খুবই কার্যকারী হলো ই ক্যাপ। নিয়মিত ই ক্যাপ খেলে কিডনীকে সুস্থ রাখা যায়।
  • হৃদরোগের আশঙ্কা কমে ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে।
  • ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • নিয়মিত ই ক্যাপ খেলে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমে।
  • চর্মরোগ প্রতিরোধের ভালো একটি সমাধান হলো ই ক্যাপ। পর্যাপ্ত ই ক্যাপ খেলে চর্মরোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে।

ই ক্যাপ এর কাজ কি

চুল থেকে শুরু করে ত্বকের সৌন্দর্য সব কিছুর জন্য বেশ ভালো কাজ দেয় ই ক্যাপ। ই ক্যাপের অনেক ব্যবহার রয়েছে যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য অপরিহার্য। ই ক্যাপ কি কি কাজে আসে অনেকেই সে বিষয়ে বিস্তারিত জানেন না। তো চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নিই ই ক্যাপ এর কাজ কি।

চুলের যত্নে ই ক্যাপ: চুলের সমস্যা সমাধানে ভালো কাজ দিয়ে থাকে ই ক্যাপ। চুল পড়া রোধে এবং তার সাথে নতুন চুল গজাতে ই ক্যাপের জুড়ি মেলা ভার। আপনার চুলে ব্যবহৃত তেলের সাথে ই ক্যাপ মিশিয়ে চুলে ও স্ক্যাল্পে লাগিয়ে তিন ঘন্টা মতো রেখে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করুন তাহলেই এর ফলাফল দেখতে পাবেন।

আরো পড়ুনঃ-  ছাগল পালন পদ্ধতি - ছাগল পালন ট্রেনিং

ত্বকের যত্নে ই ক্যাপ: ই ক্যাপের গুরুত্ব ত্বকের জন্য অনেটা বেশি। ত্বকের যেকোনো ধরনের সমস্যায় দ্রুত সমাধান এনে দেয় ই ক্যাপ। ত্বকের বিভিন্ন দাগ ছোপ দূর করতে, বার্ধক্যের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই ত্বকের সুরক্ষায় ভরসা করতে পারেন ই ক্যাপের উপর।

নখের যত্নে ই ক্যাপ: সারাদিনের ব্যস্ততায় যেমন-রান্না, থালা বাসন ধোয়া, ঘর পরিষ্কার করা ইত্যাদি কাজের জন্য আমাদের হাতের নখ এর সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। তাই নখের সৌন্দর্য ফিরে পেতে আমাদের নখের যত্ন নেওয়াটা জরুরি। আর নখের যত্নে ভালো কাজ করে ই ক্যাপ। এজন্য ই ক্যাপ খুলে তার ভেতরের তেল নখ ও নখের আশেপাশে লাগিয়ে সারারাত রেখে দিন।

স্বাস্থ সুরক্ষায় ই ক্যাপ: বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ ঝুঁকি এড়াতে ই ক্যাপ এর গুরুত্ব রয়েছে। শরীরে ভিটামিন ই এর অভাবজনিত যেকোনো ধরনের রোগের ঝুঁকি কমে ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে। হৃদরোগ, কিডনীর সমস্যা, হার্টের সমস্যা সহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে কাজ করে ই ক্যাপ।

ই ক্যাপ ৪০০ খেলে কি হয়

সাধারনত তিন ধরনের ই ক্যাপ মেডিসিন পাওয়া যায়, যার একটি হলো ই ক্যাপ ৪০০। ই ক্যাপ ৪০০, এ মেডিসিন আমাদের কাছে পরিচিত একটি মেডিসিন। আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছে যাদের এ মেডিসিনটি চিকিৎসকেরা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তবে জানেন কি ই ক্যাপ খেলে আসলেই কি হয়? বিস্তারিত জেনে নিন ক্যাপ ৪০০ খেলে কি হয়।

ই ক্যাপ হলো একটি এন্টি অক্সিডেন্ট যা আমরা বিভিন্ন খাবারের মধ্যে পেয়ে থাকি যেমন- সবুজ শাকসবজি, বাদাম, বিভিন্ন বীজ ইত্যাদি। তবে আমাদের মধ্যে অনেকের শরীরে শুধুমাত্র খাদ্য থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই পায় না। যার ফলে তাদের ভিটামিন ই এর অভাবজনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। আর তাদেরকে চিকিৎসকেরা ই ক্যাপ ৪০০ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সুতরাং ই ক্যাপ ৪০০ ভিটামিন ই এর অভাব পূরন করবে। ই ক্যাপ খেলে-

  • চুলের সৌন্দর্য ঠিক থাকে।
  • মাথার ত্বকে রক্ত সরবরাহ বাড়ায়।
  • চুলের গড়া শক্ত ও মজবুত হয়।
  • হার্টের স্বাস্থ ভালো থাকে।
আরো পড়ুনঃ-  মুরগী পালন পদ্ধতি - মুরগি পালন প্রশিক্ষণ

তবে যাদের কিডনী রোগ, লিভার রোগ, হাই কোলেস্টেরল রয়েছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তারপর ই ক্যাপ ৪০০ খাবেন।

ই ক্যাপ এর দাম

ভিটামিন ই সাপ্লিপেন্টকে আমরা ই ক্যাপ নামে চিনি। এটি এমন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের কোষগুলিকে বিভিন্ন ক্ষতি থেকে রক্ষা করে থাকে। বাংলাদেশে এ শক্তিশালী ই ক্যাপ এর দাম কত তা নিচের আলোচনা থেকে জেনে নিন।

ই ক্যাপ এর দাম কোম্পানি অনুযায়ী কিছু পার্থক্য হতে পারে।  নিচে কয়েকটি কোম্পানির ই ক্যাপের দাম উল্লেখ করা হলো-

  • Drug International Limited: এ কোম্পানির একটি ই ক্যাপ এর দাম ৭ টাকা , ১ পাতার ১৫ টি ই ক্যাপের দাম ১০৫ টাকা।
  • Renata Pharma Ltd: একটি ই ক্যাপের দাম ৬.০২ টাকা, ১ পাতার ১০ টি ই ক্যাপের দাম ৭০ টাকা।
  • Nipro JMI Pharma Ltd: একটি ই ক্যাপের দাম ৭.০২ টাকা, ১ পাতার ১০ টি ই

ই ক্যাপ এর পার্শপ্রতিক্রিয়া

মানবশরীরে ই ক্যাপ অপরিহার্য একটি উপাদান। এটি খাওয়া নিরাপদ, তবে সব ঔষধের কিছু না কিছু পার্শপ্রতিক্রিয়া থাকে। সেক্ষেত্রে ই ক্যাপও ব্যতিক্রম নয়। ই ক্যাপের কিছু পার্শপ্রতিক্রিয়া কারও কারও ক্ষেত্রে দেখা যায়। জেনে নিন সেগুলো কি-

  • পেটের সমস্যা: কারও ক্ষেত্রে ই ক্যাপ খাওয়ার ফলে পেটে বিভিন্ন সমস্যা যেমন পেটে ব্যাথা, অস্বস্তি ভাব এমনকি ডায়রিয়াও হতে পারে।
  • বমি বমি ভাব: কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ই ক্যাপ খাওয়ার কারনে বমি বমি ভাব হয়ে থাকে।
  • মাথাব্যাথা: ই ক্যাপ খাওয়ার পর মাথাব্যাথাও হতে পারে।

এসব পার্শপ্রতিক্রিয়াগুলো সবার মধ্যে দেখা যায় না। আর দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
পরিশেষে বলতে চাই, ই ক্যাপ আমাদের জন্য অবশ্যই উপকারী। তবে ই ক্যাপ উপকার হলেও এটি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘদিন খাওয়া যাবে না। কারন সবার জন্য ই ক্যাপ ব্যবহার করা উপকারী নয়। তাই ই ক্যাপের সঠিক উপকার পেতে সঠিকপন্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ই ক্যাপ খাবেন।

Leave a Comment