বর্তমান সময়ে কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কোয়েল পাখি পালন করে লাভবান হতে হলে অবশ্যই আপনাকে, পালনের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে। যারা কোয়েল পাখি পালন করতে চাচ্ছেন, তারা আজকের আর্টিকেলটি পড়ে জেনে নিন কোয়েল পাখি পালনের সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে।
অনেকেই কোয়েল পাখি পালন করছে, কিন্তু কোয়েল পাখি পালন করে সবাই লাভবার হতে পারছে না। এর কারণ হলো কোয়েল পাখি পালনের সঠিক পদ্ধতি সবার জানা নেই। তাই কোয়েল পাখি যারা পালন করে লাভবান হতে চান, তাদের জন্যই আজকের আর্টিকেল। কারন আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো কোয়েল পাখি কিভাবে পালন করলে লাভবান হওয়া যাবে। এছারাও আলোচনা করবো কোয়েল পাখির খাবার, চিকিৎসাসহ আরও অনান্য বিষয়। চলুন তাহলে বিস্তারিত শুরু করা যাক।
কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি
বর্তমানে কোয়েল পাখি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। কোয়েল পাখি দেখতে ছোট হলেও, এটি আমাদের উপকারি পাখি। কোয়েল পাখির মাংস ও ডিম সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটি খাদ্য। এছারাও এই পাখি পালনে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়া যায়। এই পাখি পালনে লাভবান হতে হলে সতর্কতার সাথে পাখি পালন করতে হবে। বিস্তারিত ভাবে জেনে নিন কিভাবে সতর্কতার সাথে, সঠিক পদ্ধতিতে কোয়েল পাখি পালন করবেন। কোয়েল পাখি পালনের সঠিক পদ্ধতি জানতে আপনাকে পুরো আর্টিকেলটি পড়তে হবে।
কম সময়ে, কম খরচে, অল্প জায়গায় এবং অল্প খাবারেই কোয়েল পাখি পালন করা সম্ভব। একটি মুরগি পালনে যতটুকু জায়গার প্রয়োজন, সেই জায়গায় ৬ টি কোয়েল পাখি পালন করা সম্ভব। তাই এ পাখি পালন বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কোয়েল পাখি পালনে লাভবান হতে হলে, কোয়েল পাখির আবাসন, খাবার, রোগবালাই এসবের দিকে প্রথম থেকেই খেয়াল রাখতে হবে। পৃথিবীতে ১৬ টি প্রজাতির কোয়েল পাখি রয়েছে। তবে বাংলাদেশে কোয়েল পাখির দুটি জাত রয়েছে লেয়ার কোয়েল এবং ব্রয়লার কোয়েল। এ দুটি জাতের মধ্যে যেকোনো একটি নিতে পারেন, শুধু সঠিক যত্ন করলেই ভালো ফল পাবেন। কোয়েল পাখির তিন মাস পর্যন্ত বেশি যত্ন নিতে হয়। কোয়েল পাখির যত্ন নিতে ডিম থেকে বাচ্চা বের হওয়ার পর সঠিক ভাবে তাপ দিতে হয়। গরমে দুই সপ্তাহ এবং শীতে তিন থেকে চার সপ্তাহ তাপ দেওয়া প্রয়োজন। কোয়েল পাখির বাচ্চা তাপ পেলে মৃত্যুর হার কম হয়। বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় কোয়েল পাখি পালনের জন্য উপযুক্ত। কোয়েল পাখি পালনের নির্দিষ্ট কোনো সময় নেয়। বছরের যেকোনো সময় কোয়েল পাখি পালন করতে পারেন।
কোয়েল পাখি মেঝে অথবা খাঁচায় পালন করা যায়। তবে খাঁচাতে কোয়েল পাখি পালনে সুবিধা ভালোভাবে দেওয়া যায় এবং রোগ বালাই কম হয়। কোয়েল পাখির আবাসন সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত ভাবে অলোচনা করা হয়েছে জেনে নিন।
কোয়েল পাখির বাসস্থান
কোয়েল পাখি পালনে প্রথমেই আপনাকে কোয়েল পাখির জন্য সঠিক বাসস্থান তৈরি করতে হবে। কোয়েল পাখির বাসস্থান ঠিক থাকলে, কোয়েল পাখি সুস্থ ও সবল থাকে। জেনে নিন কোয়েল পাখির বাসস্থান কেমন হওয়া উচিত।
সফলভাবে কোয়েল পাখি পালন করতে চাইলে মেঝের থেকে খাঁচায় পালন করতে হবে। খাঁচায় কোয়েল পাখি পালনে রোগ বালাই কম হয় এবং বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রানী যেমন- সাপ, ইঁদুরসহ শিকারী প্রানীগুলোর হাত থেকে কোয়েল পাখি নিরাপদে থাকে। খাঁচায় কোয়েল পাখি পালনে খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না, একটি খাঁচার ওপর বেশ কয়েকটি খাঁচা রেখে কোয়েল পালন করতে পারবেন। কোয়েল পাখির শান্ত পরিবেশ বেশি পচ্ছন্দের। তাই তাদের শান্ত পরিবেশে রাখতে হবে। এজন্য একটি খাঁচায় অতিরিক্ত পাখি রাখা যাবে না। প্রতিটি কোয়েলের জন্য ১৫০ বর্গসেন্টিমিটার করে জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। খাঁচার তারের ফাঁক ঘন হতে হবে, খাঁচার তারের ফাঁকের মাপ ১.৫ সে.মি এর বেশি যেন না হয়। কোয়েলের খাবার ও পানির সুব্যবস্থা রাখতে হবে। এমনভাবে খাবারের পাত্র রাখতে হবে যাতে, পাত্র উলটে পাখির গা না ভিজে। পর্যাপ্ত আলো বাতাস পায় এমন স্থানে খাঁচা রাখতে হবে। ঝড়, বৃষ্টি, অতিরিক্ত ঠান্ডা থেকে সাবধানে রাখতে হবে। খাঁচার ভেতরে কোয়েল যাতে বসতে পারে সেজন্য ডাল জাতীয় কোনো জিনিস রাখবেন, এসব জায়গায় কোয়েল পাখিরা বসতে পচ্ছন্দ করে।
কোয়েল পাখির আবাসন স্থান সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ময়লা ও দুর্গন্ধ স্থানে রোগ জীবানু বাসা বাঁধে ফলে কোয়েল পাখি অসুস্থ হয় এবং ডিম কম দেয়। এছারাও কোয়েল পাখির আবাসনের জায়গায় অতিরিক্ত মানুষ প্রবেশ করবেন না, এতে কোয়েলের ডিম দেওয়ার সময়ে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। আর খাঁচায় কোয়েল পাখি রাখার সময় সতর্ক থাকবেন, যে খাঁচা কোয়েল রাখবেন সে খাঁচায় কোয়েল যেন মাথা ঢুকাতে না পারে। অনেক সময় কোয়েল পাখিগুলো খাঁচার মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে মারা যায়। তাই সাবধানতার সাথে কোয়েল পাখি খাঁচায় রাখবেন, বিশিষভাবে নজর দিবেন।
কোয়েল পাখি পালনের সময়, উপরের নিয়ম অনুসরন করে কোয়েলের বাসস্থান তৈরি করবেন। এভাবে বাসস্থান তৈরি করলে কোয়েল পাখি সুস্থ থাকে ও ডিম বেশি দেয়।
কোয়েল পাখি কতদিনে ডিম পাড়ে
কোয়েল পাখি যারা পালন করতে চান, তাদের অনেকের প্রশ্ন কোয়েল পাখির বয়স কত হলে সে ডিম পাড়ার উপযোগি হয়। জেনে নিন কোয়েল পাখি কতদিনে ডিম পাড়ে-
হাঁস-মুরগির মতো কোয়েল পাখিও ডিম দেয় এবং এ পাখির ডিম দেওয়ার একটা বয়স রয়েছে। কোয়েল পাখির বাচ্চা ডিম থেকে বের হওয়ার ৪০ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ডিম পারে। এ বয়সসীমা থেকে কয়েকদিন আগে অথবা পড়ে হতে পারে। পুষ্টিকর খাবার ও সঠিক পরিচর্যা কোয়েল পাখির নিলে এ পাখির ক্রোধ বাড়ে ফলে কোনো কোনো পাখি ৩৫ দিনেও ডিম দিতে সক্ষম হয়।
কোয়েল পাখি সাধারণত প্রতিদিন একটি করে ডিম দেয় তবে কখনও দুটি হতে পারে। কোনো কোনো সময় দুইদিন পর পরও একটি ডিম দিয়ে থাকে। পরিবেশ, খাদ্য ও স্বাস্থগত বিবেচনায় ডিম পারার ধরণ ব্যতিক্রম হতে পারে। স্বাস্থগতভেদে কোয়েল পাখি বছরে ২০০ থেকে ৩০০ টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। কোয়েল পাখির ডিমে অসংখ্যা পুষ্টি উপাদান রয়েছে। প্রতিদিন কোয়েল পাখির ডিম খাদ্যতালিকায় থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ থেকে সমাধান এনে দেয়। তাই বাড়িতে কোয়েল পাখি পালন করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করুন।
কোয়েল পাখি পালন ও চিকিৎসা
কম পুঁজি নিয়ে, অল্প জায়গায় কোয়েলের খামার তৈরি করা যায়। অনান্য গৃহপালিত পাখির তুলনায় কোয়েল তুলনামূলকভাবে কম খায় এবং অল্প সময়ের মধ্যে এরা মাংস খাওয়ার উপযোগি হয় পাশাপাশি ৬ থেকে ৭ সপ্তাহের মধ্যে ডিম দেয়। ফলে খুব কম সময়ের মধ্যে কোয়েল পাখির ডিম বাজারজাত করণ সম্ভব হয়। এ কারনেই এখন অনেকেই কোয়েল পাখি পালন করতে আগ্রহী। তবে অনেকেই বিভ্রান্তিতে পড়ে যায় কোয়েল পাখি কিভাবে পালন করবো এবং এ পাখির রোগ বালাই আছে কি-না। চলুন কোয়েল পাখি পালন ও চিকিৎসা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
কোয়েল পাখি পালন: কোয়েল পাখি কিনে অথবা ডিম থেকে বাচ্চা উঠিয়ে কোয়েল পাখি পালন করা যায়। কোয়েল পাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফুটাতে চাইলে স্ত্রী ও পুরুষ কোয়েল পাশাপাশি রাখতে হবে। কোয়েল পাখির কুঁচে হয় না। তাই মুরগির নিচে তাপ দিয়ে অথবা ইনকিউবেটরে কোয়েলের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো হয়। ডিম থেকে বাচ্চা বের হতে ১৬ থেকে ১৮ দিন সময় লাগে। বাচ্চা উঠানোর পর বাচ্চার বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। কারণ ডিম থেকে বাচ্চা বের হওয়ার পর বাচ্চা অনেক দুর্বল থাকে। তাই ২১ দিন পর্যন্ত বাচ্চাকে কৃত্রিম ব্রুডিং বা কৃত্রিম তাপ প্রদান করতে হবে। ২১ দিন হয়ে গেলে ব্রুডার খাঁচা থেকে বের করে, সঠিক বাসস্থানে কোয়েল পাখি রেখে পরিচর্যা করবেন। সঠিক যত্ন নিলে কোয়েল পাখি তাড়াতাড়ি খাওয়ার উপযোগি হয় এবং অল্প দিনেই ডিম দেয়।
কোয়েল পাখির রোগ ও চিকিৎসা: হাঁস-মুরগি ও কবুতরের তুলনায় কোয়েল পাখির রোগবালাই কম হয়। একটু সতর্কতা অবলম্বন করলেই রোগ বালাই থেকে সহজেই কোয়েলকে রক্ষা করা যায়। তবে রোগ বালাই একেবারেই হয় না, এটা বললে ভুল হবে। কিন্তু সঠিক পরিচর্যা ও পুষ্টিকর খাবার কোয়েলকে দিলে, অনান্য গৃহপালিত পশু-পাখির তুলনায় রোগ অনেক কম হয়। এজন্য হাঁশ-মুরগিকে ভ্যাকসিন ও কৃমির ঔষধ খাওয়াতে হলেও কোয়েল পাাখিকে সেগুলো দিতে হয় না। আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে কিছু রোগ হয়ে থাকে। জেনে নিন কোন রোগ কোয়েল পাখিকে হয় এবং সে রোগগুলোর চিকিৎসা কি।
ব্রুডার নিউমোনিয়া: কোয়েল পাখির বাচ্চাপাখিকে এ রোগ হয়ে থাকে। বাচ্চা উঠানোর পর কৃত্রিম উপায়ে সঠিক তাপ বাচ্চাকে না দিলে বাচ্চার এ রোগ হয়। এ রোগে বাচ্চাপাখি ঝিমাবে, দুর্বল হয়ে পড়বে, খাওয়া ছেড়ে দিবে, শ্বাসপ্রশ্বাসে শব্দ হয়, চোখের পাতা ফুলে যায়, চোখ লাল হয়ে যায়, এবং চোখ দিয়ে পানি ঝড়ে।
ডিজিস রোগ: দূষিত খাবার থেকে কোয়েল পাখির এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত পাখি পাখা ঝুলে যায়, চোখ আংশিকভাবে বন্ধ রাখে, পাতলা পায়খানা অথবা পায়খানা স্বাভাবিক থাকে না।
কলিসেপ্টিসেমিয়া: সব বয়সের কোয়েল পাখির মধ্যে এ রোগ দেখা যায়। এ রোগটি পাখির শ^াসতন্ত্রে আক্রমন করে যার কারনে রোগটি খুবই মারাত্মক। এ রোগের পাখিগুলো চোখ দিয়ে পানি ঝড়ে, হা করে থাকে এবং নাক মুখে ফেনা উঠে। এ রোগ পাখিকে হলে খুব দ্রুত পাখিগুলো মারা যায়।
রক্ত আমাশয়: বাচ্চা পাখির এ রোগ বেশি দেখা যায়। এ রোগ মুরগির মতো অতটা মারাত্মক আকার ধারন করে না। সঠিক চিকিৎসায় এ রোগে আক্রান্ত পাখিগুলো বেঁচে যায়। এ রোগে আক্রান্ত পাখি দুর্বল হয়ে পড়বে, ঝিমাবে, পায়খানা অস্বাভাবিক হবে এবং পায়খানার সাথে রক্ত যাবে।
কোয়েলে পাখির মধ্যে অস্বাভাবিক কোনো আচরণগুলো দেখলে প্রানীচিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন। এছারা আক্রান্ত পাখিকে ভালো পাখি থেকে আলাদা করে দিবেন। কোয়েল পাখি সুস্থ রাখতে কোয়েলের বাসস্থান ও খাবার পাত্র সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন। স্যাঁতস্যাঁতে ও ভেজা পরিবেশে কোয়েলের রোগ বালাই বেশি হয়, সেজন্য সতর্কতার সাথে কোয়েল পাখি পালন করবেন।
কোয়েল পাখি কি কি খাবার খায়
কোয়েল পাখি আমাদের দেশে পালন করা হলেও এ পাখির আদি নিবাস জাপানে। এ পাখি পালন করা সহজ এবং লাভজনক, তাই বাংলাদেশের মানুষেরা কোয়েল পালন করছে। কোয়েল পাখি আমাদের দেশে যারা নতুন পালন করতে চাচ্ছেন তার অনেকেই জানেন না কোয়েল পাখি কি কি খাবার খায়। জেনে নিন কোয়েল পাখি কি কি খাবার খায়-
একটি কোয়েল পাখি দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম খাবার খেয়ে থাকে। কোয়েলের সঠিক বাড়তির জন্য প্রোটিন ও ভিটামিন জাতীয় খাবার কোয়েল পাখিকে খাওয়াতে হবে। মুরগিকে যে খাবারগুলো সাধারণত খাওয়া হয় সে খাবার কোয়েল পাখিকেও খাওয়ানো হয়। বাড়িতে কয়েকটি কোয়েল পাখি পালন করলে গম বা ভুট্টা ভাঙা অথবা মুরগিকে যে খাবারগুলো দেওয়া হয় সেগুলো দিবেন। তবে বাজারে পশুখাদ্য হিসেবে মিক্সার খাদ্য পাওয়া যায় সেটা কোয়েলকে খাওয়ালে বেশি ভালো। এছারাও বাড়িতেও আপনি মিশ্রন খাবার তৈরি করতে পারেন। খামারে কোয়েল পাখি পালন করলে এ খাবারটায় দিবেন। সাধারণত তিন ধরনের খাবার কোয়েল পাখিকে খাওয়ানো হয়। স্টার্টার, গ্রোয়ার ও লেয়ার। এ খাবার খাবারগুলো তৈরির জন্য যেসব উপাদান নিবেন দেখে নিন-
- গম ভাঙা বা ভুট্টা ভাঙা
- তিলের খৈল
- চাউলের মিহি গুড়া
- ঝিনুকের গুড়া
- শুটকি মাছের খৈল
- ভিটামিন ও মিনারেল প্রিমিক্স
- লবণ
এসব উপাদানগুলো নিয়ে বাড়িতেই মিশ্রন খাবার তৈরি করে নিবেন। বয়স অনুযায়ী এসব উপাদানগুলো নিয়ে খাবার তৈরি করবেন। স্টার্টার খাবার দিবেন কোয়েলের বয়স ০ থেকে ২২ দিন পর্যন্ত, গ্রোয়ার ২৩ থেকে ৫৬ দিন পর্যন্ত এবং লেয়ার ৫৭ থেকে বিক্রি পর্যন্ত।
কোয়েল পাখি কত বছর বাঁচে
কোয়েল পাখি সাধারণত ৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে। আবার কোনো কোনো কোয়েল পাখি ২ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত বাঁচে। অর্থ্যাৎ কোয়েল পাখির গড় আয়ু হিসেবে ২ থেকে ৫ বছর ধরা হয়। কোয়েল পাখির বাসস্থান, খাবার ও রোগ বালাইয়ের ওপর অনেকটা নির্ভর করে কোয়েল পাখি কতদিন বাঁচবে। কোয়েল পাখির বাসস্থান ঠিক না থাকলে, একটি পাখি থেকে অপর পাখির দূরত্ব কম হলে পাখি ৫ বছরের আগেই মারা যায়। আবার পুষ্টিকর খাবারের অভাবে অনেক পাখির রোগ বালাই দেখা দেয় এবং সঠিক চিকিৎসা না নেওয়ার কারণে দ্রুত পাখি মারা যেতে পারে।
কোয়েল পাখি দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখতে এ পাখির সঠিক যত্ন নিন। কোয়েল পাখির আবাসন সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও শুকনো রাখুন। এছারাও সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার কোয়েল পাখিকে দিন। পুষ্টিকর খাবার কোয়েল পাখিকে দিলে, পাখির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং রোগ বালাই কম হবে। ফলে কোয়েল পাখি ৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকবে।
পরিশেষে এ পাখি নিয়ে কিছু কথা বলি, কোয়েল পাখি পালনে বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে এবং এ পাখি সঠিক ভাবে পালনে সফল হওয়া যায়। তাই বেকার না থেকে এ পাখি পালন আপনিও করতে পারেন। এছারাও কোয়েল পাখির ডিমে প্রোটিন, মিনারেল, ভিটামিন, এনজাইম এবং এমাইনো এসিড প্রচুর পরিমাণে রয়েছে যা খাওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির চাহিদা পূরন করে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শুধু ডিম নয় কোয়েলের মাংস বেশ পুষ্টিকর বিভিন্ন রোগের সমাধান এনে দেয় এই মাংস। তাই পুষ্টির চাহিদা মিটাতে বাড়িতেই কয়েকটি কোয়েল পাখি পালন করতে পারেন।
লেখকের শেষ বক্তব্য
কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি – কোয়েল পাখির খাবার সম্পর্কে আজকের এই ব্লগে সকল তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি কোয়েল পাখি পালন পদ্ধতি – কোয়েল পাখির খাবার সম্পর্কে আপনি বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি আপনি এই ধরনের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্লগ পোস্ট নিয়মিত পড়তে চান তাহলে আপনাকে প্রতিনিয়ত আমাদের এই ওয়েবসাইট ফলো করতে হবে।